০২:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

বৈষম্য বিরোধিতার ঝান্ডাবাহীদের নিবন্ধন বিলম্ব, ইসির দিকে তাকিয়ে এনসিপি

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:৩৫:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১৬ বার পড়া হয়েছে

নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বেঁধে দেওয়া ২০ এপ্রিলের সময়সীমা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষে পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। দলটির শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে আরও সময় লাগবে।

এই কারণে এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল শীঘ্রই ইসির কাছে নিবন্ধনের আবেদন গ্রহণের সময়সীমা পেছানোর অনুরোধ জানাবে।

জুলাই মাসের গণ–অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত এই নতুন দলটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় স্থাপন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক দলীয় অফিস তৈরি, দলীয় কমিটি ও গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করা সহ নিবন্ধনের শর্ত পূরণের জন্য আগামী দুই মাসের মধ্যে তাদের যাবতীয় কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে।

ইসি গত ১০ মার্চ নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে এবং আবেদনের শেষ তারিখ ২০ এপ্রিল নির্ধারণ করে।

তবে, ইসির এই গণবিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে। গত ১৮ মার্চ আদালত ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে রুলসহ আদেশ দেন। রিট আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, হাইকোর্ট গণবিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন, তবে এই স্থগিতাদেশ শুধুমাত্র রিট আবেদনকারীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করা এনসিপির ইসিতে নিবন্ধনের জন্য বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কমিটি ও কেন্দ্রীয় কার্যালয়, কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় জেলা অফিস এবং অন্যূন ১০০টি উপজেলা বা মেট্রোপলিটন থানায় অফিস (যেখানে প্রত্যেকটিতে ন্যূনতম ২০০ জন ভোটার সদস্য হিসেবে তালিকাভুক্ত থাকতে হবে)।

এছাড়াও দলের গঠনতন্ত্রে কিছু নির্দিষ্ট বিষয় উল্লেখ থাকতে হবে। তবে এনসিপির নেতারা মনে করছেন, ২০ এপ্রিলের মধ্যে এসব শর্ত পূরণ করা তাদের পক্ষে কঠিন।

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন মনে করেন, তাদের দলকে অসুবিধায় ফেলার জন্যই ইসি ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করেছে। তিনি জানান, দলের ফোরামে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে এনসিপির পরবর্তী পদক্ষেপ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

দলের আরেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব জানিয়েছেন, নিবন্ধনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত কাজের জন্য একটি টিম গঠন করা হয়েছে এবং এই টিম শীঘ্রই ইসির সঙ্গে আলোচনা করবে।

এনসিপির একজন শীর্ষ নেতা গতকাল মঙ্গলবার জানান, নিবন্ধনের আবেদনের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য তাদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসির কাছে আবেদন করা হবে। দলটি আগামী দুই মাসের মধ্যে তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

এদিকে, এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কার্যালয় স্থাপন এবং দলীয় কমিটি ও গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করার জন্য আগামী দুই মাসের মধ্যে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে। দলীয় কমিটি গঠনের জন্য শীঘ্রই বিভাগীয় সমন্বয়ক টিম গঠন করা হবে।

উপজেলা পর্যায়ে কমিটি মোটামুটি প্রস্তুত থাকলেও জেলা কমিটিগুলোকে আরও গোছানোর কাজ চলছে। এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির আদলেই জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলো গঠিত হবে, যেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বিভিন্ন পেশার মানুষের সমন্বয়ে কমিটি তৈরি করা হবে।

এছাড়াও, চলতি মাসেই এনসিপির যুব শাখা এবং ঈদের আগে ২৩ মার্চ শ্রমিক শাখার সমন্বয়ক কমিটি আত্মপ্রকাশ করেছে। নারী শাখা সহ অন্যান্য পেশাজীবী শাখা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়েও একটি ফোরাম গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

বৈষম্য বিরোধিতার ঝান্ডাবাহীদের নিবন্ধন বিলম্ব, ইসির দিকে তাকিয়ে এনসিপি

আপডেট সময় ০২:৩৫:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বেঁধে দেওয়া ২০ এপ্রিলের সময়সীমা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষে পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। দলটির শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে আরও সময় লাগবে।

এই কারণে এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল শীঘ্রই ইসির কাছে নিবন্ধনের আবেদন গ্রহণের সময়সীমা পেছানোর অনুরোধ জানাবে।

জুলাই মাসের গণ–অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত এই নতুন দলটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় স্থাপন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক দলীয় অফিস তৈরি, দলীয় কমিটি ও গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করা সহ নিবন্ধনের শর্ত পূরণের জন্য আগামী দুই মাসের মধ্যে তাদের যাবতীয় কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে।

ইসি গত ১০ মার্চ নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে এবং আবেদনের শেষ তারিখ ২০ এপ্রিল নির্ধারণ করে।

তবে, ইসির এই গণবিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে। গত ১৮ মার্চ আদালত ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে রুলসহ আদেশ দেন। রিট আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, হাইকোর্ট গণবিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন, তবে এই স্থগিতাদেশ শুধুমাত্র রিট আবেদনকারীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করা এনসিপির ইসিতে নিবন্ধনের জন্য বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কমিটি ও কেন্দ্রীয় কার্যালয়, কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় জেলা অফিস এবং অন্যূন ১০০টি উপজেলা বা মেট্রোপলিটন থানায় অফিস (যেখানে প্রত্যেকটিতে ন্যূনতম ২০০ জন ভোটার সদস্য হিসেবে তালিকাভুক্ত থাকতে হবে)।

এছাড়াও দলের গঠনতন্ত্রে কিছু নির্দিষ্ট বিষয় উল্লেখ থাকতে হবে। তবে এনসিপির নেতারা মনে করছেন, ২০ এপ্রিলের মধ্যে এসব শর্ত পূরণ করা তাদের পক্ষে কঠিন।

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন মনে করেন, তাদের দলকে অসুবিধায় ফেলার জন্যই ইসি ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করেছে। তিনি জানান, দলের ফোরামে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে এনসিপির পরবর্তী পদক্ষেপ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

দলের আরেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব জানিয়েছেন, নিবন্ধনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত কাজের জন্য একটি টিম গঠন করা হয়েছে এবং এই টিম শীঘ্রই ইসির সঙ্গে আলোচনা করবে।

এনসিপির একজন শীর্ষ নেতা গতকাল মঙ্গলবার জানান, নিবন্ধনের আবেদনের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য তাদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসির কাছে আবেদন করা হবে। দলটি আগামী দুই মাসের মধ্যে তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

এদিকে, এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কার্যালয় স্থাপন এবং দলীয় কমিটি ও গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করার জন্য আগামী দুই মাসের মধ্যে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে। দলীয় কমিটি গঠনের জন্য শীঘ্রই বিভাগীয় সমন্বয়ক টিম গঠন করা হবে।

উপজেলা পর্যায়ে কমিটি মোটামুটি প্রস্তুত থাকলেও জেলা কমিটিগুলোকে আরও গোছানোর কাজ চলছে। এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির আদলেই জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলো গঠিত হবে, যেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বিভিন্ন পেশার মানুষের সমন্বয়ে কমিটি তৈরি করা হবে।

এছাড়াও, চলতি মাসেই এনসিপির যুব শাখা এবং ঈদের আগে ২৩ মার্চ শ্রমিক শাখার সমন্বয়ক কমিটি আত্মপ্রকাশ করেছে। নারী শাখা সহ অন্যান্য পেশাজীবী শাখা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়েও একটি ফোরাম গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।