ঢাকা ০৩:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫

    শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ২১৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০২:২৯:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
    • / ২৬২ বার পড়া হয়েছে

    ফেনীর মহিপালে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর সময় গুলিতে নিহত কলেজছাত্র মাহবুবুল হাসান মাসুম হত্যা মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ মোট ২১৭ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ফেনীর আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান।

    ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট মহিপাল এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আওতায় একদফা দাবিতে আয়োজিত অসহযোগ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন সোনাগাজীর কলেজছাত্র মাহবুবুল হাসান মাসুম। কর্মসূচি চলাকালেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন তিনি। পরে ৭ আগস্ট চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত মাসুম সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের তরাব পাটোয়ারী বাড়ির মৃত মাওলানা নোমান হাসানের ছেলে এবং ছাগলনাইয়া আব্দুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ থেকে বাংলা বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

    এ ঘটনায় গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর নিহতের ভাই মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান ফেনী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৬২ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাত আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়
    অভিযোগপত্রে অভিযুক্তদের মধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও রয়েছেন। ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, ফেনী জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল কবির রতন, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল, ফেনী পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, পরশুরাম পৌরসভার সাবেক মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম পিটু ও জিয়া উদ্দিন বাবলু প্রমুখ এই তালিকায় আছেন।

    মামলার তদন্তে নিয়োজিত ফেনী মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আলমগীর হোসেন জানান, মামলায় এজাহারনামীয় ১২ জন এবং সন্দেহভাজন ৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মুরাদ হাসান বাবুসহ তিনজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে পুরো ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযোগপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে।

    নিহত মাসুমের ভাই ও মামলার বাদী মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান বলেন, “আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি চাই হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। তদন্তে সহযোগিতা করেছি, এখন দ্রুত চার্জশিটের ভিত্তিতে আসামিদের বিচার নিশ্চিত হোক।”

    এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সামাজিক পরিসরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। আলোচিত এই মামলায় অভিযুক্তদের তালিকায় ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের নাম থাকায় দেশের আইন ও বিচারব্যবস্থার ওপর সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ২১৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল

    আপডেট সময় ০২:২৯:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

    ফেনীর মহিপালে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর সময় গুলিতে নিহত কলেজছাত্র মাহবুবুল হাসান মাসুম হত্যা মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ মোট ২১৭ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ফেনীর আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান।

    ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট মহিপাল এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আওতায় একদফা দাবিতে আয়োজিত অসহযোগ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন সোনাগাজীর কলেজছাত্র মাহবুবুল হাসান মাসুম। কর্মসূচি চলাকালেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন তিনি। পরে ৭ আগস্ট চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত মাসুম সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের তরাব পাটোয়ারী বাড়ির মৃত মাওলানা নোমান হাসানের ছেলে এবং ছাগলনাইয়া আব্দুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ থেকে বাংলা বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

    এ ঘটনায় গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর নিহতের ভাই মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান ফেনী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৬২ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাত আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়
    অভিযোগপত্রে অভিযুক্তদের মধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও রয়েছেন। ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, ফেনী জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল কবির রতন, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল, ফেনী পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, পরশুরাম পৌরসভার সাবেক মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম পিটু ও জিয়া উদ্দিন বাবলু প্রমুখ এই তালিকায় আছেন।

    মামলার তদন্তে নিয়োজিত ফেনী মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আলমগীর হোসেন জানান, মামলায় এজাহারনামীয় ১২ জন এবং সন্দেহভাজন ৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মুরাদ হাসান বাবুসহ তিনজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে পুরো ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযোগপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে।

    নিহত মাসুমের ভাই ও মামলার বাদী মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান বলেন, “আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি চাই হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। তদন্তে সহযোগিতা করেছি, এখন দ্রুত চার্জশিটের ভিত্তিতে আসামিদের বিচার নিশ্চিত হোক।”

    এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সামাজিক পরিসরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। আলোচিত এই মামলায় অভিযুক্তদের তালিকায় ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের নাম থাকায় দেশের আইন ও বিচারব্যবস্থার ওপর সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে।