ঢাকা ০৮:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৫ মে ২০২৫

কলাবাগান থানার ওসি ও এসআই প্রত্যাহার, কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ১২:১৪:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫
  • / ২৫৬ বার পড়া হয়েছে

কলাবাগান থানায় কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহ এক উপ-পরিদর্শককে (এসআই) সাময়িক প্রত্যাহার করা হয়েছে।

প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন ওসি মোক্তারুজ্জামান এবং এসআই বেলাল হোসেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সোমবার (৫ মে) এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রশাসনিক কারণে এই প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট ড. আব্দুল ওয়াদুদ অভিযোগ করেছেন, সন্ত্রাসীদের নিয়ে গভীর রাতে কলাবাগান থানার ওসি তার বাড়িতে চাঁদাবাজি, অর্থ আদায়, ভাঙচুর, লুটপাট এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছেন।

এই অভিযোগের সঠিক তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি ডিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ড. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, গত ২৯ এপ্রিল রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে কলাবাগান থানার এসআই বেলালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য ও ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী তার বাড়িতে জোর করে প্রবেশ করে। তার ম্যানেজার ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশের একটি গাড়ি ঘটনাস্থলে আসে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিমের দুটি গাড়ি বাড়ির কাছে এসে থামে। ম্যানেজার দেখতে পান, কলাবাগান থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান নিউমার্কেট ও শাহবাগের টহল টিমকে চলে যেতে বলেন।

একইসঙ্গে, শাহবাগ ও নিউমার্কেটের টহল টিমকে সংবাদ দেওয়ার জন্য তার এক ষাটোর্ধ্ব ভাড়াটিয়া লাল মিয়া ও নাইট গার্ড লুৎফরকে কলাবাগান থানার ওসি পুলিশের গাড়িতে তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন, যার সিসিটিভি ফুটেজ তার বাসায় সংরক্ষিত আছে।

ড. ওয়াদুদ আরও জানান, বাসার ভেতরে প্রবেশ করে মান্নান নামের একজন পুলিশ সদস্য তাকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে বলেন, ‘এই মুহূর্তে এক কোটি টাকা দিতে পারলে তাকে থানায় যেতে হবে না, বাড়িতেই রেখে যাওয়া হবে।’

কী মামলা হয়েছে জানতে চাইলে তারা জানায় কোনো মামলা হয়নি, তারা শুধু টাকার জন্য এসেছে। টাকা না দিলে তার বিরুদ্ধে দশটি মামলা দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। দীর্ঘ দেন দরবারের পর তিনি দুই লাখ টাকা পুলিশ সদস্য বেলাল ও মান্নানের হাতে তুলে দেন।

ব্যাংকিং সময়ের মধ্যে বাকি টাকা দেওয়ার শর্তে তিনজন সিভিল পোশাকে থাকা ব্যক্তি তার পাহারায় থেকে যায়, যারা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ড. আব্দুল ওয়াদুদ ২ মে ডিএমপি কমিশনারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

কলাবাগান থানার ওসি ও এসআই প্রত্যাহার, কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ

আপডেট সময় ১২:১৪:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

কলাবাগান থানায় কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহ এক উপ-পরিদর্শককে (এসআই) সাময়িক প্রত্যাহার করা হয়েছে।

প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন ওসি মোক্তারুজ্জামান এবং এসআই বেলাল হোসেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সোমবার (৫ মে) এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রশাসনিক কারণে এই প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট ড. আব্দুল ওয়াদুদ অভিযোগ করেছেন, সন্ত্রাসীদের নিয়ে গভীর রাতে কলাবাগান থানার ওসি তার বাড়িতে চাঁদাবাজি, অর্থ আদায়, ভাঙচুর, লুটপাট এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছেন।

এই অভিযোগের সঠিক তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি ডিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ড. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, গত ২৯ এপ্রিল রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে কলাবাগান থানার এসআই বেলালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য ও ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী তার বাড়িতে জোর করে প্রবেশ করে। তার ম্যানেজার ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশের একটি গাড়ি ঘটনাস্থলে আসে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিমের দুটি গাড়ি বাড়ির কাছে এসে থামে। ম্যানেজার দেখতে পান, কলাবাগান থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান নিউমার্কেট ও শাহবাগের টহল টিমকে চলে যেতে বলেন।

একইসঙ্গে, শাহবাগ ও নিউমার্কেটের টহল টিমকে সংবাদ দেওয়ার জন্য তার এক ষাটোর্ধ্ব ভাড়াটিয়া লাল মিয়া ও নাইট গার্ড লুৎফরকে কলাবাগান থানার ওসি পুলিশের গাড়িতে তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন, যার সিসিটিভি ফুটেজ তার বাসায় সংরক্ষিত আছে।

ড. ওয়াদুদ আরও জানান, বাসার ভেতরে প্রবেশ করে মান্নান নামের একজন পুলিশ সদস্য তাকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে বলেন, ‘এই মুহূর্তে এক কোটি টাকা দিতে পারলে তাকে থানায় যেতে হবে না, বাড়িতেই রেখে যাওয়া হবে।’

কী মামলা হয়েছে জানতে চাইলে তারা জানায় কোনো মামলা হয়নি, তারা শুধু টাকার জন্য এসেছে। টাকা না দিলে তার বিরুদ্ধে দশটি মামলা দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। দীর্ঘ দেন দরবারের পর তিনি দুই লাখ টাকা পুলিশ সদস্য বেলাল ও মান্নানের হাতে তুলে দেন।

ব্যাংকিং সময়ের মধ্যে বাকি টাকা দেওয়ার শর্তে তিনজন সিভিল পোশাকে থাকা ব্যক্তি তার পাহারায় থেকে যায়, যারা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ড. আব্দুল ওয়াদুদ ২ মে ডিএমপি কমিশনারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।