ঢাকা ০১:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

    লন্ডনে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ সমর্থনে বিক্ষোভ-৪৬৬ জন আটক

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ১১:১৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৫৩ বার পড়া হয়েছে

    যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’-এর সমর্থনে আয়োজিত একটি বিক্ষোভ থেকে শত শত মানুষকে আটক করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। গত মাসে ব্রিটিশ সরকার সংগঠনটিকে “সন্ত্রাসী সংগঠন” হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পর এটি সবচেয়ে বড় ধরপাকড়ের ঘটনা।

    শনিবার (৯ আগস্ট) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, স্থানীয় সময় রাত ৯টার মধ্যে পার্লামেন্ট স্কয়ার এলাকা থেকে অন্তত ৪৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের অভিযোগ—তারা প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করছিলেন। এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুলিশ ঘোষণা দিয়েছিল, “যত সময়ই লাগুক না কেন, প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থনকারী সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে।”

    সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্কয়ারে বসে থাকা বিক্ষোভকারীদের হাতে “আমি গণহত্যার বিরোধী, আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করি” লেখা প্ল্যাকার্ড, আর পুলিশ একে একে তাদের সরিয়ে নিচ্ছে। আয়োজক সংগঠন ‘ডিফেন্ড আওয়ার জুরিস’ জানিয়েছে, এই কর্মসূচি ছিল গাজায় চলমান গণহত্যা ও প্যালেস্টাইন অ্যাকশন নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনসম্মিলিত প্রতিবাদ।

    আল জাজিরা বলছে, সরকারি নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বড় বিক্ষোভ এটি। সমালোচকদের মতে, প্যালেস্টাইন অ্যাকশন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত কেবল মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার হরণই নয়, বরং ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন দমনের কৌশল।

    ২০০০ সালের সন্ত্রাসবাদ আইন অনুসারে, এই সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ বা সমর্থন করা এখন অপরাধ; দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। তবে আল জাজিরার প্রতিবেদক সোনিয়া গালেগো জানান, এই শাস্তির হুমকি প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সমর্থকদের থামাতে পারেনি। এমনকি শুধু “আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করি” লেখা টি-শার্ট বা কাগজ হাতে থাকলেও গ্রেপ্তার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

    বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্যাডি ফ্রেন্ড নামের এক ব্যক্তি বলেন, “যদি আমরা সাতটি শব্দ লেখা একটি সাইন হাতে নিয়ে নীরবে বসতেও না পারি, তবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অর্থ কী?” অপর এক অংশগ্রহণকারী দাদি মানজি ম্যান্সফিল্ড, যিনি আগের এক বিক্ষোভে আটক হয়েছিলেন, বলেন, “এটা সেই ব্রিটেন নয় যেখানে আমি বড় হয়েছি। এখন আমরা এক ভিন্ন বাস্তবতায় বাস করছি, যা আমি মেনে নিতে পারব না।”

    একই দিনে ‘প্যালেস্টাইন কোয়ালিশন’-এর আয়োজিত রাসেল স্কয়ার থেকে হোয়াইটহল পর্যন্ত আরেকটি মিছিলেও অংশ নেন অনেকে। সেখানে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সমর্থনকারী ব্যানার প্রদর্শনের অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
    অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যুক্তরাজ্য শান্তিপূর্ণভাবে প্ল্যাকার্ড হাতে রাখা বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে একে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছে। একইভাবে, ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি জন ম্যাকডোনেল পার্লামেন্ট স্কয়ারে গ্রেপ্তারের ঘটনাকে “গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থি” বলে মন্তব্য করেছেন।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    লন্ডনে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ সমর্থনে বিক্ষোভ-৪৬৬ জন আটক

    আপডেট সময় ১১:১৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

    যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’-এর সমর্থনে আয়োজিত একটি বিক্ষোভ থেকে শত শত মানুষকে আটক করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। গত মাসে ব্রিটিশ সরকার সংগঠনটিকে “সন্ত্রাসী সংগঠন” হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পর এটি সবচেয়ে বড় ধরপাকড়ের ঘটনা।

    শনিবার (৯ আগস্ট) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, স্থানীয় সময় রাত ৯টার মধ্যে পার্লামেন্ট স্কয়ার এলাকা থেকে অন্তত ৪৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের অভিযোগ—তারা প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করছিলেন। এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুলিশ ঘোষণা দিয়েছিল, “যত সময়ই লাগুক না কেন, প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থনকারী সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে।”

    সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্কয়ারে বসে থাকা বিক্ষোভকারীদের হাতে “আমি গণহত্যার বিরোধী, আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করি” লেখা প্ল্যাকার্ড, আর পুলিশ একে একে তাদের সরিয়ে নিচ্ছে। আয়োজক সংগঠন ‘ডিফেন্ড আওয়ার জুরিস’ জানিয়েছে, এই কর্মসূচি ছিল গাজায় চলমান গণহত্যা ও প্যালেস্টাইন অ্যাকশন নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনসম্মিলিত প্রতিবাদ।

    আল জাজিরা বলছে, সরকারি নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বড় বিক্ষোভ এটি। সমালোচকদের মতে, প্যালেস্টাইন অ্যাকশন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত কেবল মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার হরণই নয়, বরং ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন দমনের কৌশল।

    ২০০০ সালের সন্ত্রাসবাদ আইন অনুসারে, এই সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ বা সমর্থন করা এখন অপরাধ; দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। তবে আল জাজিরার প্রতিবেদক সোনিয়া গালেগো জানান, এই শাস্তির হুমকি প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সমর্থকদের থামাতে পারেনি। এমনকি শুধু “আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করি” লেখা টি-শার্ট বা কাগজ হাতে থাকলেও গ্রেপ্তার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

    বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্যাডি ফ্রেন্ড নামের এক ব্যক্তি বলেন, “যদি আমরা সাতটি শব্দ লেখা একটি সাইন হাতে নিয়ে নীরবে বসতেও না পারি, তবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অর্থ কী?” অপর এক অংশগ্রহণকারী দাদি মানজি ম্যান্সফিল্ড, যিনি আগের এক বিক্ষোভে আটক হয়েছিলেন, বলেন, “এটা সেই ব্রিটেন নয় যেখানে আমি বড় হয়েছি। এখন আমরা এক ভিন্ন বাস্তবতায় বাস করছি, যা আমি মেনে নিতে পারব না।”

    একই দিনে ‘প্যালেস্টাইন কোয়ালিশন’-এর আয়োজিত রাসেল স্কয়ার থেকে হোয়াইটহল পর্যন্ত আরেকটি মিছিলেও অংশ নেন অনেকে। সেখানে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সমর্থনকারী ব্যানার প্রদর্শনের অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
    অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যুক্তরাজ্য শান্তিপূর্ণভাবে প্ল্যাকার্ড হাতে রাখা বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে একে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছে। একইভাবে, ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি জন ম্যাকডোনেল পার্লামেন্ট স্কয়ারে গ্রেপ্তারের ঘটনাকে “গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থি” বলে মন্তব্য করেছেন।