টঙ্গীতে মাথাবিহীন ৮ খণ্ড লাশের রহস্য উন্মোচন, মূলহোতাসহ তিনজন গ্রেপ্তার

- আপডেট সময় ০৫:৫৭:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫
- / ২৫৬ বার পড়া হয়েছে
গাজীপুরের টঙ্গীতে ট্রাভেল ব্যাগে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া মাথাবিহীন ৮ খণ্ড লাশের ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এই ঘটনায় চট্টগ্রাম থেকে মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তাররা হলেন– মূলহোতা আপেল মাহমুদ সাদেক (৪২), সাজ্জাদ হোসেন রনি (২৫) এবং আপেলের স্ত্রী শাওন বেগম (৩২)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আপেল হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে র্যাব-১।
র্যাবের তথ্য অনুযায়ী, ভুক্তভোগী অলি মিয়ার সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। অলি, আপেলের স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে কটূক্তি করেছিলেন এবং আপেলের ভাগ্নেকে হত্যার পরিকল্পনা সম্পর্কে জেনে গিয়েছিলেন। এছাড়া, দুই থেকে তিন বছর আগে অলি, আসামি রনিকে লোকজন দিয়ে মারধর করিয়েছিলেন। এসব কারণে আপেল ও রনি পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, গত ৮ আগস্ট সকালে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে কালীগঞ্জগামী আঞ্চলিক মহাসড়কের মাছিমপুর এলাকায় স্টেশন রোডের হাজী বিরিয়ানি হাউজ ও নান্না বিরিয়ানি হাউজের সামনে দুটি ট্রাভেল ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। দুর্গন্ধ বের হলে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ব্যাগ খুলে ভেতরে পলিথিনে মোড়ানো এক যুবকের অর্ধগলিত ও মাথাবিহীন ৮ টুকরো লাশ উদ্ধার করে। নিহতের পরিচয় শনাক্ত করে জানা যায়, তিনি নরসিংদী সদর করিমপুরের মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে অলি মিয়া (৩৫)।
নিহতের স্ত্রী শাহানা আক্তার জানান, ৪ আগস্ট থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত অলির ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। ৮ আগস্ট তিনি স্বামীর মৃত্যুসংবাদ পান এবং টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা করেন। এরপর র্যাব-১, সিপিসি-২ দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তে জানা যায়, হত্যার দিন ৬ আগস্ট ভোরে আপেল ও রনি অলিকে ট্রেনের নিচে চাপা দেওয়ার জন্য রেললাইনে নিয়ে গেলেও ট্রেন না আসায় বাসায় ফেরত আসে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সকালের নাস্তা শেষে আপেল ও রনি দরজা বন্ধ করে অলির হাত-পা বেঁধে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। লাশ প্রথমে টয়লেটে রেখে দেওয়া হয়। পরে বাজার থেকে ছুরি, স্কচটেপ, কালো ব্যাগ এনে লাশ টুকরো করে পলিথিনে ভরে টয়লেটের সানসেটে লুকিয়ে রাখা হয়। শাওন তখন বারান্দায় বসে পাহারা দেন। লাশ ৭ আগস্ট বাসা থেকে সরানো সম্ভব হয়নি ৮ আগস্ট সকালে দুর্গন্ধ ছড়ালে দুই আসামি লাশ ভর্তি ব্যাগ অটোরিকশায় করে নিয়ে গিয়ে টঙ্গীর স্টেশন রোডে ফেলে দেয়। র্যাব-১ ও র্যাব-৭ এর যৌথ অভিযানে ৯ আগস্ট চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আপেলের নামে ঢাকা রেলওয়ে থানায় পূর্বেও মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।