০১:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

ছাত্রীদের ঘরে গোপন ক্যামেরা, শিক্ষকের রুমে মনিটরিং: মাদ্রাসায় পুলিশের অভিযান

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:০৫:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • / ২৬ বার পড়া হয়েছে

যশোরের শার্শা উপজেলার একটি কওমি মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ছাত্রীদের আবাসিক কক্ষে লাগানো সিসি ক্যামেরা এবং শিক্ষকের রুমে রাখা মনিটর জব্দ করেছে। অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে গত বুধবার বিকেলে পুলিশ এ অভিযান পরিচালনা করে।

মাদ্রাসার পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় শিক্ষকদের থাকার জায়গা, আর উপরের চার তলায় মেয়েদের আবাসিক ও পড়ার কক্ষ। পুলিশের অভিযানে উঠে আসে, মেয়েদের প্রতিটি শোবার কক্ষে নাইট ভিশন ক্যামেরা লাগানো ছিল, যেগুলোর সরাসরি ফুটেজ শিক্ষকের রুমে মনিটর করা হচ্ছিল। নারী পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে এসব ক্যামেরা ও মনিটর জব্দ করা হয়।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান বলেন, “এখানে মেয়েদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। শোবার ঘরে ক্যামেরা লাগানো সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অগ্রহণযোগ্য। আমরা এক মাসের ফুটেজ রেকর্ড পেয়েছি, যা বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ ঘটনায় মাদ্রাসার মালিক ও প্রধান শিক্ষক আবু তাহের (৪৫) কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি দাবি করেন, নিরাপত্তার জন্যই ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে এবং তা নিয়ন্ত্রণ করেন নারী প্রধান শিক্ষক। তবে পুলিশ তার দাবিকে যুক্তিসঙ্গত মনে করেনি।

অভিযানের সময় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের সঠিক সংখ্যা দিতে ব্যর্থ হয়। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে প্রায় ৪০ থেকে ১৫০ জন মেয়ে থাকতে পারে। মাদ্রাসা থেকে ১৬টি সিসি ক্যামেরা ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। আবু তাহেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শর্তসাপেক্ষে ছেড়ে দেওয়া হয়।

স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের যৌথ অভিযানে এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিভাবকরা মাদ্রাসার অস্বচ্ছ কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং কঠোর ব্যবস্থা দাবি করেছেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

ছাত্রীদের ঘরে গোপন ক্যামেরা, শিক্ষকের রুমে মনিটরিং: মাদ্রাসায় পুলিশের অভিযান

আপডেট সময় ০২:০৫:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫

যশোরের শার্শা উপজেলার একটি কওমি মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ছাত্রীদের আবাসিক কক্ষে লাগানো সিসি ক্যামেরা এবং শিক্ষকের রুমে রাখা মনিটর জব্দ করেছে। অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে গত বুধবার বিকেলে পুলিশ এ অভিযান পরিচালনা করে।

মাদ্রাসার পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় শিক্ষকদের থাকার জায়গা, আর উপরের চার তলায় মেয়েদের আবাসিক ও পড়ার কক্ষ। পুলিশের অভিযানে উঠে আসে, মেয়েদের প্রতিটি শোবার কক্ষে নাইট ভিশন ক্যামেরা লাগানো ছিল, যেগুলোর সরাসরি ফুটেজ শিক্ষকের রুমে মনিটর করা হচ্ছিল। নারী পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে এসব ক্যামেরা ও মনিটর জব্দ করা হয়।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান বলেন, “এখানে মেয়েদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। শোবার ঘরে ক্যামেরা লাগানো সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অগ্রহণযোগ্য। আমরা এক মাসের ফুটেজ রেকর্ড পেয়েছি, যা বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ ঘটনায় মাদ্রাসার মালিক ও প্রধান শিক্ষক আবু তাহের (৪৫) কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি দাবি করেন, নিরাপত্তার জন্যই ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে এবং তা নিয়ন্ত্রণ করেন নারী প্রধান শিক্ষক। তবে পুলিশ তার দাবিকে যুক্তিসঙ্গত মনে করেনি।

অভিযানের সময় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের সঠিক সংখ্যা দিতে ব্যর্থ হয়। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে প্রায় ৪০ থেকে ১৫০ জন মেয়ে থাকতে পারে। মাদ্রাসা থেকে ১৬টি সিসি ক্যামেরা ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। আবু তাহেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শর্তসাপেক্ষে ছেড়ে দেওয়া হয়।

স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের যৌথ অভিযানে এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিভাবকরা মাদ্রাসার অস্বচ্ছ কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং কঠোর ব্যবস্থা দাবি করেছেন।