অবৈধ অভিবাসনের ভয়ঙ্কর চিত্র
লিবিয়ার বিপদসংকুল পথ পাড়ি দিয়ে ফিরলেন ১৫৮ বাংলাদেশি

- আপডেট সময় ১২:৫৬:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
- / ২৬৫ বার পড়া হয়েছে
যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ১৫৮ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি অভিবাসী। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা, অর্থাৎ আইওএম-এর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তারা নিরাপদে দেশে ফিরতে পেরেছেন।
মঙ্গলবার, ১৭ই জুন, ভোর পৌনে ৬টায় লিবিয়ার ত্রিপোলির তাজুরা ডিটেনশন সেন্টার থেকে বুরাক এয়ারের একটি ফ্লাইটে তারা ঢাকায় পৌঁছান। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা তাদের অভ্যর্থনা জানান।
এই প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স কাজী আসিফ আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এবং তাদের ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করে। এরপর স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে আইওএম-এর সার্বিক সহযোগিতায় তাদের বিনা খরচে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রত্যাবাসিত এই বাংলাদেশিদের বেশিরভাগই মানবপাচারকারীদের প্ররোচনা ও সহযোগিতায় সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইউরোপ গমনের উদ্দেশ্যে লিবিয়ায় অনুপ্রবেশ করেছিলেন। অর্থাৎ, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের স্বপ্ন দেখতে গিয়ে তারা এই বিপজ্জনক পথে পা বাড়িয়েছিলেন।
কিন্তু সেই স্বপ্ন তাদের জন্য হয়ে ওঠে দুঃস্বপ্ন। তাদের অধিকাংশই লিবিয়ায় বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। অবৈধ পথে বিদেশ গমনের এই ভয়ঙ্কর পরিণতি আবারও সামনে এলো।
ফিরে আসা এসব বাংলাদেশিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ভবিষ্যতে এই ভয়ঙ্কর পথ পাড়ি দিয়ে আর যেন কেউ লিবিয়ায় না যায়, সে বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। দূতাবাসও তাদের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে বৈধ উপায়ে বিদেশ গমনের জন্য উৎসাহিত করেছে।
প্রতি বছর হাজার হাজার বাংলাদেশি উন্নত জীবনের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ পথে বিদেশে পাড়ি জমান। মানবপাচারকারীরা তাদের মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়ে সর্বস্বান্ত করে দেয়, এবং অনেক সময় তাদের জীবনও কেড়ে নেয়। লিবিয়ার মতো দেশগুলো অবৈধ অভিবাসীদের জন্য প্রায়শই একটি ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যেখানে তারা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির শিকার হন।