০৫:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:৩৯:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
  • / ২৩ বার পড়া হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বড় উত্থানের পর বড় দরপতন, এরপর আবার বড় উত্থান। এতে বিশ্ববাজারে প্রথমবার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম তিন হাজার ৩০০ ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করে সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।

ট্রাম্প প্রতিটি দেশের জন্য পৃথক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেবেন এমন আশঙ্কায় কয়েক দফায় বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বেড়ে মার্চের শেষ দিকে প্রথমবার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ১৫০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে ট্রাম্প শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলে স্বর্ণের দামের বড় পতন হয়।

এরপর চীন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে যুক্তরাষ্ট্রও চীনের ওপর শুল্ক আরও বাড়ায়। দুই দেশের এ শুল্ক যুদ্ধের মধ্যে আবারও হু হু করে বাড়ে স্বর্ণের দাম। এতে গত সপ্তাহে প্রথমবার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ২০০ ডলার স্পর্শ করে। তবে এরপর বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমতে দেখা যায়।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর আরেক দফা শুল্ক বাড়িয়ে ২৪৫ শতাংশ করার ঘোষণা দেওয়ার পর বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম আবার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এ প্রতিবেদন লেখার সময় (বাংলাদেশ সময় বিকেল চারটা) প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৩০৫ ডলার ৩৫ সেন্ট।

এদিকে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় সম্প্রতি দেশের বাজারেও কয়েক দফায় স্বর্ণের দাম বাড়ানো এবং কমানোর ঘটনা ঘটেছে। দেশের বাজারে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণের একদিন পর গত ১৪ এপ্রিল দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমানো হয়।

বাজুসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৪ এপ্রিল থেকে সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৩৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬২ হাজার ১৭৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৯৯১ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৮৫১ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৩২ হাজার ৬৯০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৭৩৪ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৯ হাজার ৫৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে দেশের বাজারে এ দামেই স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে।

এর আগে ১৩ এপ্রিল থেকে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ১৮৭ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬৩ হাজার ২১৪ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ১ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৭৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় দেশের বাজারে আবারও যেকোনো সময় এই ধাতুটির দাম বাড়তে পারে। কারণ দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম নির্ধারণের পর ইতোমধ্যে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১৫০ ডলারের মতো বেড়েছে। এখন নতুন করে দাম বাড়ানো হলে অতীতের সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড ভেঙে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হতে পারে।

বাজুসের এক সদস্য বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের শুল্ক যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। দেশের বাজারে সর্বশেষ দাম নির্ধারণের পর বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্স ১৫০ ডলারের বেশি বেড়েছে। প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৩০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এই দাম বাড়ার প্রবণতা কোথায় গিয়ে থামবে বলা মুশকিল। বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম যে হারে বাড়ছে তাতে দেশের বাজারে দাম বাড়াতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড

আপডেট সময় ০৫:৩৯:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বড় উত্থানের পর বড় দরপতন, এরপর আবার বড় উত্থান। এতে বিশ্ববাজারে প্রথমবার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম তিন হাজার ৩০০ ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করে সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।

ট্রাম্প প্রতিটি দেশের জন্য পৃথক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেবেন এমন আশঙ্কায় কয়েক দফায় বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বেড়ে মার্চের শেষ দিকে প্রথমবার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ১৫০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে ট্রাম্প শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলে স্বর্ণের দামের বড় পতন হয়।

এরপর চীন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে যুক্তরাষ্ট্রও চীনের ওপর শুল্ক আরও বাড়ায়। দুই দেশের এ শুল্ক যুদ্ধের মধ্যে আবারও হু হু করে বাড়ে স্বর্ণের দাম। এতে গত সপ্তাহে প্রথমবার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ২০০ ডলার স্পর্শ করে। তবে এরপর বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমতে দেখা যায়।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর আরেক দফা শুল্ক বাড়িয়ে ২৪৫ শতাংশ করার ঘোষণা দেওয়ার পর বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম আবার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এ প্রতিবেদন লেখার সময় (বাংলাদেশ সময় বিকেল চারটা) প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৩০৫ ডলার ৩৫ সেন্ট।

এদিকে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় সম্প্রতি দেশের বাজারেও কয়েক দফায় স্বর্ণের দাম বাড়ানো এবং কমানোর ঘটনা ঘটেছে। দেশের বাজারে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণের একদিন পর গত ১৪ এপ্রিল দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমানো হয়।

বাজুসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৪ এপ্রিল থেকে সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৩৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬২ হাজার ১৭৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৯৯১ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৮৫১ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৩২ হাজার ৬৯০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৭৩৪ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৯ হাজার ৫৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে দেশের বাজারে এ দামেই স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে।

এর আগে ১৩ এপ্রিল থেকে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ১৮৭ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬৩ হাজার ২১৪ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ১ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৭৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় দেশের বাজারে আবারও যেকোনো সময় এই ধাতুটির দাম বাড়তে পারে। কারণ দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম নির্ধারণের পর ইতোমধ্যে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১৫০ ডলারের মতো বেড়েছে। এখন নতুন করে দাম বাড়ানো হলে অতীতের সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড ভেঙে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হতে পারে।

বাজুসের এক সদস্য বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের শুল্ক যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। দেশের বাজারে সর্বশেষ দাম নির্ধারণের পর বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্স ১৫০ ডলারের বেশি বেড়েছে। প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৩০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এই দাম বাড়ার প্রবণতা কোথায় গিয়ে থামবে বলা মুশকিল। বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম যে হারে বাড়ছে তাতে দেশের বাজারে দাম বাড়াতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।