১,২০০ মাইল পথ একা, চালকবিহীন ট্রাকের ঐতিহাসিক যাত্রা!

- আপডেট সময় ০৫:৪৭:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
- / ৫ বার পড়া হয়েছে
পরিবহন জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। যুক্তরাষ্ট্রে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো চালকবিহীন ট্রাকের বাণিজ্যিক দূরপাল্লার যাত্রা। ডালাস ও হিউস্টনের মধ্যে নিয়মিত পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে এই নতুন যুগের সূচনা করলো স্বচালিত প্রযুক্তি সরবরাহকারী মার্কিন প্রতিষ্ঠান অরোরা।
বৃহস্পতিবার, অরোরা ঘোষণা করেছে যে তারা টেক্সাসে তাদের প্রথম বাণিজ্যিক পরিষেবা চালু করেছে। এই পরিষেবার অধীনে, উবার ফ্রেইট এবং হার্শবাক মোটর লাইনসের মতো খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের সময় ও তাপ সংবেদনশীল পণ্য চালকবিহীন ট্রাকের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে।
অরোরার এই স্বচালিত ট্রাকে অত্যাধুনিক কম্পিউটার ও সেন্সর স্থাপন করা হয়েছে, যা প্রায় চারটি ফুটবল মাঠের দৈর্ঘ্যের সমান দূরত্ব পর্যন্ত দেখতে সক্ষম।
দীর্ঘ চার বছর ধরে পরীক্ষামূলক পণ্য পরিবহনের সময় এই প্রযুক্তি ১০ হাজারের বেশি পণ্য সফলভাবে সরবরাহ করেছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, কোনো মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই এই স্বচালিত ট্রাকগুলো ইতোমধ্যেই ১ হাজার ২০০ মাইলেরও বেশি পথ পাড়ি দিয়েছে।
এর আগে, উবার ফ্রেইট ও হার্শবাক মোটর লাইন্স ‘অরোরা ড্রাইভার’ নামে পরিচিত এই স্বচালিত প্রযুক্তি যাচাই করার জন্য চালকবিহীন ট্রাকের পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু করেছিল।
তবে সেই সময় নিরাপত্তার জন্য একজন চালক উপস্থিত থাকতেন। কিন্তু অরোরার নতুন বাণিজ্যিক পরিষেবায় আর কোনো সুরক্ষা চালকের প্রয়োজন হবে না। সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে গন্তব্যে পৌঁছাবে এই ট্রাকগুলো।
অরোরার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং সহপ্রতিষ্ঠাতা ক্রিস উর্মসন এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটিকে বর্ণনা করতে গিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা স্বচালিত প্রযুক্তির সুবিধা নিরাপদে, দ্রুত এবং ব্যাপকভাবে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই অরোরা প্রতিষ্ঠা করেছি।
আজ আমরা গর্বের সাথে বলতে পারি, আমরাই প্রথম প্রতিষ্ঠান যারা সফলভাবে এবং নিরাপদে উন্মুক্ত সড়কে চালকবিহীন ট্রাকে পণ্য পরিবহন সেবা বাণিজ্যিকভাবে চালু করেছি।’
প্রাথমিকভাবে, অরোরা একটি চালকবিহীন ট্রাকের মাধ্যমে এই বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহন সেবা শুরু করেছে। তবে, ২০২৫ সালের মধ্যে আরও অত্যাধুনিক ট্রাক তাদের বহরে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
অন্যদিকে, ট্রাকচালকদের প্রতিনিধিত্বকারী শ্রমিক ইউনিয়নগুলো এই প্রযুক্তির বিরোধিতা করছে। তাদের প্রধান উদ্বেগ হলো, এর ফলে বহু ট্রাকচালক তাদের জীবিকা হারাতে পারেন এবং সড়কে নিরাপত্তার ঝুঁকিও বাড়তে পারে। এই প্রযুক্তি শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের উপর কেমন প্রভাব ফেলবে, তা এখন সময়ের অপেক্ষা।
চালকবিহীন ট্রাকের এই পথচলা পরিবহন শিল্পের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলো। দক্ষতা, গতি এবং প্রযুক্তির এই সমন্বয় ভবিষ্যতে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাকে কীভাবে বদলে দেবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।