দুর্ধর্ষ এক গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ

- আপডেট সময় ০৪:০২:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
- / ২৫৫ বার পড়া হয়েছে
বিশ্বের অন্যতম দুর্ধর্ষ এক গোয়েন্দা সংস্থা, ইসরায়েলের মোসাদ। সম্প্রতি ইরানের ওপর ইসরায়েলের আগ্রাসী হামলায় এই মোসাদের ভূমিকা আবারও সামনে এসেছে। কিন্তু এই ঘটনার পেছনে লুকিয়ে আছে আরও গভীর এক গল্প – যেটা হলো মুসলিম দেশগুলোর পারস্পরিক বিভেদ আর নীরবতা।
গত ১৩ই জুন শুক্রবার শেষ রাতে ইসরায়েল যখন ইরানে আগ্রাসী হামলা চালায়, তখন ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (IDF) এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল মোসাদের এজেন্টরা।
অবিশ্বাস্য মনে হলেও, তারা বছরের পর বছর ধরে তেহরানের বুকেই গোপন ঘাঁটি গেড়েছে, চোরাই পথে অস্ত্রের মজুদ গড়ে তুলেছে। শুধু তাই নয়, ইরানের প্রশাসন, সামরিক বাহিনী, এমনকি তাদের স্পর্শকাতর পারমাণবিক কর্মসূচির প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে পড়েছে মোসাদের জাল!
ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের কথা শুনলে আপনি চমকে উঠবেন। ২০২৪ সালে তিনি দাবি করেন, ইরানের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভেতরেও মোসাদের কার্যক্রম এতটাই ছড়িয়ে পড়েছে যে, তারা সব তথ্য পাচার করে দিচ্ছিল।
এই পরিস্থিতি ঠেকাতে একটি বিশেষ ইউনিট গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই ইউনিটের প্রধান নিজেই ছিলেন মোসাদের গুপ্তচর। ২০২১ সালে তার পরিচয় ফাঁস হয়।
১৯৩৯ সালে শুরু হওয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, ১৯৪৮ সালে স্বাধীন হয় ইসরায়েল। তৎকালীন আরব-ইসরায়েল সংকটের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল দ্রুতই বুঝতে পারে, টিকে থাকতে হলে তাদের ভিন্ন কৌশল নিতে হবে।
আর সেই ভাবনা থেকেই ১৯৪৯ সালের ১৩ই ডিসেম্বর ইসরায়েলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন-গুরিয়নের পরামর্শে জন্ম হয় মোসাদের। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তাদের কর্মকাণ্ড, ক্রমশ পরিপক্ব হয়ে ওঠে তাদের কৌশল।
চলুন, মোসাদ সম্পর্কে আরও কিছু চমকপ্রদ তথ্য জেনে নেই। এটি ইসরায়েলের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা, যা গুপ্তচরবৃত্তি, গোপন অভিযান এবং সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত। মোসাদের প্রধান সরাসরি এবং কেবল ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কাছে জবাবদিহি করেন। তাদের বার্ষিক বাজেট প্রায় ২.৭৩ বিলিয়ন ডলার, আর কর্মী সংখ্যা প্রায় ৭০০০! যা একে বিশ্বের বৃহত্তম গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর একটিতে পরিণত করেছে।
মোসাদের ইতিহাস হাজারো বিতর্কিত ও সফল অপারেশনে পূর্ণ। যেমন, ১৯৬০ সালে তারা আর্জেন্টিনায় কুখ্যাত নাৎসি নেতা অ্যাডলফ আইখম্যানকে অপহরণ করে ইসরায়েলে নিয়ে এসে বিচার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে।
২০১৮ সালে মোসাদের এজেন্টরা তেহরানের গোপন পারমাণবিক আর্কাইভ থেকে ১ লাখেরও বেশি নথি ও কম্পিউটার ফাইল চুরি করে ইসরায়েলে নিয়ে আসে। এসব নথিতে ইরানের গোপন পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির প্রমাণ পাওয়া যায়।