'অপারেশন রাইজিং লায়ন'
ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত!

- আপডেট সময় ১২:০৬:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫
- / ২৫৩ বার পড়া হয়েছে
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে এক গোপন অভিযান চালিয়েছে বলে জানা গেছে, যার উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি প্রতিহত করা।
আর এই অভিযানে ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহে আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।
বিবিসির বরাত দিয়ে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সূত্রগুলো যাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে, তাদের তালিকা রীতিমতো উদ্বেগজনক। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ বাঘেরি, যিনি ইরানের সামরিক কাঠামোর শীর্ষ পদে ছিলেন। এছাড়াও মারা গেছেন ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস-এর প্রধান হোসেইন সালামি, যিনি ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ।
শুধুমাত্র সামরিক কর্মকর্তারাই নন, এই অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক বিজ্ঞানীরাও প্রাণ হারিয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন খাতাম আল-আনবিয়া সেন্ট্রাল হেডকোয়ার্টারের কমান্ডার গোলাম আলী রাশিদ।
আর সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার সাবেক প্রধান ফেরেইদুন আব্বাসি এবং আরেক পারমাণবিক বিজ্ঞানী মোহাম্মদ মাহদি তেহরানচিও নিহত হয়েছেন, যিনি ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। এই বিজ্ঞানীদের মৃত্যু ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে বড় ধরনের ধাক্কা দেবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
শুধু নিহতের খবরই নয়, আল জাজিরা ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, গত কয়েক ঘণ্টায় এই হামলা অন্তত দুটি ধাপে চালানো হয়েছে। মোট ৬টি স্থানে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইরানের রাজধানী তেহরান ও আশপাশের সামরিক স্থাপনাগুলো। তেহরানের দক্ষিণে নাতাঞ্জ শহর, যেখানে ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র অবস্থিত, সেটিও হামলার শিকার হয়েছে।
এছাড়াও হামলার তালিকায় ছিল তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে তাবরিজ শহর, যেখানে একটি পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র ও দুটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। তেহরানের দক্ষিণে ইসফাহান শহর, তেহরানের দক্ষিণ-পশ্চিমে আরাক শহর এবং তেহরানের পশ্চিমে কেরমানশাহ শহর—এই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতেই আঘাত হেনেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই হামলাগুলোর ব্যাপকতা থেকেই বোঝা যায়, এটি একটি অত্যন্ত সুপরিকল্পিত এবং সমন্বিত অভিযান ছিল।
আরও উদ্বেগের খবর হলো, ইরানি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সিনিয়র উপদেষ্টা আলী শামখানি গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। এই ঘটনাগুলো মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। ইরান কি এর পাল্টা জবাব দেবে? দিলে সেই জবাব কেমন হতে পারে? পুরো বিশ্ব এখন এই উত্তেজনার দিকে তাকিয়ে আছে।