সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন আজ

- আপডেট সময় ০১:৩৪:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
- / ২ বার পড়া হয়েছে
কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন আজ। সত্যজিৎ রায় আধুনিক বাংলা সংস্কৃতি জগতের একটি বিরল প্রতিভা। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম পথিকৃৎ। যার হাত ধরে বাংলা সিনেমা প্রথমবারের মতো বিশ্ব দরবারে পৌঁছেছিল। নির্মাতার পাশাপাশি লেখক, চিত্রনাট্যকার, সঙ্গীত পরিচালক এবং শিল্প নির্দেশক হিসেবেও তার ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে।
সত্যজিৎ রায় সম্পর্কে অস্কারজয়ী বিখ্যাত জাপানি চলচ্চিত্র নির্মাতা আকিরা কুরোসাওয়া বলেছিলেন, রায়ের চলচ্চিত্র না দেখার বিষয়টি এমন যে, আপনি পৃথিবীতে বসবাস করছেন, অথচ সূর্য বা চাঁদ দেখেনি।
সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন বলে বিবেচনা করা হয় কুরোসাওয়াকে। আর স্বনামধন্য এ নির্মাতাই বিভিন্ন সময় দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, তিনি সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রের একজন ভক্ত।
বাংলা সাহিত্যর জনক ও শিশু সাহিত্যের সেরা লেখকদের একজন ছিলেন উপেন্দ্রকিশোরের ছেলে সুকুমার রায়। সুকুমারেরও খ্যাতি ছিল দক্ষ চিত্রকর ও সমালোচক হিসেবে। তারই সুযোগ্য একমাত্র সন্তান সত্যজিৎ রায়।
সত্যজিৎ রায় প্রেসিডেন্সি কলেজ ও শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা করেন । তবে পড়াশোনার পর সত্যজিৎ গতানুগতিক পেশায় নিজেকে জড়াতে পারেননি।
চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বপ্ন ছিল তার। ১৯৪৯ সালে ফ্রেন্স পরিচালক জঁ রনোয়ার সঙ্গে পরিচয়ের পর সে স্বপ্ন হাজারো ডানা পেতে শুরু করে।
ফরাসী পরিচালক জঁ রনোয়ার ১৯৪৯ সালে তার ‘দি রিভার’ চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের জন্য কলকাতায় আসেন। আর ওই সময়ই সত্যজিতের তার সঙ্গে পরিচয় হয়।
সাক্ষাতে সত্যজিৎ রনোয়ারের সঙ্গে ‘পথের পাঁচালী’র চলচ্চিত্রায়ণ নিয়ে কথা বলেন।
রনোয়ার সিনেমা নির্মাণের পরিকল্পনা শুনে সতজিতকে এগিয়ে যেতে উৎসাহ দেন। তার ছয় বছর পরই ১৯৫৫ সালে সত্যজিৎ নির্মাণ করেন তার প্রথম ছবি ‘পথের পাঁচালী’।
খ্যাতিমান এ নির্মাতা প্রথম ছবিতেই ছক্কা হাঁকান। ১১টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে সিনেমাটি। যার মধ্যে অন্যতম ছিল কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘বেস্ট ডকুমেন্টরি ফিল্ম’ অর্জন।
সাহিত্যকর্মেও অগাধ দক্ষতা ছিল সত্যজিত রায়ের। বাংলা সাহিত্যের রোমাঞ্চকর কিছু গল্প লিখেছেন তিনি। ফেলুদা, প্রফেসর শঙ্কু, তাড়িনি খুড়ো তার অমর চরিত্র।
সত্যজিতের হাত ধরেই বাঙালির অস্কার বিজয়ের সুখ আসে। ৩২টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের পাশাপাশি সত্যজিৎ রায় পেয়েছেন ‘বিবিসির শ্রেষ্ঠ বাঙালি’ (১৩তম) উপাধি। পাশাপাশি, তার সাফল্যের ঝুঁড়িতে আছে পদ্মভূষণ ও ভারতরত্নের মতো সম্মানজনক পুরস্কার।
৭১ বছরে ৩৭ বছরের বর্ণিল সাফল্যে ভরা কর্মজীবনের সমাপ্তি ঘটে। জীবনের অমোঘ সত্য মৃত্যুতে গুণী এ নিমার্তা চলে যান। তবে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মননে আজীবন অক্ষুণ্ণ থাকবেন সত্যজিৎ রায়ের নামটি। ১৯৯২ সালের অস্কার আসরে চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য সত্যজিৎ রায়কে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়।
সত্যজিৎ রায় ১৯২১ সালের ২ মে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন । কলকাতায় জন্ম হলেও তার পৈত্রিক নিবাস কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি উপজেলার মসুয়া গ্রামে।