ঢাকা ০৪:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫

পাকিস্তানের গোলায় ভারতীয় সেনা নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ১২:৩৬:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫
  • / ২৫৩ বার পড়া হয়েছে

ভারতের হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানি সেনারা সীমান্ত–সংলগ্ন এলাকায় বুধবার (৭ মে) অব্যাহত গোলাবর্ষণ করেছে। দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এ ঘটনায় এক ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। নিহত ওই ভারতীয় সেনার নাম দিনেশ কুমার। বুধবার (৭ মে) রাত ১১টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার নিহত হওয়ার খবর জানানো হয়। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সীমান্ত সংঘাতে নিহত ভারতীয় নাগরিকদের সংখ্যা বেড়ে ১৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনই বেসামরিক নাগরিক।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১৬ কোর বা হোয়াইট নাইট কোর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে বলেছে, হোয়াইট নাইট কোরের জিওসি ও সব সদস্য পাঁচ ফিল্ড রেজিমেন্টের ল্যান্স নায়েক দিনেশ কুমারের চূড়ান্ত আত্মত্যাগকে সম্মান জানায়।

তিনি ৭ মে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণের সময় প্রাণ হারিয়েছেন। যারা পুঞ্চ সেক্টরে নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে চালানো হামলার শিকার হয়েছেন, আমরা তাদের পাশে আছি।

পাকিস্তানি সেনারা সীমান্ত–সংলগ্ন এলাকায় বুধবার সারাদিন গোলাবর্ষণ করে। বিশেষ করে পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুঞ্চ এলাকায় ব্যাপক গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। এতে আহত হয়েছেন প্রায় ৪০ জন।

তবে এ গোলাবর্ষণের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হয়েছে বলে ভারতীয় সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পাকিস্তান ও পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভারতীয় হামলার পর থেকেই সীমান্তে ভারী গোলাবর্ষণ শুরু করেছে পাকিস্তান।

সবচেয়ে বেশি গোলা নিক্ষেপ করা হয়েছে পুঞ্চ জেলার কৃষ্ণাঘাটি, শাহপুর ও মানকোট এবং রাজৌরির লাম, মাঞ্জাকোট ও গম্ভীর ব্রাহ্মণা এলাকায়।

পাকিস্তানের তীব্র গোলাবর্ষণে উত্তর কাশ্মীরের বারামুল্লার উরি সেক্টর ও কুপওয়ারার তাংধার সেক্টরে একাধিক গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নিক্ষেপ করা গোলা বারামুল্লা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার ভেতরে গিঙ্গাল গ্রাম পর্যন্ত আঘাত হানে। এতে অন্তত ১১ জন আহত হন, যাদের বেশির ভাগই সালামাবাদ এলাকার বাসিন্দা।

উরির এক বাসিন্দা বলেন, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে গোলাবর্ষণ শুরু হয়। আমরা বাংকারে ঢুকে পড়ি। এর কিছু সময় পর গোলাবর্ষণের তীব্রতা বেড়ে যায়। ২০২১ সালে যুদ্ধবিরতি নবায়নের পর এটাই সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি।

সরকারি সূত্র বলছে, সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা ভূগর্ভস্থ বাংকারে অবস্থান নিয়েছেন। সীমান্ত থেকে দূরবর্তী এলাকার আরও অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কামালকোট, সালামাবাদ, দাচনা ও গিঙ্গাল গ্রামে পাকিস্তানের গোলা আঘাত হানে। এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গোলার আঘাতে অন্তত ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। এ হামলায় এখন পর্যন্ত ৩১ জন নিহত ও ৫৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। এদিকে হামলার পর থেকে সীমান্তে পাকিস্তানি বাহিনীর গোলাবর্ষণে ১৫ বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ৪৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতের সেনাবাহিনী।

গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এখন তা পাল্টাপাল্টি হামলায় রূপ নিয়েছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

পাকিস্তানের গোলায় ভারতীয় সেনা নিহত

আপডেট সময় ১২:৩৬:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫

ভারতের হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানি সেনারা সীমান্ত–সংলগ্ন এলাকায় বুধবার (৭ মে) অব্যাহত গোলাবর্ষণ করেছে। দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এ ঘটনায় এক ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। নিহত ওই ভারতীয় সেনার নাম দিনেশ কুমার। বুধবার (৭ মে) রাত ১১টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার নিহত হওয়ার খবর জানানো হয়। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সীমান্ত সংঘাতে নিহত ভারতীয় নাগরিকদের সংখ্যা বেড়ে ১৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনই বেসামরিক নাগরিক।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১৬ কোর বা হোয়াইট নাইট কোর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে বলেছে, হোয়াইট নাইট কোরের জিওসি ও সব সদস্য পাঁচ ফিল্ড রেজিমেন্টের ল্যান্স নায়েক দিনেশ কুমারের চূড়ান্ত আত্মত্যাগকে সম্মান জানায়।

তিনি ৭ মে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণের সময় প্রাণ হারিয়েছেন। যারা পুঞ্চ সেক্টরে নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে চালানো হামলার শিকার হয়েছেন, আমরা তাদের পাশে আছি।

পাকিস্তানি সেনারা সীমান্ত–সংলগ্ন এলাকায় বুধবার সারাদিন গোলাবর্ষণ করে। বিশেষ করে পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুঞ্চ এলাকায় ব্যাপক গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। এতে আহত হয়েছেন প্রায় ৪০ জন।

তবে এ গোলাবর্ষণের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হয়েছে বলে ভারতীয় সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পাকিস্তান ও পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভারতীয় হামলার পর থেকেই সীমান্তে ভারী গোলাবর্ষণ শুরু করেছে পাকিস্তান।

সবচেয়ে বেশি গোলা নিক্ষেপ করা হয়েছে পুঞ্চ জেলার কৃষ্ণাঘাটি, শাহপুর ও মানকোট এবং রাজৌরির লাম, মাঞ্জাকোট ও গম্ভীর ব্রাহ্মণা এলাকায়।

পাকিস্তানের তীব্র গোলাবর্ষণে উত্তর কাশ্মীরের বারামুল্লার উরি সেক্টর ও কুপওয়ারার তাংধার সেক্টরে একাধিক গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নিক্ষেপ করা গোলা বারামুল্লা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার ভেতরে গিঙ্গাল গ্রাম পর্যন্ত আঘাত হানে। এতে অন্তত ১১ জন আহত হন, যাদের বেশির ভাগই সালামাবাদ এলাকার বাসিন্দা।

উরির এক বাসিন্দা বলেন, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে গোলাবর্ষণ শুরু হয়। আমরা বাংকারে ঢুকে পড়ি। এর কিছু সময় পর গোলাবর্ষণের তীব্রতা বেড়ে যায়। ২০২১ সালে যুদ্ধবিরতি নবায়নের পর এটাই সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি।

সরকারি সূত্র বলছে, সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা ভূগর্ভস্থ বাংকারে অবস্থান নিয়েছেন। সীমান্ত থেকে দূরবর্তী এলাকার আরও অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কামালকোট, সালামাবাদ, দাচনা ও গিঙ্গাল গ্রামে পাকিস্তানের গোলা আঘাত হানে। এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গোলার আঘাতে অন্তত ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। এ হামলায় এখন পর্যন্ত ৩১ জন নিহত ও ৫৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। এদিকে হামলার পর থেকে সীমান্তে পাকিস্তানি বাহিনীর গোলাবর্ষণে ১৫ বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ৪৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতের সেনাবাহিনী।

গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এখন তা পাল্টাপাল্টি হামলায় রূপ নিয়েছে।