ঢাকা ০৫:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

ইরানের সঙ্গে সংঘাতের খবর প্রচারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ইসরায়েল

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ১১:১২:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
  • / ২৫৪ বার পড়া হয়েছে

ইরানের সঙ্গে সংঘাতের খবর প্রচারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ইসরায়েল। চলমান যুদ্ধের খবর কীভাবে প্রকাশ করা হবে বা কোন কোন খবর প্রচার করা যাবে না সে বিষয়ে একটি নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। আল জাজিরার এক বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।

গত বুধবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সেন্সরশিপ বিভাগের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কোবি ম্যান্ডেলব্লিট এক বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমের জন্য নতুন কিছু নীতিমালা ঘোষণা করেন। ইরানের সঙ্গে হামলার বিষয়ে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো কী ধরনের তথ্য প্রচার করতে পারবে আর কোনগুলো প্রচার করতে পারবে না সে সম্পর্কে নতুন নীতিমালায় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলে সংবাদমাধ্যমের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের (সেন্সরশিপ) আইনি ভিত্তি দেশটির জন্মের চেয়েও বহু পুরোনো। এর আগে ১৯৪৫ সালে ফিলিস্তিনে ব্রিটিশ শাসনামলে প্রথম সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এর তিন বছর পর ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর সেসব বিধিনিষেধই ইসরায়েলি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

তবে ইসরায়েলে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপের বিষয়টি কেবল নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে সংবাদ প্রকাশে নিষিদ্ধ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আন্তর্জাতিক সাংবাদিক ফেডারেশনের (আইএফজে) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় অন্তত ১৬৪ সাংবাদিককে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এছাড়া লেবানন, অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং বর্তমানে ইরানেও অনেক সাংবাদিক ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন।

২০২৪ সালের মে থেকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে নিষিদ্ধ করে ইসরায়েলি সরকার। এছাড়া ইসরায়েলি সরকারের কার্যকলাপের সমালোচনা করায় গত বছরের নভেম্বরে ইসরায়েলের উদারপন্থি দৈনিক হারেৎজ পত্রিকার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

নতুন নির্দেশনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার সংবাদ প্রকাশের সময় ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলের প্রধান সামরিক সেন্সরের কার্যালয়।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সেন্সরশিপ বিভাগ সতর্ক করে বলেছে, সংবাদমাধ্যমে এমন কিছু লেখা বা দেখানো যাবে না যা থেকে বোঝা যায় কোথা থেকে হামলা হয়েছে, কীভাবে আকাশ প্রতিরক্ষা কাজ করছে বা হামলায় কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব তথ্য শত্রুর কাজে লাগতে পারে এবং দেশের নিরাপত্তার জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

হামলার জায়গা থেকে ছবি তোলা বা ভিডিও সম্প্রচার করা, বিশেষ করে সামরিক স্থাপনার আশপাশে, ড্রোন বা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা ব্যবহার করে হামলায় বিধ্বস্ত এলাকা দেখানো, সেনা স্থাপনার কাছাকাছি ক্ষতিগ্রস্ত জায়গার নির্দিষ্ট অবস্থান জানানো এবং ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ বা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধের দৃশ্য সম্প্রচার করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, সেন্সরশিপ বিভাগের অনুমোদন ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোনো ভিডিও প্রকাশ করা যাবে না। কারণ এসব ভিডিও শত্রুপক্ষের তৈরি ভুয়া খবরও হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। নতুন এই বিধিনিষেধগুলো তাৎক্ষণিকভাবেই কার্যকর করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইরানের সঙ্গে সংঘাতের খবর প্রচারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ইসরায়েল

আপডেট সময় ১১:১২:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

ইরানের সঙ্গে সংঘাতের খবর প্রচারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ইসরায়েল। চলমান যুদ্ধের খবর কীভাবে প্রকাশ করা হবে বা কোন কোন খবর প্রচার করা যাবে না সে বিষয়ে একটি নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। আল জাজিরার এক বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।

গত বুধবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সেন্সরশিপ বিভাগের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কোবি ম্যান্ডেলব্লিট এক বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমের জন্য নতুন কিছু নীতিমালা ঘোষণা করেন। ইরানের সঙ্গে হামলার বিষয়ে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো কী ধরনের তথ্য প্রচার করতে পারবে আর কোনগুলো প্রচার করতে পারবে না সে সম্পর্কে নতুন নীতিমালায় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলে সংবাদমাধ্যমের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের (সেন্সরশিপ) আইনি ভিত্তি দেশটির জন্মের চেয়েও বহু পুরোনো। এর আগে ১৯৪৫ সালে ফিলিস্তিনে ব্রিটিশ শাসনামলে প্রথম সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এর তিন বছর পর ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর সেসব বিধিনিষেধই ইসরায়েলি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

তবে ইসরায়েলে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপের বিষয়টি কেবল নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে সংবাদ প্রকাশে নিষিদ্ধ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আন্তর্জাতিক সাংবাদিক ফেডারেশনের (আইএফজে) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় অন্তত ১৬৪ সাংবাদিককে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এছাড়া লেবানন, অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং বর্তমানে ইরানেও অনেক সাংবাদিক ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন।

২০২৪ সালের মে থেকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে নিষিদ্ধ করে ইসরায়েলি সরকার। এছাড়া ইসরায়েলি সরকারের কার্যকলাপের সমালোচনা করায় গত বছরের নভেম্বরে ইসরায়েলের উদারপন্থি দৈনিক হারেৎজ পত্রিকার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

নতুন নির্দেশনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার সংবাদ প্রকাশের সময় ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলের প্রধান সামরিক সেন্সরের কার্যালয়।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সেন্সরশিপ বিভাগ সতর্ক করে বলেছে, সংবাদমাধ্যমে এমন কিছু লেখা বা দেখানো যাবে না যা থেকে বোঝা যায় কোথা থেকে হামলা হয়েছে, কীভাবে আকাশ প্রতিরক্ষা কাজ করছে বা হামলায় কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব তথ্য শত্রুর কাজে লাগতে পারে এবং দেশের নিরাপত্তার জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

হামলার জায়গা থেকে ছবি তোলা বা ভিডিও সম্প্রচার করা, বিশেষ করে সামরিক স্থাপনার আশপাশে, ড্রোন বা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা ব্যবহার করে হামলায় বিধ্বস্ত এলাকা দেখানো, সেনা স্থাপনার কাছাকাছি ক্ষতিগ্রস্ত জায়গার নির্দিষ্ট অবস্থান জানানো এবং ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ বা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধের দৃশ্য সম্প্রচার করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, সেন্সরশিপ বিভাগের অনুমোদন ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোনো ভিডিও প্রকাশ করা যাবে না। কারণ এসব ভিডিও শত্রুপক্ষের তৈরি ভুয়া খবরও হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। নতুন এই বিধিনিষেধগুলো তাৎক্ষণিকভাবেই কার্যকর করা হয়েছে।