ন্যায়বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত না হলে নির্বাচন জাতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে : জামায়াত আমির

- আপডেট সময় ০৭:২৮:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
- / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে
আওয়ামী লীগ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় যেসব মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে, সেসব অপরাধের বিচার না হওয়া পর্যন্ত দেশে কোনো নির্বাচন হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার উদ্যোগে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ঢাকায় আয়োজিত ‘জুলাই স্মরণসভা’য় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন—এই তিনটি প্রক্রিয়া সমান্তরালভাবে এগিয়ে নিতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে আবারও জাতীয় বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে।” তিনি জানান, শহীদ পরিবারগুলো কোনো বিচার না দেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য হলো—যারা কোটা আন্দোলনে জঘন্য অপরাধ করেছে, অন্তত তাদের মধ্যে কয়েকজনের বিচার চোখে দেখতে চায় দেশবাসী ও শহীদদের পরিবার।
জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের কথা তুলে ধরে জামায়াত আমির বলেন, সেখানে কিছু অপূর্ণতা ছিল, তবে তা পূরণ করে একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও ন্যায়নিষ্ঠ বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে অবিচার হয়েছে, আমাদের নেতাদের বিচারিক হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হতে হয়েছে—এমন দৃশ্য আর দেখতে চাই না।”
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “বিচার যেন শতভাগ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়। যারা খুন করেছে, তারা যেন তাদের ন্যায্য শাস্তি পায়। বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর না হলে জাতি কখনো মুক্তি পাবে না। আমরা বিশ্বাস করি, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পেলে কেউই রেহাই পাবে না।”
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, “আমরা চাই একটি আইনসম্মত রাষ্ট্রব্যবস্থা, যেখানে সরকার ও বিচার বিভাগ উভয়ই হবে আপসহীন, গণতান্ত্রিক ও দায়িত্বশীল। জামায়াতে ইসলামী যদি সরকার গঠনের সুযোগ পায় কিংবা বিরোধী দলেও থাকুক না কেন—আমাদের অবস্থান হবে স্পষ্ট, ন্যায়ের পক্ষে এবং সাহসিকতায় পূর্ণ। আমরা কাউকে ভয় করি না, আমরা কেবল আল্লাহকে ভয় করি এবং দায়বদ্ধ থাকি নিজের বিবেক ও দেশবাসীর কাছে। অন্য দলগুলোর কাছ থেকেও একই রকম নৈতিক অবস্থান আশা করি।”
সরকার গঠন নিয়ে বিভাজনের মধ্যে না গিয়ে জামায়াত আমির বলেন, “কে সরকার গঠন করবে, সেটি এখন মুখ্য নয়। আসল বিষয় হলো—যারা সরকারে আসবে, তারা যেন জাতির আমানত রক্ষা করে, বিশ্বাসঘাতকতা না করে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কোনো আপস না করে।”
এই বক্তব্যে তিনি জাতীয় রাজনীতিতে একটি দৃঢ় ও আদর্শিক অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করলেন, যেখানে ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাকে প্রাধান্য দিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়।