ডাকসু নির্বাচনে কোনো ধরনের ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আশঙ্কা নেই-ঢাবি উপাচার্য

- আপডেট সময় ১২:২১:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৫৬ বার পড়া হয়েছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, ডাকসু নির্বাচনে কোনো ধরনের ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আশঙ্কা নেই।
নির্বাচন সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে দাবি করে তিনি জানান, “আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ আগাম ঘোষণা দিয়ে গ্রহণ করা হয়েছে। ভেতরে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে, সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে, সর্বাধিকসংখ্যক বুথ স্থাপন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ১০ জন ব্যক্তির ব্যাপারে কোনো বড় অভিযোগ পাওয়া যায়নি।”
গতকাল মঙ্গলবার ডাকসু নির্বাচন শেষে সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য এসব কথা বলেন। তিনি আরও জানান, ভোট গণনা প্রক্রিয়াতেও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছে। সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ভোট গণনা হয়েছে এবং বাইরে মনিটরে তা সরাসরি প্রদর্শন করা হয়েছে।
উপাচার্য বলেন, “স্মরণকালের মধ্যে সর্বাধিকসংখ্যক শিক্ষার্থী অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে ভোট উৎসব পালন করেছে। দু-তিনটি ছোটখাটো অভিযোগ ছাড়া কোনো বড় ধরনের অভিযোগ আসেনি। যেসব অভিযোগ এসেছে সেগুলো নিয়ে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।”
ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, “ডাকসু আমাদের ছাত্রদের প্রাণের দাবি। আমরা তাদের প্রতি সম্মান দেখিয়েই এই আয়োজন করেছি। ডাকসু গণ-অভ্যুত্থানের মূল মূল্যবোধের স্মারক। এই নির্বাচন আয়োজন করা ছিল আমাদের জন্য এক বিশাল চ্যালেঞ্জ এবং সেটি আমরা নিয়েছি গণ-অভ্যুত্থানের প্রতি সম্মান জানানোর উপায় হিসেবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আজকের এই আয়োজন আমরা টানা ১১ মাস ধরে সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে উদয়াস্ত পরিশ্রম করে সম্পন্ন করেছি। আমার সহকর্মীরা একে একে প্রতিটি প্রস্তুতি নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সাড়া আমরা যে পেয়েছি, তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম।”
নিরাপত্তা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, “নির্বাচন ঘিরে কোনো নাশকতার তথ্য আমাদের কাছে ছিল না। সকাল থেকে কোনো রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর বড় ধরনের সমাবেশ কিংবা নাশকতার আশঙ্কা পাওয়া যায়নি। তবুও আমরা পূর্ণ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সাজিয়েছি। আটটি প্রবেশপথে প্রহরা, প্রোক্টরিয়াল টিম, শিক্ষক, পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন, যাতে শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন।”
তিনি আরও বলেন, “বিকেল ৪টার দিকে খবর পাই যে আমাদের গেটের বাইরে কিছু লোকসমাগম হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা ডিএমপি কমিশনার ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁরা নিরাপত্তা জোরদার করেন। পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে এরা কারা, তাদের উদ্দেশ্য কী। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
ছাত্রদলের সভাপতির অভিযোগ প্রসঙ্গে ভিসি বলেন, “প্রশাসন কোনো রাজনৈতিক দল দ্বারা প্রভাবিত কি না, সেটি পুরোপুরি পারসেপশনের বিষয়। আমার ব্যক্তিগতভাবে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা কখনোই ছিল না। এ কথাটি আমি একাধিকবার পরিষ্কারভাবে বলেছি, আবারও বলছি।”
তিনি আরও বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন একসময় গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে দায়িত্ব নেয়। তখন হলগুলো ভাসমান ছিল, একাডেমিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল, গবেষণা থেকে শুরু করে সব কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছিল। আমরা ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি।”