কী হবে আরব বেদুইনদের?

- আপডেট সময় ০১:১৪:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫
- / ২৬৬ বার পড়া হয়েছে
নাগরিক সুরক্ষা যখন ভাগ্য নির্ধারণ করে—তখন কিছু মানুষ শুধু জন্মের পরিচয়ে বঞ্চনার শিকার হয়। ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনায় সবার দৃষ্টি যখন শহুরে ধ্বংস আর সামরিক প্রতিক্রিয়ায়, তখন নেগেভ মরুভূমির আরব বেদুইনদের জন্য সময় যেন থমকে গেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে প্রতিদিন খবরের শিরোনামে আসে হামলা, পাল্টা হামলা, ক্ষয়ক্ষতি আর প্রাণহানি। কিন্তু একপাশে থেকে যাচ্ছে এক অসহায় জনগোষ্ঠী—ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে থাকা আরব বেদুইনরা।
রাজধানী তেল আবিব বা হাইফার মতো শহরগুলোতে যখন ‘আয়রন ডোম’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বেষ্টিত, প্রতিটি ভবনে বোমা আশ্রয়কেন্দ্র বাধ্যতামূলক— ঠিক তখন নেগেভ মরুভূমির বেদুইন গ্রামগুলোকে বসতি হিসেবেই স্বীকৃতি দেয় না ইসরায়েল সরকার।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার বেদুইন বাস করেন এমন গ্রামে যেগুলোর কোনো আইনি অস্তিত্বই নেই। ফলে না আছে তাদের আশ্রয়কেন্দ্র, না আছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, এমনকি নেই মৌলিক নাগরিক সুবিধাও।
এক ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করেছে একটি বেদুইন গ্রামে। আহত হয়েছে মাত্র ৭ বছরের এক শিশু, যে পরিবারসহ বসবাস করত টিন-ছাউনি আর প্লাস্টারবোর্ডে বানানো ঘরে।
অন্যদিকে, স্বীকৃত শহরগুলোয় এমন শিশুদের চারপাশে থাকে সাইরেন, শেল্টার ও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এই বৈষম্যমূলক নীতিই বেদুইনদের আজকে মৃত্যুফাঁদে ফেলে দিয়েছে। গবেষণা বলছে, এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে পিটিএসডি ও মানসিক চাপের হার ইসরায়েলি ইহুদিদের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি।
২০২৩ সালের একটি ছবিতে দেখা যায়, উম্ম আল-খিরান নামের এক গ্রামে বেদুইন স্বেচ্ছাসেবকেরা রং করছেন নিজেদের বানানো কংক্রিটের রকেট শেল্টারে। কিন্তু এসব উদ্যোগও আটকে যাচ্ছে সরকারি স্বীকৃতি ও আমলাতান্ত্রিক বাধায়।
সরকারের প্রস্তাব—তাদের পরিকল্পিত শহরে গিয়ে থাকতে হবে। কিন্তু বেদুইনরা জানাচ্ছেন, সেটা হবে তাদের জন্য ঐতিহ্য ও আত্মপরিচয়ের মৃত্যু। নিজেদের ভূমি ছেড়ে শহুরে জীবনে বাধ্য হওয়া, তাদের কাছে উচ্ছেদেরই আরেক নাম।