বিদেশে কর্মসংস্থানের আশায় পাড়ি জমানো আমাদের বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য এই খবরটি সত্যিই এক আশার আলো। মালয়েশিয়ায় কাজ না পেয়ে প্রায় দেড় বছর ধরে মানবেতর জীবনযাপন করা ৭৪ জন বাংলাদেশি শ্রমিক অবশেষে পেলেন তাদের বকেয়া মজুরি এবং ক্ষতিপূরণ!

মালয়েশিয়ার শ্রম অধিদপ্তরের এক যুগান্তকারী নির্দেশে নিয়োগকর্তার কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা (১.৫৪ মিলিয়ন রিঙ্গিত) পাচ্ছেন তারা।

ফ্রিমালয়েশিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই শ্রমিকদের প্রত্যেককে মালয়েশিয়ায় কাজের জন্য ২৫ হাজার রিঙ্গিত পর্যন্ত দিতে হয়েছিল।

কিন্তু দুঃখজনকভাবে, মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর তাদের কোনো কাজ বা মজুরি দেওয়া হয়নি। উল্টো তাদের কুয়ালালামপুরের পুডু এলাকার একটি জনাকীর্ণ হোস্টেলে রাখা হয়েছিল, যেখানে তারা চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছিলেন।

কিন্তু এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে তারা চুপ করে থাকেননি। অভিবাসী অধিকার গোষ্ঠী তেনাগানিতার মাধ্যমে তারা অভিযোগ দায়ের করেন। কুয়ালালামপুরের শ্রম অফিস মেরান্তি বিনামাস এসডিএন বিএইচডি নামের নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে এই ৭৪ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে তাদের প্রাপ্য অর্থ পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে।

তেনাগানিতার কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ ইসমাইল এই ঘটনাকে অভিবাসীদের অধিকার আদায়ে একটি বড় জয় বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “এটি বিদেশি কর্মীদের অধিকার লঙ্ঘনের জন্য নিয়োগকর্তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করে।”

তার বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “এটি একটি দীর্ঘ পথ ছিল, কিন্তু অবশেষে আমরা শ্রম অফিস থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত এবং আদেশ পেয়েছি। মেরান্তি বিনামাসকে বকেয়া অর্থ পরিশোধের নির্দেশ দিয়ে শ্রম বিভাগ স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে, নিয়োগকর্তারা দায়মুক্তি ছাড়াই শ্রমিকদের শোষণ করতে পারবেন না।”

এই একই ধরনের আরও একটি মামলা বর্তমানে মালয়েশিয়ার শাহ আলম হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। যেখানে ৩৩ জন শ্রমিক তাদের ১.৭১ মিলিয়ন রিঙ্গিত ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন।

এর মধ্যে রয়েছে মালয়েশিয়ায় আসার জন্য প্রত্যেকের দেওয়া ২৫ হাজার রিঙ্গিত এবং ১৮ মাসের বকেয়া মজুরি। এই মামলায় মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল, অভিবাসন মহাপরিচালক এবং সে দেশের সরকারকেও বিবাদী করা হয়েছে। গত মার্চ মাসে দায়ের করা এই মামলা এখনো চলমান রয়েছে।