মেহেরপুরে প্রবাসীর মালামাল লুট, ৫ ডাকাত গ্রেপ্তার

- আপডেট সময় ১২:০১:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫
- / ২৮৮ বার পড়া হয়েছে
সিঙ্গাপুর থেকে ফেরা এক প্রবাসীর মালামাল লুটের ঘটনার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাঁচ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, লুণ্ঠিত সব মালামালও উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছিল গত ১১ জুন গভীর রাতে, আনুমানিক রাত ৩টার দিকে। মেহেরপুর সদর উপজেলার কোলা-আশরাফপুর কড়ইতলা সড়কের শান্ত পরিবেশে বাড়ি ফিরছিলেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী মো. ইউসুফ আলী, যার বয়স মাত্র ২০ বছর, এবং তার নানা মো. রেজাউল হক ইজারুল, যার বয়স ৫৭ বছর। তারা একটি অটোরিকশায় করে আসছিলেন। কিন্তু তাদের এই শান্ত পথযাত্রা মুহূর্তেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়।
হঠাৎ করেই ৬-৭ জনের একটি ডাকাত দল তাদের অটোরিকশার পথ আটকায়। হাতে ছিল ধারালো দেশীয় অস্ত্র। অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে ডাকাতরা ইউসুফের কাছ থেকে তার কষ্টার্জিত সব কিছু কেড়ে নেয়।
লুণ্ঠিত মালামালের মধ্যে ছিল সিঙ্গাপুরের ৬৭ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭ হাজার ৫০০ টাকার বেশি, তিনটি মোবাইল ফোন, একটি চার্জার লাইট, বিদেশি চকলেট, সাবান, শ্যাম্পু, বডি স্প্রে, ব্যথানাশক মলম, টুথপেস্ট এবং একটি সিটি গোল্ডের নেকলেস। বিদেশ থেকে আসা একজন প্রবাসীর জন্য এই ধরনের ঘটনা কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়।
এই ঘটনার পর মেহেরপুর সদর থানায় তাৎক্ষণিকভাবে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা রুজু হওয়ার পরই মেহেরপুর পুলিশ নড়েচড়ে বসে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার এবং নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত অভিযান শুরু করা হয়। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই পুলিশ অপরাধীদের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
ঘটনার পরদিন অর্থাৎ ১২ জুন, মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর থানার বিভিন্ন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানে পুলিশ পাঁচজন চিহ্নিত ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—মুজিবনগর উপজেলার যতারপুর গ্রামের বাবু ওরফে বাবুল (৪০), জামিরুল (২৬), বাবুল (৫১), সদর উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের দিপন পাইক (৩৫), এবং নুরপুর গ্রামের মো. রাব্বী (২০)। এই দ্রুত গ্রেপ্তার অভিযান পুলিশের কর্মদক্ষতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত সমস্ত মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি রেডমি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, তিনটি সাবান, দুটি ডাভ শ্যাম্পু, তিন প্যাকেট চকলেট, দুটি বডি স্প্রে, তিনটি ব্যথানাশক মলম, একটি টুথপেস্ট, একটি ফেসওয়াশ, একটি চার্জার লাইট এবং একটি সিটি গোল্ড নেকলেস।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বাবু ওরফে বাবুল নামের ডাকাতের বিরুদ্ধে চোরাচালান, নারী নির্যাতন, বিস্ফোরক আইন, ডাকাতি এবং গুরুতর জখমসহ মোট ৯টি মামলা রয়েছে। দিপন পাইকের বিরুদ্ধে মাদক, দস্যুতা ও চুরির ৩টি মামলা এবং জামিরুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন ও ডাকাতির প্রস্তুতির ২টি মামলা রয়েছে। অর্থাৎ, এরা সবাই চিহ্নিত অপরাধী এবং তাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের অপরাধের ইতিহাস রয়েছে।