০৩:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৪ মে ২০২৫

রোহিঙ্গাদের জন্য স্বাধীন রাজ্য চায় জামায়াত, মিয়ানমারের তীব্র প্রতিক্রিয়া!

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ১২:৩৬:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • / ৫ বার পড়া হয়েছে

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য একটি স্বাধীন রাজ্য গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তবে এই প্রস্তাবে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। তাদের স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, এ ধরনের প্রস্তাব মিয়ানমারের সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি আঘাত।

থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর এক বিশেষ প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের পক্ষ থেকে এই সাহসী প্রস্তাবটি পেশ করা হয়। তবে এক্ষেত্রে চীন কোনো সরাসরি মন্তব্য করেনি, যা পরিস্থিতিকে আরও কৌতুহলপূর্ণ করে তুলেছে।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের কাছে এই প্রস্তাবের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রায় ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে মানবেতর জীবনযাপন করছে এবং শুধুমাত্র মানবিক ত্রাণ সহায়তাই এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের সমাধান হতে পারে না।

তাহের আরও জোর দিয়ে বলেন, “এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আমরা আরাকান অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে একটি স্বাধীন আরাকান স্টেট গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি। এই ক্ষেত্রে চীন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, কারণ মিয়ানমারের সাথে তাদের সুদৃঢ় সম্পর্ক বিদ্যমান। তারা আমাদের এই প্রস্তাব তাদের সরকারের কাছে তুলে ধরবে এবং প্রাসঙ্গিক উদ্যোগ গ্রহণের চেষ্টা করবে বলে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।”

তবে মিয়ানমারের জান্তা সরকার এই প্রস্তাবকে সরাসরি তাদের দেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে। তাদের পক্ষ থেকে এক কঠোর বিবৃতি জারি করা হয়েছে।

বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ শরণার্থী হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে মিয়ানমার তার অবস্থান ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছে। উল্লেখ্য, মিয়ানমারের জান্তা সরকার সাধারণত রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবেই চিহ্নিত করে থাকে।

জান্তা সরকারের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, মুসলিম শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে কুনমিংয়ে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর আগে শরণার্থীদের পরিচয় নিশ্চিতকরণ ও নিবন্ধন এবং ফিরে আসা মানুষদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসনের ব্যবস্থা করার নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।

তবে জামায়াতের স্বাধীন রাজ্যের প্রস্তাব প্রসঙ্গে জান্তা সরকার তাদের বিবৃতিতে আরও কঠোর ভাষায় জানিয়েছে, মিয়ানমারের সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ন করে জামায়াতের এই ধরনের প্রস্তাব পুরো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করার এবং রাজনৈতিক ফায়দা লোটার একটি হীন প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

রোহিঙ্গাদের জন্য স্বাধীন রাজ্য চায় জামায়াত, মিয়ানমারের তীব্র প্রতিক্রিয়া!

আপডেট সময় ১২:৩৬:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য একটি স্বাধীন রাজ্য গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তবে এই প্রস্তাবে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। তাদের স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, এ ধরনের প্রস্তাব মিয়ানমারের সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি আঘাত।

থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর এক বিশেষ প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের পক্ষ থেকে এই সাহসী প্রস্তাবটি পেশ করা হয়। তবে এক্ষেত্রে চীন কোনো সরাসরি মন্তব্য করেনি, যা পরিস্থিতিকে আরও কৌতুহলপূর্ণ করে তুলেছে।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের কাছে এই প্রস্তাবের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রায় ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে মানবেতর জীবনযাপন করছে এবং শুধুমাত্র মানবিক ত্রাণ সহায়তাই এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের সমাধান হতে পারে না।

তাহের আরও জোর দিয়ে বলেন, “এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আমরা আরাকান অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে একটি স্বাধীন আরাকান স্টেট গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি। এই ক্ষেত্রে চীন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, কারণ মিয়ানমারের সাথে তাদের সুদৃঢ় সম্পর্ক বিদ্যমান। তারা আমাদের এই প্রস্তাব তাদের সরকারের কাছে তুলে ধরবে এবং প্রাসঙ্গিক উদ্যোগ গ্রহণের চেষ্টা করবে বলে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।”

তবে মিয়ানমারের জান্তা সরকার এই প্রস্তাবকে সরাসরি তাদের দেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে। তাদের পক্ষ থেকে এক কঠোর বিবৃতি জারি করা হয়েছে।

বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ শরণার্থী হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে মিয়ানমার তার অবস্থান ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছে। উল্লেখ্য, মিয়ানমারের জান্তা সরকার সাধারণত রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবেই চিহ্নিত করে থাকে।

জান্তা সরকারের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, মুসলিম শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে কুনমিংয়ে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর আগে শরণার্থীদের পরিচয় নিশ্চিতকরণ ও নিবন্ধন এবং ফিরে আসা মানুষদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসনের ব্যবস্থা করার নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।

তবে জামায়াতের স্বাধীন রাজ্যের প্রস্তাব প্রসঙ্গে জান্তা সরকার তাদের বিবৃতিতে আরও কঠোর ভাষায় জানিয়েছে, মিয়ানমারের সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ন করে জামায়াতের এই ধরনের প্রস্তাব পুরো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করার এবং রাজনৈতিক ফায়দা লোটার একটি হীন প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।