০১:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র বছরে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি শুল্ক পায় বাংলাদেশি পণ্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০৪:০৯:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১৪ বার পড়া হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর বাংলাদেশি পণ্যের ওপর এক বিলিয়ন ডলারের বেশি শুল্ক আদায় করে থাকে বলে জানিয়েছেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। অন্যদিকে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর প্রায় ১৮০ মিলিয়ন ডলার শুল্ক আদায় করে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানের একটি অভিজাত হোটেলে ট্রাম্প রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ অ্যান্ড বাংলাদেশ ইমপ্লিকেশন অ্যান্ড রেসপন্স শীর্ষক ডায়ালগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে তিনি এসব তথ্য জানান।

এ সময় ট্রাম্পের শুল্কনীতি মোকাবিলায় মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তির পাশাপাশি কূটনৈতিক তৎপরতায় জোর দেওয়ার আহ্বান জানান বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। পাশাপাশি বাংলাদেশকে কৌশলগত বিকল্প অন্বেষণেরও সুপারিশ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ মার্কিন আমদানিতে গড়ে ৬.২ শতাংশ শুল্ক এবং অন্যান্য শুল্ক আরোপ করে। তবে যখন রিবেট বিবেচনা করা হয়, তখন গড় শুল্ক ২.২ শতাংশে নেমে আসে। এর বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে মার্কিন আমদানিতে গড় শুল্ক ১৫.১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

সিপিডির পরামর্শ, বাংলাদেশের উচিত মার্কিন শুল্কের প্রভাব তার রপ্তানি প্রতিযোগিতার ওপর নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করা। সেই সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তির (টিকফা) মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জড়িত থাকা।

ট্রাম্প প্রশাসনকে রোগের সঙ্গে তুলনা করে পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি মো. ফজলুল হক বলেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতি পুরোটা অনিশ্চিত প্রক্রিয়া। তবে মোটা দাগে ধরা যেতে পারে এই শুল্ক নীতিতে চীন তাদের মূল টার্গেট।

তিনি আরও বলেন, নির্ধারিত সময় শেষে বাংলাদেশর মতো দরিদ্র দেশগুলোর ওপর শুল্ক কিছুটা কমাতে পারে। কিন্তু আমাদের মার্কেটের অবস্থার ওপর ভিত্তি করে বায়ারদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের ৫০ শতাংশ নেগোসিয়েশন করতে হবে। এজন্য কারখানাগুলোকে ব্যাংকের সাপোর্ট দিতে হবে। তবে এই কাজটা কেবল একটা পদ্ধতির মধ্যদিয়ে যাওয়া জরুরি, যা আগামী ৯০ দিনের জন্য কার্যকর হবে। তবে আগামীতে আমাদের রপ্তানি কিছুটা কমাতে পারে। এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। তবে আগামী ৯০ দিন পরে পরিস্থিতি যাই হোক তাতে যেন সরকারের সহযোগিতা থাকে।

অন্য বক্তারা জানান, মার্কিন শুল্কনীতি শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্ব অর্থনীতিকে দুষ্টচক্রের মধ্যে ফেলবে। এটি শুধু ব্যবসা-বাণিজ্যে নয়, শ্রমিকদের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ৯০ দিন পর যুক্তরাষ্ট্র কী করবে এটি কারও ধারণা নেই। তাই বিপদে পড়ার আগেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থাকে (ডব্লিউটিও) কাজ করতে দিচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র। তাই ডব্লিউটিও’র দিকে না তাকিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দিতে পরামর্শ দেন তারা।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্র বছরে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি শুল্ক পায় বাংলাদেশি পণ্যে

আপডেট সময় ০৪:০৯:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর বাংলাদেশি পণ্যের ওপর এক বিলিয়ন ডলারের বেশি শুল্ক আদায় করে থাকে বলে জানিয়েছেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। অন্যদিকে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর প্রায় ১৮০ মিলিয়ন ডলার শুল্ক আদায় করে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানের একটি অভিজাত হোটেলে ট্রাম্প রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ অ্যান্ড বাংলাদেশ ইমপ্লিকেশন অ্যান্ড রেসপন্স শীর্ষক ডায়ালগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে তিনি এসব তথ্য জানান।

এ সময় ট্রাম্পের শুল্কনীতি মোকাবিলায় মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তির পাশাপাশি কূটনৈতিক তৎপরতায় জোর দেওয়ার আহ্বান জানান বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। পাশাপাশি বাংলাদেশকে কৌশলগত বিকল্প অন্বেষণেরও সুপারিশ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ মার্কিন আমদানিতে গড়ে ৬.২ শতাংশ শুল্ক এবং অন্যান্য শুল্ক আরোপ করে। তবে যখন রিবেট বিবেচনা করা হয়, তখন গড় শুল্ক ২.২ শতাংশে নেমে আসে। এর বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে মার্কিন আমদানিতে গড় শুল্ক ১৫.১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

সিপিডির পরামর্শ, বাংলাদেশের উচিত মার্কিন শুল্কের প্রভাব তার রপ্তানি প্রতিযোগিতার ওপর নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করা। সেই সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তির (টিকফা) মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জড়িত থাকা।

ট্রাম্প প্রশাসনকে রোগের সঙ্গে তুলনা করে পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি মো. ফজলুল হক বলেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতি পুরোটা অনিশ্চিত প্রক্রিয়া। তবে মোটা দাগে ধরা যেতে পারে এই শুল্ক নীতিতে চীন তাদের মূল টার্গেট।

তিনি আরও বলেন, নির্ধারিত সময় শেষে বাংলাদেশর মতো দরিদ্র দেশগুলোর ওপর শুল্ক কিছুটা কমাতে পারে। কিন্তু আমাদের মার্কেটের অবস্থার ওপর ভিত্তি করে বায়ারদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের ৫০ শতাংশ নেগোসিয়েশন করতে হবে। এজন্য কারখানাগুলোকে ব্যাংকের সাপোর্ট দিতে হবে। তবে এই কাজটা কেবল একটা পদ্ধতির মধ্যদিয়ে যাওয়া জরুরি, যা আগামী ৯০ দিনের জন্য কার্যকর হবে। তবে আগামীতে আমাদের রপ্তানি কিছুটা কমাতে পারে। এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। তবে আগামী ৯০ দিন পরে পরিস্থিতি যাই হোক তাতে যেন সরকারের সহযোগিতা থাকে।

অন্য বক্তারা জানান, মার্কিন শুল্কনীতি শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্ব অর্থনীতিকে দুষ্টচক্রের মধ্যে ফেলবে। এটি শুধু ব্যবসা-বাণিজ্যে নয়, শ্রমিকদের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ৯০ দিন পর যুক্তরাষ্ট্র কী করবে এটি কারও ধারণা নেই। তাই বিপদে পড়ার আগেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থাকে (ডব্লিউটিও) কাজ করতে দিচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র। তাই ডব্লিউটিও’র দিকে না তাকিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দিতে পরামর্শ দেন তারা।