ঢাকা ০৯:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

২৫ বছরের বড় শিক্ষিকাকে বিয়ে, সহপাঠীদের দত্তক নিলেন ম্যাক্রন! বাস্তবেই রূপকথার প্রেমকাহিনি

মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন
  • আপডেট সময় ০৩:৩৪:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
  • / ২৭৮ বার পড়া হয়েছে

২৫ বছরের বড় শিক্ষিকাকে বিয়ে, সহপাঠীদের দত্তক নিলেন ম্যাক্রন! বাস্তবেই রূপকথার প্রেমকাহিনি

এক ছাত্র এবং শিক্ষিকার সম্পর্ক যে কোথাও গিয়ে পরিণতি পেতে পারে, তা যেন নতুন করে প্রমাণ করলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। বয়সে ২৫ বছরের বড় শিক্ষিকা ব্রিজেতকে বিয়ে করে তিনি গড়েছেন এমন এক প্রেমকাহিনি, যা হার মানাবে যেকোনো সিনেমা বা রূপকথাকেও। ব্রিজেত তখন ৩৯-এর পরিণত, সংসারী নারী। ছিলেন এক ব্যাঙ্কারের স্ত্রী, তিন সন্তানের মা। ফরাসি ভাষা ও লাতিন পড়াতেন উত্তর ফ্রান্সের আমিয়েন্সের এক স্কুলে। আর সেখানেই তাঁর জীবনে হাজির হন এক ১৫ বছরের কিশোর ছাত্র—ইমানুয়েল ম্যাক্রন। ছাত্র হিসেবে মেধাবী, ভাবনায় পরিণত ইমানুয়েলের চোখে তখন থেকেই একটিই আকাঙ্ক্ষা—দিদিমণিকে একদিন বিয়ে করবেন! প্রথমে হাসি পেলেও, শেষমেশ ছাত্রের জেদের কাছে নতিস্বীকার করেন শিক্ষিকা ব্রিজেত।
প্রথম প্রস্তাব
প্রথম প্রস্তাব আসে কিশোর ম্যাক্রনের মুখ থেকে—তুমি যাই করো আমি তোমাকেই বিয়ে করব। তখনও তারা স্কুলে, ম্যাক্রনের বয়স মাত্র ১৫। তবে এত সহজ ছিল না এই সম্পর্কের পথচলা। ব্রিজেত তখনকার স্বামীকে ডিভোর্স দেন ২০০৬ সালে। ততদিনে তাঁর কন্যা ম্যাক্রনের সহপাঠী। নিজের ছাত্র, কন্যার সহপাঠীকে ভালোবেসে নতুন করে শুরু করেন জীবন। ২০০৭ সালে ব্রিজেত ও ম্যাক্রন বিয়ে করেন। বিয়ের পর ম্যাক্রন দত্তক নেন ব্রিজেতের আগের সংসারের তিন সন্তানকে—যারা বয়সে তাঁর চেয়ে বড়। কেউ আইনজীবী, কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার। এমনকি আজ তাঁদের নাতি-নাতনিও রয়েছে! ২০১৭ সালে ম্যাক্রন যখন ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে কনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন, তখন পাশে ছিলেন তাঁর জীবনের সাহসিনী—ব্রিজেত।

ভাইরাল হাত সরানোর ভিডিও! নতুন করে চর্চায় প্রেমের জুটি
সম্প্রতি ভিয়েতনাম সফরে এক মজার মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি হয়। বিমান থেকে নামার সময় প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন স্ত্রীর জন্য হাত বাড়ালে, আচমকাই সেই হাত সরিয়ে দেন ব্রিজেত! মুহূর্তেই ভাইরাল হয় ভিডিওটি, ঘুরতে থাকে নানা জল্পনা—কি তবে ঝগড়া ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, সফরের আগেই এক সামান্য দাম্পত্য কলহ হয়েছিল। তবে তাতে প্রেমে চিড় ধরেনি। বরং একে-অপরের পাশে থাকার অঙ্গীকার আরও দৃঢ় হয়েছে। এই অসম বয়সের প্রেম নিয়ে একসময় ফরাসি সংবাদমাধ্যমে কম ঠাট্টা হয়নি। তাঁরা ‘প্রৌঢ়া স্ত্রী’ বলে ব্যঙ্গ করেছে বারবার। ব্রিজেত একবার সোজাসাপটা বলেন, আমি যদি পুরুষ হতাম, এত কথা কেউ বলত না। ট্রাম্প-মেলানিয়ার বয়সেও অনেক ফারাক। তবু ট্রাম্প বলেই তা মেনে নেওয়া হয়। আমি নারী বলেই ব্যতিক্রম?

