ঢাকা ১২:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

জুলাই আন্দোলনে সোচ্চার ভূমিকা রেখেও দেশ নিয়ে হতাশ নায়িকা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০৬:১৩:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
  • / ২৫৩ বার পড়া হয়েছে

অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলনে সোচ্চার ভূমিকা রেখেছিলেন। আশা করেছিলেন এই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ বদলাবে, বদলাবে নাগরিকদের মানসিকতাও। কিন্তু সময়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা, সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় এবং একদল মানুষ কর্তৃক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপবাদে হতাশ হয়েছেন এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী।

দীর্ঘ ফেসবুক স্ট্যাটাসে বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যায় শবনম ফারিয়া লেখেন, আমি আর আমার নিজ দেশের কাছে কোনো প্রত্যাশা রাখি না।

ফারিয়া আরও লেখেন, বিশ্বাস করেন, পৃথিবীর সব মানুষ টাকার (ডলারও পড়তে পারেন) কাছে তাদের এথিক্স বিক্রি করে না। সবাই স্রোতের সঙ্গে ভেসে যায় না, অনেকে রিস্ক নেয়, প্রতিবাদ করে। আমি সেসবেরই চেষ্টা করেছিলাম।

স্ট্যাটাসে জুলাইয়ের আন্দোলনের সময়কার একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন ফারিয়া। তিনি লেখেন, জুন মাসে যখন আন্দোলন তুঙ্গে, ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার পর যেসব সেলিব্রিটিদের মেট্রোরেল/বিটিভিতে আগুন দেওয়ার প্রতিবাদ করতে ভিডিও বানাতে বলা হয়, আমি তাদের একজন। তখন সাহস করে সরাসরি না বলতে পারিনি। পরে জানতে পারি সিয়াম না করেছে। তখন আমি সাহস পাই এবং আমিও না বলে দেই।

এই প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে দেন, সে সময় এই ‘না’ বলার ঘটনা প্রচার করার কোনো ইচ্ছা ছিল না তার। তবে পরবর্তীতে যখন সামাজিক মাধ্যমে ‘ডলার খেয়ে ভিডিও বানায়নি’- এই মিথ্যা প্রচার শুরু হয়, তখন তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে বাধ্য হন।

দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে ফারিয়া লেখেন, জাতি হিসাবে আমরা অত্যন্ত বেহায়া এবং নির্লজ্জ। যতো আন্দোলন হোক, সরকার পরিবর্তন হোক, কেউ দুর্নীতি থামাতে পারবে না। যে-ই ক্ষমতা পায়, সেই-ই তার অপব্যবহার করে।

তিনি আরও বলেন, আমি এমন অনেক মানুষকে চিনি যারা আওয়ামী লীগকে মন থেকে ভালোবাসে, কিন্তু জুলাইয়ে প্রতিবাদ করেছিল। সেসময় যদি আপনি মানুষ হন, তাহলে মানুষ হত্যার প্রতিবাদ না করে থাকতে পারেন না, রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক না কেন।

শবনম ফারিয়া এই স্ট্যাটাসের মাধ্যমে ভবিষ্যতে দেশের রাজনীতি নিয়ে কোনো পোস্ট বা মন্তব্য না করার সিদ্ধান্তের কথাও জানান। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে এটিই আমার শেষ স্ট্যাটাস। কারণ আমি বুঝে গেছি এই জাতির কিছুই হবে না।

স্ট্যাটাসের একেবারে শেষে খানিকটা তাচ্ছিল্য ভঙ্গিতে ফারিয়া লিখেছেন, সত্যি সত্যি ডলার পেলে আসলে ভালোই লাগতো। শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে ২৫,৩০০ টাকা দিয়ে ২০০ ডলার পাসপোর্টে এন্ডোর্স করতে খুবই কষ্ট হইছে।

শবনম ফারিয়ার এই খোলামেলা স্ট্যাটাস ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কেউ তার সাহসিকতাকে প্রশংসা করছেন, কেউবা সমালোচনা করছেন তার হতাশাব্যঞ্জক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য।

