ঢাকা ০৫:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৪ মে ২০২৫

সবুজ বিপ্লব রেলে: ৯৩ কোটি টাকায় পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০৩:২৭:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • / ৮ বার পড়া হয়েছে

সবুজ ভবিষ্যতের পথে এক নতুন পদক্ষেপ! পরিবেশ সুরক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে বাংলাদেশে যাত্রা করতে চলেছে গ্রিন রেলওয়ে। আর এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সরকার হাতে নিয়েছে ৯৩ কোটি ৫১ লাখ টাকার এক বিশাল প্রকল্প।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ রেলওয়ে বাস্তবায়ন করবে ‘গ্রিন রেলওয়ে পরিবহন প্রস্তুতিমূলক কারিগরি সহায়তা’ শীর্ষক এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি।

২০২৭ সালের মার্চের মধ্যেই এর কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশে একটি পরিবেশবান্ধব রেল পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া।

সম্প্রতি একনেক সভায় এই মেগা-প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মোট ব্যয়ের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ২৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা যোগান দেবে। আর বাকি ৬৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা আসবে বিশ্বব্যাংকের আইডিএ থেকে, যা প্রকল্প ঋণ হিসেবে নেওয়া হবে।

এই গ্রিন রেলওয়ের আওতায় থাকবে ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডোরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ। কমলাপুরের ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন, ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন, ফৌজদারহাট থেকে চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড (সিজিপিওয়াই), সিজিপিওয়াই থেকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গার বে টার্মিনাল এবং চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।

বিশ্বব্যাংকের দেওয়া অর্থ মূলত ব্যয় করা হবে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষায়। পাশাপাশি, কমলাপুর স্টেশনে একটি মাল্টিমডাল পরিবহন হাব তৈরির জন্য স্টেশন বিল্ডিং ইয়ার্ড পুনর্নির্মাণ এবং বিদ্যমান কার্যকরী ও রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধা স্থানান্তরের সম্ভাব্যতাও খতিয়ে দেখা হবে।

এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য হলো ফৌজদারহাট থেকে চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড ও বে টার্মিনাল পর্যন্ত একটি উন্নত রেল সংযোগ স্থাপন করা। এছাড়াও, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে উন্নত রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা করাও এই প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিশদ পর্যালোচনার পর কিছু শর্তসাপেক্ষে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকও প্রাথমিক পর্যায়ে প্রকল্প প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য ৬০ লাখ ডলার অগ্রিম দিতে রাজি হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় কমলাপুর ও ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে নির্মিত হবে অত্যাধুনিক ‘মাল্টিমডাল ট্রান্সপোর্ট হাব’। এর ফলে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহন আরও সহজ ও সমন্বিত হবে।

গ্রিন রেল পরিবহন ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে চালু হলে দেশে কার্বন নির্গমনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে, যা পরিবেশ দূষণ কমাতে এক বিশাল ভূমিকা রাখবে।

পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই উন্নত রেল পরিবহন ব্যবস্থা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও সহজ করবে, পরিবহন খরচ কমাবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটাবে। এর ফলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে।

এর আগে বিশ্বব্যাংক তাদের এক বিবৃতিতে এই প্রকল্পের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে এবং মূল বিনিয়োগ প্রকল্পের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

সবুজ বিপ্লব রেলে: ৯৩ কোটি টাকায় পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা

আপডেট সময় ০৩:২৭:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

সবুজ ভবিষ্যতের পথে এক নতুন পদক্ষেপ! পরিবেশ সুরক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে বাংলাদেশে যাত্রা করতে চলেছে গ্রিন রেলওয়ে। আর এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সরকার হাতে নিয়েছে ৯৩ কোটি ৫১ লাখ টাকার এক বিশাল প্রকল্প।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ রেলওয়ে বাস্তবায়ন করবে ‘গ্রিন রেলওয়ে পরিবহন প্রস্তুতিমূলক কারিগরি সহায়তা’ শীর্ষক এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি।

২০২৭ সালের মার্চের মধ্যেই এর কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশে একটি পরিবেশবান্ধব রেল পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া।

সম্প্রতি একনেক সভায় এই মেগা-প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মোট ব্যয়ের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ২৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা যোগান দেবে। আর বাকি ৬৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা আসবে বিশ্বব্যাংকের আইডিএ থেকে, যা প্রকল্প ঋণ হিসেবে নেওয়া হবে।

এই গ্রিন রেলওয়ের আওতায় থাকবে ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডোরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ। কমলাপুরের ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন, ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন, ফৌজদারহাট থেকে চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড (সিজিপিওয়াই), সিজিপিওয়াই থেকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গার বে টার্মিনাল এবং চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।

বিশ্বব্যাংকের দেওয়া অর্থ মূলত ব্যয় করা হবে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষায়। পাশাপাশি, কমলাপুর স্টেশনে একটি মাল্টিমডাল পরিবহন হাব তৈরির জন্য স্টেশন বিল্ডিং ইয়ার্ড পুনর্নির্মাণ এবং বিদ্যমান কার্যকরী ও রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধা স্থানান্তরের সম্ভাব্যতাও খতিয়ে দেখা হবে।

এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য হলো ফৌজদারহাট থেকে চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড ও বে টার্মিনাল পর্যন্ত একটি উন্নত রেল সংযোগ স্থাপন করা। এছাড়াও, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে উন্নত রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা করাও এই প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিশদ পর্যালোচনার পর কিছু শর্তসাপেক্ষে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকও প্রাথমিক পর্যায়ে প্রকল্প প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য ৬০ লাখ ডলার অগ্রিম দিতে রাজি হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় কমলাপুর ও ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে নির্মিত হবে অত্যাধুনিক ‘মাল্টিমডাল ট্রান্সপোর্ট হাব’। এর ফলে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহন আরও সহজ ও সমন্বিত হবে।

গ্রিন রেল পরিবহন ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে চালু হলে দেশে কার্বন নির্গমনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে, যা পরিবেশ দূষণ কমাতে এক বিশাল ভূমিকা রাখবে।

পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই উন্নত রেল পরিবহন ব্যবস্থা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও সহজ করবে, পরিবহন খরচ কমাবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটাবে। এর ফলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে।

এর আগে বিশ্বব্যাংক তাদের এক বিবৃতিতে এই প্রকল্পের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে এবং মূল বিনিয়োগ প্রকল্পের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।