সাদাপাথর, দুদক ও জেলা প্রশাসনের তদন্তে ৫১ ব্যক্তি ও সংস্থার জড়িত থাকার প্রমাণ

- আপডেট সময় ১১:২৯:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
- / ২৬২ বার পড়া হয়েছে
সিলেটের পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর থেকে প্রায় ৮০ শতাংশ পাথর লুটপাটের ঘটনায় দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় পৃথকভাবে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সিলেট জেলা প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের প্রাথমিক তদন্তে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ৫১ জন ব্যক্তি ও সংস্থার জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে।
জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশ
জেলা প্রশাসনের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি সাত পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যেখানে ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হয়েছে। বুধবার (২০ আগস্ট) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পদ্মাসন সিংহ এই প্রতিবেদনটি জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন, দায়-দায়িত্ব নিরূপণ এবং সুপারিশ পেশ—এই তিনটি দায়িত্ব পালন করেছে। পুলিশ ও প্রশাসনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা ১০টি সুপারিশ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে:
• একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন।
• সাদাপাথরে একটি স্থায়ী বিএমডি (ভূ-ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর) অফিস স্থাপন।
• টাস্কফোর্সের অভিযান ও চেকপোস্ট বাড়ানো।
• গাছপালা রোপণ এবং সবুজায়ন কার্যক্রম বৃদ্ধি।
• প্রত্যেক সংস্থাকে নিজস্ব তদন্তের মাধ্যমে নিজ নিজ দায় নিরূপণ।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, রেলওয়ে বাংকার এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের কারণে পরিবেশ ও পর্যটন স্থানের সৌন্দর্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন
দুদকের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পর্যটন এলাকায় প্রশাসনের উপস্থিতি ও বিজিবির নিয়মিত টহল থাকা সত্ত্বেও কয়েক মাস ধরে শত শত কোটি টাকা মূল্যের পাথর লুট করা হয়েছে। প্রায় ৮০ শতাংশ পাথর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যা স্থানীয় প্রশাসন এবং প্রভাবশালীদের ইন্ধন ও যোগসাজশে সম্ভব হয়েছে।
এই ঘটনায় দুদক যেসব ব্যক্তির জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে, তাদের মধ্যে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের নামও রয়েছে। তবে এ বিষয়ে সিলেট মহানগর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
দুদকের সিলেট কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফি মো. নাজমুস সা’দাৎ বলেন, প্রাথমিক প্রমাণের ভিত্তিতে অনুসন্ধান নথি খোলার জন্য অনুমতি চেয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। অনুমতি পেলে প্রত্যেকের বিষয়ে আলাদাভাবে বিস্তারিত তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।