০১:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

শুল্ক বাঁচাতে ভারত থেকে ১৫ লাখ আইফোন নিলো অ্যাপল

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০২:৩৯:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১৪ বার পড়া হয়েছে

মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল ভারত থেকে প্রায় ৬০০ টন, অর্থাৎ ১৫ লাখ আইফোন সরিয়ে নিয়েছে। একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিশেষ কার্গো বিমানে করে এই বিপুল পরিমাণ আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের  প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি ঘোষণার পরই অ্যাপল এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

গত সপ্তাহে ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এরপরই অ্যাপল ভারত থেকে আইফোন সরিয়ে নিতে শুরু করে। যদিও পরবর্তীতে চীন ছাড়া অন্যান্য দেশের ওপর আরোপিত শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন ট্রাম্প।

বিশ্লেষকরা আগেই সতর্ক করেছিলেন, আইফোন আমদানির জন্য অ্যাপল চীনের ওপর বেশি নির্ভরশীল। ট্রাম্প চীন থেকে পণ্য আমদানির ওপর সর্বোচ্চ ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আইফোনের দাম ব্যাপক বাড়তে পারত।

তবে, শুল্ক নব্বই দিনের জন্য স্থগিত করার পর ভারত থেকে আইফোন তৈরিতে দাম বাড়বে না বলেই মনে করা হচ্ছে। অ্যাপলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, ট্রাম্পের আগে ঘোষিত শুল্ক এড়াতেই অ্যাপল ভারত থেকে এই বিশাল চালান নিয়েছে।

এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আইফোন পরিবহনের জন্য অ্যাপল ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাই বিমানবন্দরে শুল্ক পরিশোধের সময় ৩০ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৬ ঘণ্টা করার জন্য দেশটির বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে। সূত্র আরও জানায়, ভারতের বিমানবন্দরে তৈরি তথাকথিত ‘গ্রিন করিডর’ ব্যবস্থাটি চীনের কিছু বিমানবন্দরে অ্যাপল যে পদ্ধতি ব্যবহার করে, তারই অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে।

ওই সূত্র এবং ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত মার্চ মাস থেকে প্রায় ৬টি কার্গো বিমান ভারত থেকে আইফোন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে রওনা হয়েছে। প্রতিটি বিমানের ধারণক্ষমতা ছিল প্রায় ১০০ টন। চলতি সপ্তাহে ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি কার্যকর হওয়ার পর আরও একটি কার্গো বিমান ভারত ছেড়েছে।

প্রতিটি প্যাকেজের মধ্যে আইফোন ১৪ এবং এর চার্জিং কেবল রয়েছে, যার ওজন প্রায় ৩৫০ গ্রাম। সব মিলিয়ে কার্গোতে থাকা ৬০০ টন প্যাকেজের ওজন হিসাব করে দেখা গেছে, সেখানে প্রায় ১৫ লাখ আইফোন ছিল।

তবে, এই বিষয়ে অ্যাপল এবং ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। বিষয়টি গোপনীয় হওয়ায় কোনো সূত্রই তাদের নাম প্রকাশ করতে চাননি।

গবেষণা সংস্থা কাউন্টার পয়েন্টের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর অ্যাপল সারা বিশ্বে ২২ কোটির বেশি আইফোন বিক্রি করে। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া মোট আইফোনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ আসে ভারত থেকে, বাকিগুলো আনা হয় চীন থেকে।

উল্লেখ্য, এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের ওপর ৫৪ শতাংশ এবং পরবর্তীতে ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিলেন। বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, যদি ৫৪ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকত, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যেত। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে আইফোন আমদানি বাড়িয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

শুল্ক বাঁচাতে ভারত থেকে ১৫ লাখ আইফোন নিলো অ্যাপল

আপডেট সময় ০২:৩৯:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল ভারত থেকে প্রায় ৬০০ টন, অর্থাৎ ১৫ লাখ আইফোন সরিয়ে নিয়েছে। একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিশেষ কার্গো বিমানে করে এই বিপুল পরিমাণ আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের  প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি ঘোষণার পরই অ্যাপল এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

গত সপ্তাহে ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এরপরই অ্যাপল ভারত থেকে আইফোন সরিয়ে নিতে শুরু করে। যদিও পরবর্তীতে চীন ছাড়া অন্যান্য দেশের ওপর আরোপিত শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন ট্রাম্প।

বিশ্লেষকরা আগেই সতর্ক করেছিলেন, আইফোন আমদানির জন্য অ্যাপল চীনের ওপর বেশি নির্ভরশীল। ট্রাম্প চীন থেকে পণ্য আমদানির ওপর সর্বোচ্চ ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আইফোনের দাম ব্যাপক বাড়তে পারত।

তবে, শুল্ক নব্বই দিনের জন্য স্থগিত করার পর ভারত থেকে আইফোন তৈরিতে দাম বাড়বে না বলেই মনে করা হচ্ছে। অ্যাপলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, ট্রাম্পের আগে ঘোষিত শুল্ক এড়াতেই অ্যাপল ভারত থেকে এই বিশাল চালান নিয়েছে।

এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আইফোন পরিবহনের জন্য অ্যাপল ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাই বিমানবন্দরে শুল্ক পরিশোধের সময় ৩০ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৬ ঘণ্টা করার জন্য দেশটির বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে। সূত্র আরও জানায়, ভারতের বিমানবন্দরে তৈরি তথাকথিত ‘গ্রিন করিডর’ ব্যবস্থাটি চীনের কিছু বিমানবন্দরে অ্যাপল যে পদ্ধতি ব্যবহার করে, তারই অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে।

ওই সূত্র এবং ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত মার্চ মাস থেকে প্রায় ৬টি কার্গো বিমান ভারত থেকে আইফোন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে রওনা হয়েছে। প্রতিটি বিমানের ধারণক্ষমতা ছিল প্রায় ১০০ টন। চলতি সপ্তাহে ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি কার্যকর হওয়ার পর আরও একটি কার্গো বিমান ভারত ছেড়েছে।

প্রতিটি প্যাকেজের মধ্যে আইফোন ১৪ এবং এর চার্জিং কেবল রয়েছে, যার ওজন প্রায় ৩৫০ গ্রাম। সব মিলিয়ে কার্গোতে থাকা ৬০০ টন প্যাকেজের ওজন হিসাব করে দেখা গেছে, সেখানে প্রায় ১৫ লাখ আইফোন ছিল।

তবে, এই বিষয়ে অ্যাপল এবং ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। বিষয়টি গোপনীয় হওয়ায় কোনো সূত্রই তাদের নাম প্রকাশ করতে চাননি।

গবেষণা সংস্থা কাউন্টার পয়েন্টের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর অ্যাপল সারা বিশ্বে ২২ কোটির বেশি আইফোন বিক্রি করে। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া মোট আইফোনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ আসে ভারত থেকে, বাকিগুলো আনা হয় চীন থেকে।

উল্লেখ্য, এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের ওপর ৫৪ শতাংশ এবং পরবর্তীতে ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিলেন। বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, যদি ৫৪ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকত, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যেত। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে আইফোন আমদানি বাড়িয়েছে।