চলতি জুন মাস যেন ডেঙ্গু সংক্রমণের নতুন রেকর্ড গড়ছে। প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে বাড়ছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২৪৯ জন, এবং মারা গেছেন একজন।

এলার্মিং তথ্য হচ্ছে, চলতি বছরের মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রতি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তার আগের মাসের চেয়ে দ্বিগুণ হারে বেড়েছে। আর জুন মাসের প্রথম ১৫ দিনেই আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় গত মাসের মোট আক্রান্তের সমান!

রবিবার পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯৮৮ জন। মার্চ মাসে আক্রান্ত ছিলেন ৩৩৬ জন, এপ্রিলে বেড়ে হয় ৭০১ জন, আর মে মাসে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ১ হাজার ৭৭৩-এ, যা দ্বিগুণেরও বেশি। চলতি জুন মাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৪৩ জন।

গত বছর ডেঙ্গুর বড় প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিল আগস্ট মাস থেকে, কিন্তু এ বছর জুন মাসেই আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।

সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবে রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক হালিমুর রশীদ জানিয়েছেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তাদের করণীয় সীমিত। তিনি বলেন, “আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি, কিন্তু মশার উৎস বন্ধ না হলে রোগী কমানো সম্ভব নয়। মশার প্রজননক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণ সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোর দায়িত্ব।”

দেশের মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের ২৩ শতাংশ ঢাকার দুই সিটিতে, বাকিরা ঢাকার বাইরের। আর মোট আক্রান্তের ৪৫ শতাংশই বরিশাল বিভাগের! এর মধ্যে বরগুনাতেই দেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ রোগী।

কীটতত্ত্ববিদ ও জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, এবারের আবহাওয়া পরিস্থিতি ডেঙ্গুর জন্য অনেকটাই অনুকূল। এপ্রিল মাস উষ্ণতম হলেও, এপ্রিলে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। মে মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৩ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের মতে, ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ৭০ থেকে ১০০ শতাংশ আর্দ্রতা এডিস মশার প্রজননের জন্য খুবই উপযোগী।