জীবনের পথচলায় অনেক চ্যালেঞ্জ এলেও প্রেম হার মানেনি। সমাজ, কটাক্ষ, বয়সের পার্থক্য—সবকিছুকে জয় করে একজন শিক্ষিকা আর তাঁর ছাত্র আজ বিশ্বের অন্যতম আলোচিত ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দম্পতি। কারণ, ভালোবাসা কখনও বয়স দেখে না, পেশা দেখে না, দেখে শুধু মন আর আত্মার বন্ধন।

নিউজটি শেয়ার করুন

২৫ বছরের বড় শিক্ষিকাকে বিয়ে, সহপাঠীদের দত্তক নিলেন ম্যাক্রন! বাস্তবেই রূপকথার প্রেমকাহিনি

আপডেট সময় ০৩:৩৪:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫

২৫ বছরের বড় শিক্ষিকাকে বিয়ে, সহপাঠীদের দত্তক নিলেন ম্যাক্রন! বাস্তবেই রূপকথার প্রেমকাহিনি

এক ছাত্র এবং শিক্ষিকার সম্পর্ক যে কোথাও গিয়ে পরিণতি পেতে পারে, তা যেন নতুন করে প্রমাণ করলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। বয়সে ২৫ বছরের বড় শিক্ষিকা ব্রিজেতকে বিয়ে করে তিনি গড়েছেন এমন এক প্রেমকাহিনি, যা হার মানাবে যেকোনো সিনেমা বা রূপকথাকেও। ব্রিজেত তখন ৩৯-এর পরিণত, সংসারী নারী। ছিলেন এক ব্যাঙ্কারের স্ত্রী, তিন সন্তানের মা। ফরাসি ভাষা ও লাতিন পড়াতেন উত্তর ফ্রান্সের আমিয়েন্সের এক স্কুলে। আর সেখানেই তাঁর জীবনে হাজির হন এক ১৫ বছরের কিশোর ছাত্র—ইমানুয়েল ম্যাক্রন। ছাত্র হিসেবে মেধাবী, ভাবনায় পরিণত ইমানুয়েলের চোখে তখন থেকেই একটিই আকাঙ্ক্ষা—দিদিমণিকে একদিন বিয়ে করবেন! প্রথমে হাসি পেলেও, শেষমেশ ছাত্রের জেদের কাছে নতিস্বীকার করেন শিক্ষিকা ব্রিজেত।
প্রথম প্রস্তাব
প্রথম প্রস্তাব আসে কিশোর ম্যাক্রনের মুখ থেকে—তুমি যাই করো আমি তোমাকেই বিয়ে করব। তখনও তারা স্কুলে, ম্যাক্রনের বয়স মাত্র ১৫। তবে এত সহজ ছিল না এই সম্পর্কের পথচলা। ব্রিজেত তখনকার স্বামীকে ডিভোর্স দেন ২০০৬ সালে। ততদিনে তাঁর কন্যা ম্যাক্রনের সহপাঠী। নিজের ছাত্র, কন্যার সহপাঠীকে ভালোবেসে নতুন করে শুরু করেন জীবন। ২০০৭ সালে ব্রিজেত ও ম্যাক্রন বিয়ে করেন। বিয়ের পর ম্যাক্রন দত্তক নেন ব্রিজেতের আগের সংসারের তিন সন্তানকে—যারা বয়সে তাঁর চেয়ে বড়। কেউ আইনজীবী, কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার। এমনকি আজ তাঁদের নাতি-নাতনিও রয়েছে! ২০১৭ সালে ম্যাক্রন যখন ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে কনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন, তখন পাশে ছিলেন তাঁর জীবনের সাহসিনী—ব্রিজেত।

ভাইরাল হাত সরানোর ভিডিও! নতুন করে চর্চায় প্রেমের জুটি
সম্প্রতি ভিয়েতনাম সফরে এক মজার মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি হয়। বিমান থেকে নামার সময় প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন স্ত্রীর জন্য হাত বাড়ালে, আচমকাই সেই হাত সরিয়ে দেন ব্রিজেত! মুহূর্তেই ভাইরাল হয় ভিডিওটি, ঘুরতে থাকে নানা জল্পনা—কি তবে ঝগড়া ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, সফরের আগেই এক সামান্য দাম্পত্য কলহ হয়েছিল। তবে তাতে প্রেমে চিড় ধরেনি। বরং একে-অপরের পাশে থাকার অঙ্গীকার আরও দৃঢ় হয়েছে। এই অসম বয়সের প্রেম নিয়ে একসময় ফরাসি সংবাদমাধ্যমে কম ঠাট্টা হয়নি। তাঁরা ‘প্রৌঢ়া স্ত্রী’ বলে ব্যঙ্গ করেছে বারবার। ব্রিজেত একবার সোজাসাপটা বলেন, আমি যদি পুরুষ হতাম, এত কথা কেউ বলত না। ট্রাম্প-মেলানিয়ার বয়সেও অনেক ফারাক। তবু ট্রাম্প বলেই তা মেনে নেওয়া হয়। আমি নারী বলেই ব্যতিক্রম?

জীবনের পথচলায় অনেক চ্যালেঞ্জ এলেও প্রেম হার মানেনি। সমাজ, কটাক্ষ, বয়সের পার্থক্য—সবকিছুকে জয় করে একজন শিক্ষিকা আর তাঁর ছাত্র আজ বিশ্বের অন্যতম আলোচিত ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দম্পতি। কারণ, ভালোবাসা কখনও বয়স দেখে না, পেশা দেখে না, দেখে শুধু মন আর আত্মার বন্ধন।