সুদের টাকা আদায়ে গাছে বেঁধে নির্যাতন

- আপডেট সময় ০৩:৫২:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
- / ২৫৩ বার পড়া হয়েছে
সুদের সামান্য টাকার জন্য নুর আমিন (৩৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে শেরপুরের শ্রীবরদীর খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের ভাটিলংগরপাড়া এলাকায়।
নুর আমিন, যিনি ভাটিলংগরপাড়ার নুর ইসলামের ছেলে, তিনি এমন অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নির্যাতনের খবর পেয়ে শ্রীবরদী থানা পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু পুলিশ পৌঁছানোর আগেই স্থানীয় কিছু নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতায় বিষয়টি ‘সমাধান’ হয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই নির্যাতনের নেপথ্যে রয়েছে সুদের কারবার। নুর আমিন ওই গ্রামের জলিল নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে মাসিক ১০ শতাংশ হারে সুদে এক লাখ টাকা নিয়েছিলেন। প্রথম কয়েক মাস নুর আমিন নিয়মিত সুদের টাকা পরিশোধ করলেও, পরে তা অনিয়মিত হয়ে পড়ে।
এরপর তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি এবং কয়েক দফা সালিশ বৈঠকও হয়। একপর্যায়ে টাকা আদায়ের জন্য জলিল রাস্তার ওপর থেকে নুর আমিনের একটি মোটরসাইকেল আটকে রাখেন।
গত এক বছর ধরে মোটরসাইকেলটি জলিলের বাড়িতেই আছে। সম্প্রতি, সুদের টাকার জন্য জলিল আবার নুর আমিনকে চাপ দেন, আর এর জেরেই রবিবার তাকে বাজার থেকে তুলে নিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ।
নুর আমিন জানান, “সুদের টাকার জন্য আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি জলিল নিয়ে গেছে। সে সময় বলেছিল, তার আর কোনো দাবি নাই। কিন্তু, এখন আবার টাকা দাবি করছে।” অন্যদিকে, অভিযুক্ত আব্দুল জলিল মিয়া তার স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, “নুর আলমের কাছে অনেকদিন ধরে টাকা পাই। তাই তাকে বাজার থেকে ধরে এনেছি। তবে,কোনো মারধর করিনি; স্বাভাবিক অবস্থায় বাড়িতে রেখে দিয়েছিলাম। যখন আটকাতে পারছিলাম না, তখন বেঁধে রেখেছিলাম।
এই ঘটনার খবর পেয়ে খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল কবীর রূপা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি বলেন, “খবর পেয়ে আব্দুল জলিলের বাড়িতে গিয়ে দেখি, নুর আমিনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। পরে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে দু’পক্ষকে সম্মত করি।
শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার জাহিদ জানান, “গাছে বেঁধে রাখার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু, ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়নি। তার আগেই স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে বিষয়টি সমঝোতা হয়েছে বলে জেনেছি।