নিউজটি শেয়ার করুন

জুলাই আন্দোলনে সোচ্চার ভূমিকা রেখেও দেশ নিয়ে হতাশ নায়িকা

আপডেট সময় ০৬:১৩:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলনে সোচ্চার ভূমিকা রেখেছিলেন। আশা করেছিলেন এই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ বদলাবে, বদলাবে নাগরিকদের মানসিকতাও। কিন্তু সময়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা, সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় এবং একদল মানুষ কর্তৃক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপবাদে হতাশ হয়েছেন এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী।

দীর্ঘ ফেসবুক স্ট্যাটাসে বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যায় শবনম ফারিয়া লেখেন, আমি আর আমার নিজ দেশের কাছে কোনো প্রত্যাশা রাখি না।

ফারিয়া আরও লেখেন, বিশ্বাস করেন, পৃথিবীর সব মানুষ টাকার (ডলারও পড়তে পারেন) কাছে তাদের এথিক্স বিক্রি করে না। সবাই স্রোতের সঙ্গে ভেসে যায় না, অনেকে রিস্ক নেয়, প্রতিবাদ করে। আমি সেসবেরই চেষ্টা করেছিলাম।

স্ট্যাটাসে জুলাইয়ের আন্দোলনের সময়কার একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন ফারিয়া। তিনি লেখেন, জুন মাসে যখন আন্দোলন তুঙ্গে, ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার পর যেসব সেলিব্রিটিদের মেট্রোরেল/বিটিভিতে আগুন দেওয়ার প্রতিবাদ করতে ভিডিও বানাতে বলা হয়, আমি তাদের একজন। তখন সাহস করে সরাসরি না বলতে পারিনি। পরে জানতে পারি সিয়াম না করেছে। তখন আমি সাহস পাই এবং আমিও না বলে দেই।

এই প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে দেন, সে সময় এই ‘না’ বলার ঘটনা প্রচার করার কোনো ইচ্ছা ছিল না তার। তবে পরবর্তীতে যখন সামাজিক মাধ্যমে ‘ডলার খেয়ে ভিডিও বানায়নি’- এই মিথ্যা প্রচার শুরু হয়, তখন তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে বাধ্য হন।

দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে ফারিয়া লেখেন, জাতি হিসাবে আমরা অত্যন্ত বেহায়া এবং নির্লজ্জ। যতো আন্দোলন হোক, সরকার পরিবর্তন হোক, কেউ দুর্নীতি থামাতে পারবে না। যে-ই ক্ষমতা পায়, সেই-ই তার অপব্যবহার করে।

তিনি আরও বলেন, আমি এমন অনেক মানুষকে চিনি যারা আওয়ামী লীগকে মন থেকে ভালোবাসে, কিন্তু জুলাইয়ে প্রতিবাদ করেছিল। সেসময় যদি আপনি মানুষ হন, তাহলে মানুষ হত্যার প্রতিবাদ না করে থাকতে পারেন না, রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক না কেন।

শবনম ফারিয়া এই স্ট্যাটাসের মাধ্যমে ভবিষ্যতে দেশের রাজনীতি নিয়ে কোনো পোস্ট বা মন্তব্য না করার সিদ্ধান্তের কথাও জানান। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে এটিই আমার শেষ স্ট্যাটাস। কারণ আমি বুঝে গেছি এই জাতির কিছুই হবে না।

স্ট্যাটাসের একেবারে শেষে খানিকটা তাচ্ছিল্য ভঙ্গিতে ফারিয়া লিখেছেন, সত্যি সত্যি ডলার পেলে আসলে ভালোই লাগতো। শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে ২৫,৩০০ টাকা দিয়ে ২০০ ডলার পাসপোর্টে এন্ডোর্স করতে খুবই কষ্ট হইছে।

শবনম ফারিয়ার এই খোলামেলা স্ট্যাটাস ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কেউ তার সাহসিকতাকে প্রশংসা করছেন, কেউবা সমালোচনা করছেন তার হতাশাব্যঞ্জক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য।