ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: ক্ষয়ক্ষতি ও সর্বশেষ আপডেট

- আপডেট সময় ০৩:২২:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
- / ২৫৫ বার পড়া হয়েছে
গত কয়েক দিন ধরে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার নতুন ঝড় তুলেছে। এই সংঘাতে শত শত মানুষের প্রাণহানি, ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং পারমাণবিক স্থাপনার ওপর হামলা বিশ্বকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
গত শুক্রবার থেকে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় বড় ধরনের হামলা শুরু করে। ইরানের নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনা, তেহরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শাহরান তেল ডিপোতে হামলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই হামলায় এখন পর্যন্ত ২২৪ জন নিহত হয়েছেন, যার ৯০ শতাংশই বেসামরিক নাগরিক, এর মধ্যে ৫৪ জন নারী ও শিশু।
আহত হয়েছেন ১,৪০০-এর বেশি মানুষ। ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার হোসেইন সালামি, মোহাম্মদ বাঘেরি এবং দুই পারমাণবিক বিজ্ঞানী ফেরেইদুন আব্বাসি ও মোহাম্মদ তেহরানচি নিহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, ইরান ইসরায়েলের তেল আভিভ ও হাইফার ওপর কয়েক দফা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানিয়েছে, এই হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত এবং প্রায় ৬০০ জন আহত হয়েছেন।
হাইফার তেল শোধনাগার ও বাট ইয়ামে আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়েছে। ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম ও ডেভিড’স স্লিং অনেক ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকালেও কিছু ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।
সোমবার ইসরায়েল ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি স্টেশনে হামলা চালায়, যখন সরাসরি সম্প্রচার চলছিল। এই হামলায় স্টুডিও ধ্বংস হয় এবং সাংবাদিক হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে যুদ্ধাপরাধী আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ইরানের জবাব ‘কঠোর ও অকল্পনীয়’ হবে। ইরান ইতোমধ্যে ইসরায়েলের এন১২ ও এন১৪ চ্যানেলের জন্য সতর্কতা জারি করেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই সংঘাত নিয়ে উদ্বিগ্ন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি প্রধান কাজা কালাস সংযমের আহ্বান জানিয়েছেন।
জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে ইসরায়েল-ইরান সংঘাত প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক সমাধান চান, তবে ইরান যদি মার্কিন স্বার্থে হামলা করে তবে কঠোর জবাব দেওয়া হবে। তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলি প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এদিকে বিশ্বের ২১টি মুসলিম দেশ একযোগে ইরানের উপর ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। শুধু নিন্দাই নয়, তারা দ্রুত উত্তেজনা কমানো এবং ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছে। নিন্দা এবং শান্তির আহ্বান জানানো দেশগুলো হলো মিশর, আলজেরিয়া, বাহরাইন, ব্রুনাই, শাদ, কোমোরোস, জিবুতি, গাম্বিয়া, ইরাক, জর্ডান, কুয়েত, লিবিয়া, মৌরিতানিয়া, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, সুদান, সোমালিয়া, তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত।