ভারতে বিমান দুর্ঘটনা
একমাত্র জীবিত রমেশ জানালেন কীভাবে বেঁচে রইলেন

- আপডেট সময় ০২:৫৩:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫
- / ২৬০ বার পড়া হয়েছে
তীব্র ঝাঁকুনি অনুভব করেছিলেন। তার পর তার আসন খুলে বেরিয়ে এসেছিল। সেই কারণেই তিনি বেঁচে গিয়েছেন। মনে করছেন আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনার একমাত্র জীবিত যাত্রী বিশ্বাসকুমার রমেশ।
শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তেমনটাই জানালেন তিনি। কোন দিক থেকে কীভাবে বেরিয়ে এসেছিলেন, বিমান কীভাবে ভেঙে পড়ল, সে কথাও জানিয়েছেন তিনি।
৪০ বছরের ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক রমেশ ২০০৩ সাল থেকে ব্রিটেনে থাকেন। তার স্ত্রী এবং সন্তানেরা সেখানেই রয়েছেন। রমেশ ভারতে এসেছিলেন আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে। তার সঙ্গে বৃহস্পতিবার লন্ডনে ফিরছিলেন তার ভাইও। তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
রমেশ জানিয়েছেন, বিমানের অন্য দিকের আসনে জায়গা পেয়েছিলেন তার ভাই। তার কোনও খোঁজ পাননি এখনও।
হাসপাতাল থেকে রমেশ বৃহস্পতিবারই বলেছেন, বিমান ওড়ার মাত্র ৩০ সেকেন্ড পর একটা প্রচণ্ড শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম। তার পরেই বিমানটি ভেঙে পড়ে। সব কিছু খুব দ্রুত ঘটে গিয়েছিল। তিনি আরও বলেছেন, আমি যখন উঠে দাঁড়াই, আমার চারপাশে শুধু লাশ আর লাশ। খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। উঠেই আমি দৌড়তে শুরু করি। আমার চারপাশে বিমানের অনেক টুকরো দেখতে পেয়েছিলাম। তারপর কেউ আমাকে টেনে ধরে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলল। আমি হাসপাতালে চলে এলাম।
শুক্রবার সকালে রমেশ অহমদাবাদ সিভিল হাসপাতালের ডাক্তারদের জানিয়েছেন, তার আসনটি খুলে বেরিয়ে এসেছিল। সেই কারণে হয়তো তিনি বাঁচতে পেরেছেন। বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রমেশ বলেন, গোটা বিমান ভেঙে পড়ল। হঠাৎ তীব্র ঝাঁকুনিতে আমার সিটটা খুলে এসেছিল। তাই হয়তো আমি বেঁচে গেলাম।
সংবাদমাধ্যমকে রমেশ বলেছেন, আমি যেদিকে পড়েছিলাম, সেখানে হস্টেলের একতলার ফাঁকা জায়গা ছিল কিছুটা। সেখান দিয়ে আমি বেরিয়ে আসার চেষ্টা করি। কিন্তু উল্টোদিকে হস্টেলের দেওয়াল ছিল। সে দিক থেকে হয়তো কেউ বেরোতে পারেনি। আমার বাঁ হাত একটু পুড়ে গিয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার এআই ১৭১ বিমানের ইকোনমি ক্লাসের ১১এ আসনে বসেছিলেন রমেশ। তার আসনটি ছিল আপৎকালীন দরজার কাছেই। কিন্তু কীভাবে বিমান থেকে বাইরে বেরিয়েছেন, বলতে পারেননি রমেশ। আহমেদাবাদের দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। যেখানে বিমানটি ধাক্কা খেয়েছিল, সেটি ডাক্তারদের একটি হোস্টেল। ডাক্তারি পড়ুয়ারা তখন খাবার খাচ্ছিলেন। আচমকা বিমান এসে আছড়ে পড়ে, ঢুকে যায় বিল্ডিংয়ের ভেতর। বসত এলাকায় দুর্ঘটনার ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিমানের বহু দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। তা শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ওই বিমানে ছিলেন ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫২ জন ব্রিটিশ, সাত জন পর্তুগিজ এবং এক জন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন। গুজরাটেতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী এই বিমানেই লন্ডনে যাচ্ছিলেন। তারও মৃত্যু হয়েছে।
সূত্র: আনন্দবাজার