পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন। শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম। এক দশক পর পাকিস্তানের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এলেন। এর আগে ২০১২ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার ঢাকায় এসেছিলেন।

ইসহাক দারের এই সফরে ইসলামাবাদ দুই দেশের সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের পাশাপাশি রাজনৈতিক স্তরে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে গুরুত্ব দেবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশের লক্ষ্য সম্পর্ক স্বাভাবিক করা। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে পাঁচ থেকে ছয়টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হওয়ার কথা রয়েছে।

রোববার (২৪ আগস্ট) পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মূল বৈঠকটি হবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে। শুরুতে দুই মন্ত্রী একান্তে এবং পরে প্রতিনিধি পর্যায়ে বৈঠক করবেন। এই বৈঠকে ব্যবসা, বিনিয়োগ, সংযুক্তি, কৃষি, এবং দুই দেশের জনগণের চলাচল সুগম করা সহ বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

বাংলাদেশ চায় পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হলে একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়া, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন এবং অবিভক্ত সম্পত্তিতে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা—এই তিনটি ঐতিহাসিক অমীমাংসিত ইস্যুর সমাধান জরুরি।

বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসা বিলোপ চুক্তি, বাণিজ্য বিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, সংস্কৃতি বিনিময়, ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা, দুই রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার মধ্যে সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস)-এর সঙ্গে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (আইপিআরআই) মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা ও চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে।

সফরের দ্বিতীয় দিনে ইসহাক দার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। কূটনৈতিক সূত্র থেকে জানা গেছে, তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গেও দেখা করতে পারেন।