মানুষের হাড় দিয়ে তৈরি মদসহ ব্রিটিশ নারী আটক

- আপডেট সময় ০১:৪১:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
- / ২৭২ বার পড়া হয়েছে
সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার কলম্বো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। বিপুল পরিমাণ ‘কুশ’ নামক এক ভয়ঙ্কর মাদকসহ ২১ বছর বয়সী ব্রিটিশ নারী চার্লট মে লি-কে আটক করেছে দেশটির কাস্টমস বিভাগ।
কিন্তু এই মাদকের ভয়াবহতা এখানেই শেষ নয়; ধারণা করা হচ্ছে, এই বিপজ্জনক সিন্থেটিক মাদকটি তৈরি হয়েছে মানুষের হাড় ব্যবহার করে!
শ্রীলঙ্কার কাস্টমস জানিয়েছে, দক্ষিণ লন্ডনের বাসিন্দা এবং সাবেক বিমানসেবিকা চার্লট মে লি-কে চলতি মাসের শুরুতেই বন্দরনায়েকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়।
তার লাগেজে থাকা দুটি বড় স্যুটকেস থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় ৪৬ কেজি ‘কুশ’ মাদক, যা শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে মাদকের সবচেয়ে বড় চালান হিসেবে বিবেচিত। উদ্ধারকৃত এই মাদকের বাজারমূল্য আনুমানিক ১৫ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২১ কোটি টাকারও বেশি!
অবিশ্বাস্য মনে হলেও, ‘কুশ’ নামক এই মাদকটি পশ্চিম আফ্রিকায়, বিশেষ করে সিয়েরা লিওনে তরুণদের মধ্যে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রভাবে ব্যবহারকারীরা রাস্তায় চলতে চলতে হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়েন, মাটিতে লুটিয়ে পড়েন কিংবা চলন্ত গাড়ির নিচে চলে যান।
এর ভয়াবহতা এতটাই যে, এই মাদক তৈরির জন্য মানুষ কবর থেকে কঙ্কাল চুরি করছে! পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গত ২০২৪ সালে সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস মাদা বায়ো দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেন এবং কবরস্থান পাহারার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে বাধ্য হন, যাতে কেউ কঙ্কাল চুরি করে এই মাদক তৈরি করতে না পারে।
চার্লট মে লি অবশ্য দাবি করেছেন, তার অজান্তেই কেউ তার লাগেজে মাদক ঢুকিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেছেন, “আমি জানি কে এটা করেছে”, তবে বিস্তারিত আর কিছু বলতে রাজি হননি।
তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তাকে বর্তমানে রাজধানী কলম্বোর উত্তরে নেগোম্বোর একটি কারাগারে রাখা হয়েছে, যেখানে তাকে কংক্রিটের মেঝেতে ঘুমাতে হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার একজন সিনিয়র কাস্টমস কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ব্যাংকক হয়ে মাদক চোরাচালান উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। প্রোফাইলিংয়ের ভিত্তিতেই চার্লটকে আটক করা হয়।
একই সময়ে ব্যাংকক থেকে যাত্রা করা আরও এক ব্রিটিশ নারী, ১৮ বছর বয়সী বেলা কুলি, জর্জিয়ায় ১২ কেজি গাঁজা ও ২ কেজি হাশিশসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধেও মাদক পাচার মামলায় ২০ বছর বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ঝুঁকি রয়েছে।