ঢাকা ০৪:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

    ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণায় বিশ্ববাজারে অস্থিরতা : যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে ধস

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ১২:২৬:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
    • / ২৫৫ বার পড়া হয়েছে

    যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আকস্মিকভাবে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একাধিক চিঠি প্রকাশ করেছেন। ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে প্রকাশিত এই চিঠিগুলোতে তিনি জানান, আগামী ১ আগস্ট থেকে একাধিক দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে আমদানি শুল্ক আরোপ করা হবে।

    ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরপরই বিশ্ববাজারে বড় ধরনের প্রভাব পড়ে। খোদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান পুঁজিবাজারেও দেখা যায় ব্যাপক ধস। মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে ডাও জোন্স সূচক ৪২২ পয়েন্ট নিচে নেমে আসে। একইভাবে নাসডাক সূচক ০.৯ শতাংশ এবং এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ০.৮ শতাংশ হ্রাস পায়।

    বিশ্ববাজারে টয়োটা, নিসান, হোন্ডা, এলজি ও এসকে টেলিকমের মতো বড় বড় কোম্পানির শেয়ারের দাম দ্রুত পতন ঘটেছে। কিছু কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়েছে ৭ শতাংশ পর্যন্ত। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বিশ্লেষক রস মেফিল্ড সিএনএনকে জানান, প্রস্তাবিত শুল্ক হার বাজারের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।

    শুল্ক ঘোষণার ফলে সরকারি বন্ডের দাম কমেছে। ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৩৯ শতাংশ এবং ৩০ বছরের বন্ডের হার দাঁড়িয়েছে ৪.৯২ শতাংশে। ট্রাম্প আরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ব্রিকস জোটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দেশগুলোর ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। তাঁর অভিযোগ, এসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নীতি গ্রহণ করেছে এবং তাঁর শুল্কনীতির যৌক্তিক সমালোচনার বাইরে চলে যাচ্ছে। তবে ডলার সূচক (US Dollar Index) ০.৩ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে জাপানি ইয়েন, দক্ষিণ কোরীয় ওয়ান এবং দক্ষিণ আফ্রিকান র‍্যান্ডের মতো মুদ্রাগুলো ডলারের তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়েছে।

    বিশ্লেষক মোহিত কুমার, যিনি ইউরোপে অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান জেফরিসের প্রধান কৌশলবিদ, বলেন—৯ জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা বাজারে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে না। বরং এটি একটি কৌশল, যা অন্যান্য দেশকে দ্রুত চুক্তিতে আনতে চাপ সৃষ্টি করবে। তাঁর মতে, এই অনিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে শেয়ার কেনার জন্য এটি একটি ভালো সময় হতে পারে।

    সব মিলিয়ে ট্রাম্পের খেয়ালি সিদ্ধান্ত ও শুল্কনীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ ও আস্থার ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। চলতি বছরে ডলারের মান ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতনের মুখে পড়েছে। দেশটির ক্রমবর্ধমান ঋণ ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ভবিষ্যৎ মন্দার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণায় বিশ্ববাজারে অস্থিরতা : যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে ধস

    আপডেট সময় ১২:২৬:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

    যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আকস্মিকভাবে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একাধিক চিঠি প্রকাশ করেছেন। ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে প্রকাশিত এই চিঠিগুলোতে তিনি জানান, আগামী ১ আগস্ট থেকে একাধিক দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে আমদানি শুল্ক আরোপ করা হবে।

    ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরপরই বিশ্ববাজারে বড় ধরনের প্রভাব পড়ে। খোদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান পুঁজিবাজারেও দেখা যায় ব্যাপক ধস। মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে ডাও জোন্স সূচক ৪২২ পয়েন্ট নিচে নেমে আসে। একইভাবে নাসডাক সূচক ০.৯ শতাংশ এবং এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ০.৮ শতাংশ হ্রাস পায়।

    বিশ্ববাজারে টয়োটা, নিসান, হোন্ডা, এলজি ও এসকে টেলিকমের মতো বড় বড় কোম্পানির শেয়ারের দাম দ্রুত পতন ঘটেছে। কিছু কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়েছে ৭ শতাংশ পর্যন্ত। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বিশ্লেষক রস মেফিল্ড সিএনএনকে জানান, প্রস্তাবিত শুল্ক হার বাজারের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।

    শুল্ক ঘোষণার ফলে সরকারি বন্ডের দাম কমেছে। ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৩৯ শতাংশ এবং ৩০ বছরের বন্ডের হার দাঁড়িয়েছে ৪.৯২ শতাংশে। ট্রাম্প আরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ব্রিকস জোটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দেশগুলোর ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। তাঁর অভিযোগ, এসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নীতি গ্রহণ করেছে এবং তাঁর শুল্কনীতির যৌক্তিক সমালোচনার বাইরে চলে যাচ্ছে। তবে ডলার সূচক (US Dollar Index) ০.৩ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে জাপানি ইয়েন, দক্ষিণ কোরীয় ওয়ান এবং দক্ষিণ আফ্রিকান র‍্যান্ডের মতো মুদ্রাগুলো ডলারের তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়েছে।

    বিশ্লেষক মোহিত কুমার, যিনি ইউরোপে অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান জেফরিসের প্রধান কৌশলবিদ, বলেন—৯ জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা বাজারে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে না। বরং এটি একটি কৌশল, যা অন্যান্য দেশকে দ্রুত চুক্তিতে আনতে চাপ সৃষ্টি করবে। তাঁর মতে, এই অনিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে শেয়ার কেনার জন্য এটি একটি ভালো সময় হতে পারে।

    সব মিলিয়ে ট্রাম্পের খেয়ালি সিদ্ধান্ত ও শুল্কনীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ ও আস্থার ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। চলতি বছরে ডলারের মান ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতনের মুখে পড়েছে। দেশটির ক্রমবর্ধমান ঋণ ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ভবিষ্যৎ মন্দার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে।