প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি অসন্তুষ্ট: মির্জা ফখরুল

- আপডেট সময় ০৩:০৬:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
- / ১৮ বার পড়া হয়েছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করে সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ না পাওয়ায় বিএনপি সন্তুষ্ট হতে পারেনি। বুধবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের কোনো নির্দিষ্ট রোডম্যাপ দেননি। তিনি ডিসেম্বর থেকে জুন মাসের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। তবে আমরা বলেছি, ডিসেম্বর মাসই নির্বাচনের জন্য শেষ সময়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা দলের ভেতরে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
এর আগে, নির্বাচন নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, গণতন্ত্রের পথে যাত্রা করে উল্টো দিকে হাঁটার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করাটা কেমন আচরণ? যখনই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করা হয়, তখনই দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পায়, যা গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়।
সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, যে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য এত মানুষ জীবন দিয়েছে, আন্দোলন করেছে, সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে আপত্তি কোথায়? কাদের সুবিধা দিতে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে? কেন অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে? এসব বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হবে বলে তিনি জানান।
এর আগে, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না পেলে দলীয় কর্মসূচির পরিকল্পনা নিয়েও বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে আলোচনা হয়েছিল। বিএনপি অভিযোগ করেছিল যে সংস্কারের বিষয়টিকে সামনে এনে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা হচ্ছে। দলটি শুরু থেকেই বলে আসছে, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত ভোটের ব্যবস্থা করা হোক।
তাদের এই দাবিতে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো ছাড়াও বাম ঘরানার দলগুলোর সমর্থন আছে। এর বিপরীতে জামায়াতে ইসলামী, নবগঠিত দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিসহ কয়েকটি ইসলামী দল বলছে, আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন। তবে ছোট না বড় সংস্কার—এ নিয়েও বিতর্ক রয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বলছেন। আবার অন্য একজন বলছেন জুনে নির্বাচন হবে। আরেকজন বলেছেন, এই সরকারের পাঁচ বছর থাকা দরকার, জনগণ সেটাই চায়। একজন উপদেষ্টা বললেন, তারা নির্বাচিত। অন্যদিকে সরকারের ঘনিষ্ঠ একজন বলেছেন, গণতন্ত্রের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের সৃষ্টি হয়। এই কথাগুলো একটি বিভ্রান্তিকর পরিবেশ তৈরি করেছে। এতে নির্বাচন নিয়ে জনগণের মনে সন্দেহ সৃষ্টি হচ্ছে।
কাল ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। দুপুর ৩টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে এই বৈঠক হবে। গত ২৩ মার্চ ঐক্যমত্য কমিশনে সংস্কারের মতামত জমা দেওয়ার পর এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এর আগে ৬ মার্চ ঐক্যমত্য কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে মতামত চেয়ে ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে ‘স্প্রেড শিট’ (ছক আকারে) পাঠিয়েছিল।