ঢাকা ০১:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫

    বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের মহাসমাবেশ

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৪:১৩:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৭৬ বার পড়া হয়েছে

    তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। বেতন বৈষম্য নিরসন, উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিতকরণ এবং প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষকদের ছয়টি সংগঠনের মোর্চা ‘সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’ এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছে।

    শনিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই মহাসমাবেশে সারা দেশ থেকে হাজার হাজার শিক্ষক অংশ নিয়েছেন, যার ফলে পুরো শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, যদি তাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

    মহাসমাবেশে অংশ নিয়ে দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া আশ্বাস দিয়েছেন যে, তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এলে এই দাবি পূরণ করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, দাবি পূরণ না হলে তিনি শিক্ষকদের পক্ষে আইনি লড়াই করবেন।

    শিক্ষকদের প্রধান দাবিগুলো হলো:
    • সহকারী শিক্ষকদের এন্ট্রি পদে জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেড বাস্তবায়ন করা।
    • ১০ ও ১৬ বছর চাকরি পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত করা।
    • সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করা।

    শিক্ষকরা জানান, বর্তমানে প্রধান শিক্ষকরা দশম গ্রেডে (শুরুর বেতন ১৬,০০০ টাকা) এবং সহকারী শিক্ষকরা ত্রয়োদশ গ্রেডে (শুরুর বেতন ১১,০০০ টাকা) বেতন পান। এর ফলে চাকরির এক দশক পর দুই পদের বেতনের মধ্যে প্রায় ১৫,০০০ টাকার পার্থক্য তৈরি হয়, যা শিক্ষকরা চরম বৈষম্য হিসেবে দেখছেন। তাদের অভিযোগ, স্বাধীনতার পর থেকে এই বৈষম্য ছিল না, কিন্তু এখন প্রধান শিক্ষকরা সহকারীদের চেয়ে তিন ধাপ উপরে অবস্থান করছেন।

    দেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৫৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন। সহকারী শিক্ষকদের সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাতীয় পে কমিশনে পাঠালেও তারা এটিকে কেবল সময়ক্ষেপণ বলে মনে করেন।

    দাবি আদায়ের জন্য সহকারী শিক্ষকরা এর আগে ধাপে ধাপে কর্মবিরতি পালন করেছেন। গত মে মাসে তারা প্রথমে ঘণ্টাব্যাপী কর্মবিরতি এবং পরে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করেন। ২৯ মে মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে তারা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন। তবে এবার দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের মহাসমাবেশ

    আপডেট সময় ০৪:১৩:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৫

    তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। বেতন বৈষম্য নিরসন, উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিতকরণ এবং প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষকদের ছয়টি সংগঠনের মোর্চা ‘সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’ এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছে।

    শনিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই মহাসমাবেশে সারা দেশ থেকে হাজার হাজার শিক্ষক অংশ নিয়েছেন, যার ফলে পুরো শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, যদি তাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

    মহাসমাবেশে অংশ নিয়ে দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া আশ্বাস দিয়েছেন যে, তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এলে এই দাবি পূরণ করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, দাবি পূরণ না হলে তিনি শিক্ষকদের পক্ষে আইনি লড়াই করবেন।

    শিক্ষকদের প্রধান দাবিগুলো হলো:
    • সহকারী শিক্ষকদের এন্ট্রি পদে জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেড বাস্তবায়ন করা।
    • ১০ ও ১৬ বছর চাকরি পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত করা।
    • সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করা।

    শিক্ষকরা জানান, বর্তমানে প্রধান শিক্ষকরা দশম গ্রেডে (শুরুর বেতন ১৬,০০০ টাকা) এবং সহকারী শিক্ষকরা ত্রয়োদশ গ্রেডে (শুরুর বেতন ১১,০০০ টাকা) বেতন পান। এর ফলে চাকরির এক দশক পর দুই পদের বেতনের মধ্যে প্রায় ১৫,০০০ টাকার পার্থক্য তৈরি হয়, যা শিক্ষকরা চরম বৈষম্য হিসেবে দেখছেন। তাদের অভিযোগ, স্বাধীনতার পর থেকে এই বৈষম্য ছিল না, কিন্তু এখন প্রধান শিক্ষকরা সহকারীদের চেয়ে তিন ধাপ উপরে অবস্থান করছেন।

    দেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৫৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন। সহকারী শিক্ষকদের সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাতীয় পে কমিশনে পাঠালেও তারা এটিকে কেবল সময়ক্ষেপণ বলে মনে করেন।

    দাবি আদায়ের জন্য সহকারী শিক্ষকরা এর আগে ধাপে ধাপে কর্মবিরতি পালন করেছেন। গত মে মাসে তারা প্রথমে ঘণ্টাব্যাপী কর্মবিরতি এবং পরে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করেন। ২৯ মে মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে তারা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন। তবে এবার দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান।