১০:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

বই পড়ার মাধ্যমে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষদের সঙ্গে কথা বলা যায়: অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০৫:৪১:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৮৪ বার পড়া হয়েছে

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, শিক্ষা হচ্ছে আমাদের জাতীয় মুক্তির সর্বচ্চ মাধ্যম। বই পড়ার মাধ্যমে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষদের সঙ্গে কথা বলা যায়। বই মানুষকে জীবন অতিক্রম করতে শিখায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে বিকাল চারটার দিকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিদ্দিক জোবায়ের, কবি হাসান হাফিজ, মো. মিজানুর রহমান।

উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মিজ জুবাইদা মান্নান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবসটি সারা বিশ্বের বইপ্রেমীরা বিশেষভাবে উদযাপন করেন। বইপড়া, বই ছাপানো, বইয়ের কপিরাইট সংরক্ষণ করা ইত্যাদি বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে গত ২৩ এপ্রিল ইউনেস্কোর উদ্যোগে এই দিবসটি পালন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বুদ্ধিভিত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ নির্মাণ করতে হলে বই পড়ার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন একটি বই পড়ুয়া সমাজ আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে।

তিনি বাংলাদেশে পাঠক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির বইমেলার প্রর্বতক চিত্তরঞ্জন সাহার অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন এবং আগামী বছরগুলোতে সমগ্র বাংলাদেশে বইপড়া কার্যক্রমে অন্তত ৫০ লক্ষ পাঠক এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি অতিথিবৃন্দ ও ইউনেস্কো ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য শেষ করেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সিনিয়র সচিব ও বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের সেক্রেটারি জেনারেল জনাব সিদ্দিক জোবায়ের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র অনেক বছর-ধরে আমাদের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে বই পড়া কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

সরকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে মাধ্যমিক পর্যায়ে বই পড়া কার্যক্রমে যুক্ত ছিল। আশা করছি, এ কার্যক্রম ব্যাপকভাবে সারাদেশে শিগগিরই শুরু হবে এবং তা চলমান থাকবে জানিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবসের আলোচনায় বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বই পড়া কার্যক্রমের মাধ্যমে সারাদেশে নিরব বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছে।

তিনি আশা করেন, বাংলাদেশ সরকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে বই পড়া কার্যক্রম ব্যাপকভাবে সারাদেশে কাজ করবে। তিনি কপিরাইট বিষয়ে বলেন, আমাদের মধ্যে কপিরাইট বিষয়ে সচেতনতা কম। ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে কপিরাইটের সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। তিনি সাহিত্য-সংস্কৃতির মেলবন্ধনে আন্তর্জাতিক বইমেলা আয়োজনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস, কপিরাইট রেজিস্টার, (যুগ্ম-সচিব) (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জনাব মো. মিজানুর রহমান কপিরাইটের গুরুত্ব নিয়ে বলেন, পৃথিবীর অন্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে সৃজনশীল মানুষের মধ্যে কপিরাইটের নিবন্ধন করার প্রবণতা কম। এ বিষয়ে কপিরাইটের নিবন্ধন করার জন্য সৃজনশীল মানুষদের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মিজ জুবাইদা মান্নান স্বাগত বক্তব্য বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যুগ্ম-পরিচালক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন।

এই দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আলোচনা সভার পাশাপাশি কেন্দ্রের প্রকাশনা বিভাগের সকল বইয়ের উপর সপ্তাহব্যাপী বিশেষ ছাড়ে বই বিক্রয় করছে। এ উপলক্ষ্যে কুমিল্লা, চৌদ্দগ্রাম ও খাগড়াছড়িতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ বইমেলার সুদৃশ্য তিনটি গাড়ির মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ বইমেলা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

বই পড়ার মাধ্যমে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষদের সঙ্গে কথা বলা যায়: অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ

আপডেট সময় ০৫:৪১:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, শিক্ষা হচ্ছে আমাদের জাতীয় মুক্তির সর্বচ্চ মাধ্যম। বই পড়ার মাধ্যমে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষদের সঙ্গে কথা বলা যায়। বই মানুষকে জীবন অতিক্রম করতে শিখায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে বিকাল চারটার দিকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিদ্দিক জোবায়ের, কবি হাসান হাফিজ, মো. মিজানুর রহমান।

উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মিজ জুবাইদা মান্নান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবসটি সারা বিশ্বের বইপ্রেমীরা বিশেষভাবে উদযাপন করেন। বইপড়া, বই ছাপানো, বইয়ের কপিরাইট সংরক্ষণ করা ইত্যাদি বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে গত ২৩ এপ্রিল ইউনেস্কোর উদ্যোগে এই দিবসটি পালন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বুদ্ধিভিত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ নির্মাণ করতে হলে বই পড়ার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন একটি বই পড়ুয়া সমাজ আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে।

তিনি বাংলাদেশে পাঠক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির বইমেলার প্রর্বতক চিত্তরঞ্জন সাহার অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন এবং আগামী বছরগুলোতে সমগ্র বাংলাদেশে বইপড়া কার্যক্রমে অন্তত ৫০ লক্ষ পাঠক এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি অতিথিবৃন্দ ও ইউনেস্কো ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য শেষ করেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সিনিয়র সচিব ও বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের সেক্রেটারি জেনারেল জনাব সিদ্দিক জোবায়ের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র অনেক বছর-ধরে আমাদের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে বই পড়া কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

সরকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে মাধ্যমিক পর্যায়ে বই পড়া কার্যক্রমে যুক্ত ছিল। আশা করছি, এ কার্যক্রম ব্যাপকভাবে সারাদেশে শিগগিরই শুরু হবে এবং তা চলমান থাকবে জানিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবসের আলোচনায় বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বই পড়া কার্যক্রমের মাধ্যমে সারাদেশে নিরব বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছে।

তিনি আশা করেন, বাংলাদেশ সরকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে বই পড়া কার্যক্রম ব্যাপকভাবে সারাদেশে কাজ করবে। তিনি কপিরাইট বিষয়ে বলেন, আমাদের মধ্যে কপিরাইট বিষয়ে সচেতনতা কম। ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে কপিরাইটের সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। তিনি সাহিত্য-সংস্কৃতির মেলবন্ধনে আন্তর্জাতিক বইমেলা আয়োজনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস, কপিরাইট রেজিস্টার, (যুগ্ম-সচিব) (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জনাব মো. মিজানুর রহমান কপিরাইটের গুরুত্ব নিয়ে বলেন, পৃথিবীর অন্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে সৃজনশীল মানুষের মধ্যে কপিরাইটের নিবন্ধন করার প্রবণতা কম। এ বিষয়ে কপিরাইটের নিবন্ধন করার জন্য সৃজনশীল মানুষদের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মিজ জুবাইদা মান্নান স্বাগত বক্তব্য বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যুগ্ম-পরিচালক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন।

এই দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আলোচনা সভার পাশাপাশি কেন্দ্রের প্রকাশনা বিভাগের সকল বইয়ের উপর সপ্তাহব্যাপী বিশেষ ছাড়ে বই বিক্রয় করছে। এ উপলক্ষ্যে কুমিল্লা, চৌদ্দগ্রাম ও খাগড়াছড়িতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ বইমেলার সুদৃশ্য তিনটি গাড়ির মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ বইমেলা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।