ঢাকা ১১:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫

    নির্বাচনের বাজেট নিয়ে কোনো সমস্যা নেই- অর্থ উপদেষ্টা

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৮:২২:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে

    আসন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিতে সরকারের কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “নির্বাচনের জন্য যত টাকা লাগবে, তা দেওয়া হবে। এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।”

    উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে ভাষণে জানিয়েছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ সময় অর্থ উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরেকটু কমলে ভালো হতো। তারা মোটামুটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটিকে স্বস্তির জায়গা বলব না, তবে বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ খুব খারাপ অবস্থানে নেই।”

    তিনি জানান, দেশের তৈরি পোশাক ও নিটওয়্যার খাত দ্রুত নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে। তবে বস্ত্র খাতের উইভিং সেক্টরে কিছুটা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে শুল্ক বিষয়ে দর-কষাকষি হবে কি না, জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “হ্যাঁ, হবে। ইউএস চেম্বারের ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বাংলাদেশের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। শেভরন ও মেটলাইফের অর্থ বাংলাদেশ আটকে রাখে না—এ বিষয়টি তারা স্বীকার করেছে।”

    তিনি আরও বলেন, চূড়ান্ত চুক্তি এখনও সই হয়নি। কোন কোন পণ্যে শুল্ক কমাতে হবে এবং কী কী আমদানি করতে হবে—তা খতিয়ে দেখা হবে। “এটি দ্বিপক্ষীয় আলোচনা। এখানে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বা জাতিসংঘের মতো উন্মুক্ত আলোচনার সুযোগ নেই,”—বলে মন্তব্য করেন তিনি।

    বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এক বছরে দেশের অর্থনীতি খাদের কিনারা থেকে অনেকটাই উঠে এসেছে। এটা বুঝতে দৃষ্টি ও অন্তর্দৃষ্টি লাগে। ভাসাভাসাভাবে কিছু বললে হবে না।” তিনি বলেন, দেশের সামনে মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান, জ্বালানি ও শুল্কসহ নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো—ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ধীরগতির ব্যবসায়িক পরিবেশে গতি ফিরিয়ে আনা।

    মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “এটা এখন কিছুটা স্বস্তির জায়গায় এসেছে। তবে নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগবে। এটা এমন নয় যে ঘোড়ার রাশ ধরে টেনে থামিয়ে দেওয়া যাবে।” সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি জানান, “কিছু সংস্কার ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আবার কিছু মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় রয়েছে। যেমন, ব্যাংক রেজল্যুশনের কাজ চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংক একটি পথনকশা তৈরি করছে। পুঁজিবাজারেও উন্নয়ন চেষ্টা চলছে। এনবিআরের অধ্যাদেশ আংশিক সংশোধন করা হবে।”

    সব মিলিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থনীতি এখন অনেকটাই স্থিতিশীল পথে ফিরছে, তবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    নির্বাচনের বাজেট নিয়ে কোনো সমস্যা নেই- অর্থ উপদেষ্টা

    আপডেট সময় ০৮:২২:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

    আসন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিতে সরকারের কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “নির্বাচনের জন্য যত টাকা লাগবে, তা দেওয়া হবে। এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।”

    উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে ভাষণে জানিয়েছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ সময় অর্থ উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরেকটু কমলে ভালো হতো। তারা মোটামুটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটিকে স্বস্তির জায়গা বলব না, তবে বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ খুব খারাপ অবস্থানে নেই।”

    তিনি জানান, দেশের তৈরি পোশাক ও নিটওয়্যার খাত দ্রুত নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে। তবে বস্ত্র খাতের উইভিং সেক্টরে কিছুটা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে শুল্ক বিষয়ে দর-কষাকষি হবে কি না, জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “হ্যাঁ, হবে। ইউএস চেম্বারের ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বাংলাদেশের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। শেভরন ও মেটলাইফের অর্থ বাংলাদেশ আটকে রাখে না—এ বিষয়টি তারা স্বীকার করেছে।”

    তিনি আরও বলেন, চূড়ান্ত চুক্তি এখনও সই হয়নি। কোন কোন পণ্যে শুল্ক কমাতে হবে এবং কী কী আমদানি করতে হবে—তা খতিয়ে দেখা হবে। “এটি দ্বিপক্ষীয় আলোচনা। এখানে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বা জাতিসংঘের মতো উন্মুক্ত আলোচনার সুযোগ নেই,”—বলে মন্তব্য করেন তিনি।

    বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এক বছরে দেশের অর্থনীতি খাদের কিনারা থেকে অনেকটাই উঠে এসেছে। এটা বুঝতে দৃষ্টি ও অন্তর্দৃষ্টি লাগে। ভাসাভাসাভাবে কিছু বললে হবে না।” তিনি বলেন, দেশের সামনে মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান, জ্বালানি ও শুল্কসহ নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো—ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ধীরগতির ব্যবসায়িক পরিবেশে গতি ফিরিয়ে আনা।

    মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “এটা এখন কিছুটা স্বস্তির জায়গায় এসেছে। তবে নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগবে। এটা এমন নয় যে ঘোড়ার রাশ ধরে টেনে থামিয়ে দেওয়া যাবে।” সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি জানান, “কিছু সংস্কার ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আবার কিছু মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় রয়েছে। যেমন, ব্যাংক রেজল্যুশনের কাজ চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংক একটি পথনকশা তৈরি করছে। পুঁজিবাজারেও উন্নয়ন চেষ্টা চলছে। এনবিআরের অধ্যাদেশ আংশিক সংশোধন করা হবে।”

    সব মিলিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থনীতি এখন অনেকটাই স্থিতিশীল পথে ফিরছে, তবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে।