ক্ষমতা হারিয়ে সম্পত্তি বিক্রিতে ব্যস্ত সাবেক মন্ত্রী নসরুল হামিদ

- আপডেট সময় ১২:৪১:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
- / ৭ বার পড়া হয়েছে
সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এখন তার সম্পত্তি বিক্রি করতে মরিয়া। গুলশান ক্লাবের ঠিক উল্টোদিকে তার এক বিঘা জমির বিশাল প্লট রয়েছে। জায়গাটি অনেকটা বাগানবাড়ির মতো করে সাজিয়েছিলেন। ক্ষমতায় থাকাকালে পরিবার-পরিজন আর বন্ধুদের নিয়ে সেখানে আড্ডা দিতেন তিনি।
কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন নসরুল হামিদ। এখন তিনি ভারতে আছেন। গত দুই মাস ধরে তিনি ওই গুলশানের জমির জন্য ক্রেতা খুঁজছেন। বাজারমূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, জমিটি বিক্রি করতে বড় বড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তিনি। কিন্তু এত বড় পরিমাণ অর্থ দিয়ে কেউ কিনতে আগ্রহ দেখায়নি। তাই এখন প্লটটি ছোট ছোট ভাগে বিক্রি করার চেষ্টা করছে তার কোম্পানি, ‘হামিদ রিয়েল এস্টেট’।
এছাড়াও, রাজধানীর মাদানী অ্যাভিনিউর ১০০ ফুট রাস্তার পাশে তার আরও পাঁচ বিঘা জমি রয়েছে। সেটিও বিক্রির চেষ্টা চলছে। তবে গুলশান, বনানী, নিকেতনের কিছু ছোট প্লট ও বাড়ি এরই মধ্যে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
তার পারিবারিক ব্যবসা রিয়েল এস্টেট। ‘হামিদ গ্রুপ’ নামের প্রতিষ্ঠানের অধীনে একাধিক কোম্পানি চালান তারা—যেমন হামিদ কনস্ট্রাকশন, ডেলকো, হামিদ ইকোনমিক জোন, ফ্যাশন, সোয়েটার, এবং এগ্রো লিমিটেড। এই গ্রুপের রিয়েল এস্টেট ব্র্যান্ডের নাম ‘প্রিয়প্রাঙ্গণ’।
এমডি হিসেবে আছেন নসরুল হামিদের ভাই ইন্তেখাবুল হামিদ অপু, যিনি এখন পলাতক।
হামিদ রিয়েল এস্টেটের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। গত ৫ আগস্টের পর থেকে ব্যবসার অবস্থা খারাপ। কর্মী ছাঁটাইও শুরু হয়েছে। কিছু জমি বেদখল হয়ে গেছে।
ঢাকার কেরানীগঞ্জে ‘প্রিয়প্রাঙ্গণ-১’ ও ‘প্রিয়প্রাঙ্গণ-২’ নামে আবাসিক প্রকল্প করেছে হামিদ গ্রুপ। সেখানেও জমি নিয়ে জোর করে কেনার অভিযোগ আছে। কেউ কেউ দাবি করেছেন, কম দামেও জমি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।
নসরুল হামিদ ২০১৪ সাল থেকে এক দশক ধরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, এই সময়েই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে তার মন্ত্রণালয়ে। বিভিন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্পে ঘুস নেওয়ার অভিযোগও আছে। তার অংশ নাকি হাজার কোটি টাকার বেশি।
এলপিজি ও এলএনজি আমদানিতেও ভাগ বসিয়েছিলেন তিনি। ২০২১ সালে বড় একটি টার্মিনাল প্রকল্পে নিজের মামার নামে সিঙ্গাপুরে শেল কোম্পানি খুলে কাজ আদায়ের চেষ্টা করেন, যদিও পরে চাপের মুখে পিছু হটেন।
তার বিরুদ্ধে এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা চলছে। অভিযোগ—৯৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩ হাজার ১৮১ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন। মামলা হয়েছে তার স্ত্রী সীমা হামিদ ও ছেলে জারিফ হামিদের নামেও।