ঢাকা ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

    ‘অভয়ারণ্য’ পাঠাগারের পাঁচ বস্তা বই ফেরত দেওয়া হয়েছে

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০২:৩৮:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
    • / ২৮৩ বার পড়া হয়েছে

    টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে বাঁশহাটি মহল্লার ‘অভয়ারণ্য’ পাঠাগার থেকে পাঁচ শতাধিক বই লুট করা হয়েছিল। ভয়ভীতি দেখিয়ে পাঠাগার বন্ধও করা হয়েছিল। তবে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে। বৈঠকে নাস্তিক্যবাদ প্রচারের বইপুস্তক বা কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত বই পাওয়া যায়নি।

    উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বৈঠক শেষে রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে সব বই-পুস্তক পাঠাগারে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং পাঠাগারের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

    উপজেলা পরিষদ হলরুমে ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন মাহমুদের সভাপতিত্বে টানা দুই ঘণ্টাব্যাপী সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

    এতে উপস্থিত ছিলেন ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম শহিদুল্লাহ, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি খায়রুল মুন্সি, উপজেলা জামায়াতের আমির মিজানুর রহমান, অভয়ারণ্য পাঠাগারের সভাপতি সুপ্তি মিত্র, সম্পাদক সঞ্জয় চন্দ্র ঘোষ, ইসলামী খেলাফত মজলিশের নেতা গোলাম রব্বানী এবং স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।

    বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সোমবার থেকে পাঠাগার যথারীতি খোলা থাকবে। গণমাধ্যমে এসব নিয়ে আর কোনো খবর করা যাবে না। ভুল বোঝাবুঝি থেকেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে সবাই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখবেন।

    স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে অভয়ারণ্য পাঠাগারের সম্পাদক সঞ্জয় চন্দ্র ঘোষ।

    তিনি আরও বলেন, উনারা আমাদের কাছে ভুল স্বীকার করেছেন। আমরাও তাদের সঙ্গে একমত পোষণ করে সবকিছুর সমাধান করেছি। পাঠাগার একটি পবিত্র স্থান। জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ধর্ম চর্চার জন্য সব ধরনের বইয়ের সমাহার থাকবে। উনারা আমাদের লুট হওয়া চার থেকে পাঁচ বস্তা বই ফেরত দিয়েছেন৷

    ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন মাহমুদ লেন, বিষয়টি বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা হয়েছে। উভয়পক্ষই সেখানে ছিল। উভয়পক্ষই ভবিষ্যতে পাশাপাশি থেকে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পরে অভয়ারণ্য পাঠাগারে গিয়ে সবার উপস্থিতিতে বইগুলো কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়।

    বাংলাদেশ ইসলামী খেলাফত মজলিশ ধনবাড়ী উপজেলা শাখার নেতা গোলাম রব্বানী কয়েক দিন আগে ফেসবুক স্ট্যাটাসে ঘোষণা দেন, ধনবাড়ী অভয়ারণ্য পাঠাগার নাস্তিকদের কারখানা। সেখানে নিষিদ্ধ ঘোষিত বই পুস্তক রয়েছে। এ পাঠাগারকে উচ্ছেদ করা হবে। এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

    এরই প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক দল উচ্ছৃঙ্খল যুবক পাঠাগারে প্রবেশ করে পাঠকদের ধমকিয়ে বের করে দেয়। পরে আলমারি থেকে দেশ-বিদেশের প্রতিষ্ঠিত লেখকদের পাঁচ শতাধিক বই বস্তাবন্দি করে নিয়ে যান। পরে এসব বস্তাবন্দি বই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে রেখে চলে যান।

    ট্যাগস :

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ‘অভয়ারণ্য’ পাঠাগারের পাঁচ বস্তা বই ফেরত দেওয়া হয়েছে

    আপডেট সময় ০২:৩৮:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

    টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে বাঁশহাটি মহল্লার ‘অভয়ারণ্য’ পাঠাগার থেকে পাঁচ শতাধিক বই লুট করা হয়েছিল। ভয়ভীতি দেখিয়ে পাঠাগার বন্ধও করা হয়েছিল। তবে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে। বৈঠকে নাস্তিক্যবাদ প্রচারের বইপুস্তক বা কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত বই পাওয়া যায়নি।

    উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বৈঠক শেষে রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে সব বই-পুস্তক পাঠাগারে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং পাঠাগারের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

    উপজেলা পরিষদ হলরুমে ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন মাহমুদের সভাপতিত্বে টানা দুই ঘণ্টাব্যাপী সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

    এতে উপস্থিত ছিলেন ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম শহিদুল্লাহ, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি খায়রুল মুন্সি, উপজেলা জামায়াতের আমির মিজানুর রহমান, অভয়ারণ্য পাঠাগারের সভাপতি সুপ্তি মিত্র, সম্পাদক সঞ্জয় চন্দ্র ঘোষ, ইসলামী খেলাফত মজলিশের নেতা গোলাম রব্বানী এবং স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।

    বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সোমবার থেকে পাঠাগার যথারীতি খোলা থাকবে। গণমাধ্যমে এসব নিয়ে আর কোনো খবর করা যাবে না। ভুল বোঝাবুঝি থেকেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে সবাই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখবেন।

    স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে অভয়ারণ্য পাঠাগারের সম্পাদক সঞ্জয় চন্দ্র ঘোষ।

    তিনি আরও বলেন, উনারা আমাদের কাছে ভুল স্বীকার করেছেন। আমরাও তাদের সঙ্গে একমত পোষণ করে সবকিছুর সমাধান করেছি। পাঠাগার একটি পবিত্র স্থান। জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ধর্ম চর্চার জন্য সব ধরনের বইয়ের সমাহার থাকবে। উনারা আমাদের লুট হওয়া চার থেকে পাঁচ বস্তা বই ফেরত দিয়েছেন৷

    ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন মাহমুদ লেন, বিষয়টি বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা হয়েছে। উভয়পক্ষই সেখানে ছিল। উভয়পক্ষই ভবিষ্যতে পাশাপাশি থেকে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পরে অভয়ারণ্য পাঠাগারে গিয়ে সবার উপস্থিতিতে বইগুলো কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়।

    বাংলাদেশ ইসলামী খেলাফত মজলিশ ধনবাড়ী উপজেলা শাখার নেতা গোলাম রব্বানী কয়েক দিন আগে ফেসবুক স্ট্যাটাসে ঘোষণা দেন, ধনবাড়ী অভয়ারণ্য পাঠাগার নাস্তিকদের কারখানা। সেখানে নিষিদ্ধ ঘোষিত বই পুস্তক রয়েছে। এ পাঠাগারকে উচ্ছেদ করা হবে। এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

    এরই প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক দল উচ্ছৃঙ্খল যুবক পাঠাগারে প্রবেশ করে পাঠকদের ধমকিয়ে বের করে দেয়। পরে আলমারি থেকে দেশ-বিদেশের প্রতিষ্ঠিত লেখকদের পাঁচ শতাধিক বই বস্তাবন্দি করে নিয়ে যান। পরে এসব বস্তাবন্দি বই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে রেখে চলে যান।