জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত হননি, তবু নিয়েছেন রাষ্ট্রীয় সহায়তা

- আপডেট সময় ০২:২৮:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
- / ৬ বার পড়া হয়েছে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছেন বলে দাবি করে সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক সহায়তা নিয়েছেন মো. ইলিয়াছ হোসেন হিরণ। বয়স ৩৭। তবে প্রকৃতপক্ষে তিনি সেই আন্দোলনে আহতই হননি—ঘটনার তদন্তে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
এ ঘটনায় প্রতারণার অভিযোগে ইলিয়াছ ও মোহাম্মদ লিটন নামে আরও একজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ইলিয়াছ ১৫ এপ্রিল লিখিতভাবে স্বীকার করেছেন যে তিনি জুলাই আন্দোলনে আহত হননি এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজেকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছেন।
চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি, অন্তর্বর্তী সরকার শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া শুরু করে। সেদিন ইলিয়াছ রাষ্ট্রীয়ভাবে ২ লাখ টাকার চেক গ্রহণ করেন এবং ফাউন্ডেশন থেকেও পান আরও এক লাখ টাকা।
সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, জুলাই আন্দোলনে আহতরা ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে সুবিধা পাবেন। তবে এসব নাম অন্তর্ভুক্তির আগে তা যাচাই–বাছাই করে জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন এবং একটি বিশেষ সেল।
ইলিয়াছের নাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ‘এ ক্যাটাগরির’ তালিকায় থাকলেও তদন্তে দেখা যায়, ৫ আগস্ট উত্তরায় গন্ডগোলে আহত হওয়ার দাবি করলেও, তাঁর বক্তব্যে রয়েছে অসঙ্গতি। কোথা থেকে কী লেগে যায়, তিনি নিজেও জানেন না—এমনটিই বলেন ফোনালাপে।
এদিকে ফাউন্ডেশন বলছে, ইলিয়াছের চিকিৎসার যে প্রাথমিক হাসপাতাল উল্লেখ করা হয়েছিল, সেখান থেকে তাঁর চিকিৎসার কোনো তথ্যই মেলেনি।
নিটোর হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কেনান জানান, একটি তালিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাঁদের পাঠানো হয়েছিল, যেখানে ইলিয়াছের নাম ছিল। তবে তাঁরা কেবল চিকিৎসা দিয়েছেন, কে আসলে আহত—তা যাচাই করা তাঁদের কাজ নয়।
এ ঘটনায় প্রতারণার মামলায় লিটনকে ইতোমধ্যে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। লিটন বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনে আহতদের উসকানি দেওয়া, ফাউন্ডেশনে ভাঙচুর ও হুমকির অভিযোগে অভিযুক্ত।
ফাউন্ডেশনের করা আরেক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন দিলশাদ আফরিন নামের একজন নারী, যিনি জাতীয় নাগরিক কমিটির ফতুল্লা থানা কমিটির সদস্য ছিলেন। তাঁকেও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ফাউন্ডেশনের প্রধান গ্রাহক সেবা কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত প্রতারণার অভিযোগে করা ২০টি মামলার মধ্যে ১০ জনকে আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন। বাকিরা জামিনে আছেন।