মার্চে নারী ও কন্যা নির্যাতনের শিকার ৪৪২ জন: মহিলা পরিষদের উদ্বেগ

- আপডেট সময় ০৫:২৬:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
- / ১০ বার পড়া হয়েছে
চলতি বছরের মার্চ মাসে বাংলাদেশে ৪৪২ জন নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১২৫ জন কন্যাসহ মোট ১৬৩ জন।
এর মধ্যে ৩৬ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার, ২ জন কন্যা ধর্ষণের পর হত্যা এবং আরও ২ জন আত্মহত্যা করেছে। ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হয়েছে ৭০ জন নারী ও কন্যা।
জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য প্রকাশ করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আন্দোলন সম্পাদক রাবেয়া বেগম শান্তি।
তিনি বলেন, নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরণ, অপমান ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘৃণা ছড়িয়ে পড়ায় নারীর নিরাপত্তা আরও সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে।
নারীর সাজ, পোশাক ও চলাফেরা নিয়ে প্রকাশ্য অপমান এখন নিত্যদিনের ঘটনা।
তিনি অভিযোগ করেন, নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার মাত্রা অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। বিচারে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
এমনকি শিশু ধর্ষণের ঘটনায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা জামিন পাচ্ছে, দণ্ডিতরা কারাগার থেকে পালিয়ে যাচ্ছে।
রাবেয়া বেগম শান্তি জানান, সাম্প্রতিক নারীবিদ্বেষী সংস্কৃতির ছায়া পড়েছে নারী মুক্তি আন্দোলনের পথিকৃৎ রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের প্রতিকৃতির ওপরও। রংপুরে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের দাবিও উঠেছে।
মহিলা পরিষদ এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং রোকেয়া-সুফিয়া কামালসহ নারী অগ্রদূতদের যথাযথ সম্মান রক্ষার দাবি জানিয়েছে।
সংগঠনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা পুনর্বহালেরও দাবি জানিয়েছে, যা সাম্প্রতিক খসড়া বিধিমালায় বাদ পড়েছে।
তারা মনে করে, নারী-পুরুষ সমতা প্রতিষ্ঠা ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন জরুরি।
তবে মৌলবাদী ও নারী বিদ্বেষী গোষ্ঠী এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, যা ঠেকাতে সরকার ও সমাজের সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকাসহ সারা দেশে প্রতিহিংসার মনোভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। উচ্ছৃঙ্খল জনতা প্রকাশ্যে মারধর, হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। শিক্ষাঙ্গনেও শিক্ষকদের হেনস্তা বেড়েছে, নারী শিক্ষকও বাদ পড়ছেন না।
মহিলা পরিষদ এসব ঘটনার বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং নারী নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।