শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধস: এক দশকে সর্বোচ্চ পতন!

- আপডেট সময় ১২:৩৬:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫
- / ২৫৩ বার পড়া হয়েছে
দেশের শেয়ারবাজারে যেন নেমে এসেছে দুর্যোগের ঘনঘটা। গতকাল বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া প্রায় সকল শেয়ারেই দেখা গেছে ব্যাপক দরপতন। ৩৯৩টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৮১টির দামই কমেছে।
প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স এদিন ১৪৯ পয়েন্ট অর্থাৎ ৩ দশমিক শূন্য ২ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পেয়ে থিতু হয়েছে ৪৮০২ পয়েন্টে। এই পতন গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ! ২০১৩ সালের ২৩শে জুলাইয়ের পর আর এমন বড় ধাক্কা আসেনি দেশের শেয়ারবাজারে।
শুধু ডিএসই নয়, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্র। সেখানেও ব্যাপক দরপতন হয়েছে। এই ভয়াবহ পতনের কারণ হিসেবে বাজার সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করছেন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি প্রভাব ফেলতে পারে।
বুধবার পাকিস্তানের শেয়ারবাজারেও বড় ধরনের পতন দেখা গেছে। যদিও ভারতের শেয়ারবাজার দিনের শুরুতে পড়লেও শেষ পর্যন্ত সামান্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে বিশ্ব বাজারের অন্য কোথাও এর নেতিবাচক প্রভাব তেমন একটা চোখে পড়েনি।
বিশ্লেষকদের মতে, নানা কারণে এমনিতেই আস্থাহীনতায় ভুগছিল বাংলাদেশের শেয়ারবাজার। তার ওপর এই নতুন পরিস্থিতি যেন আগুনে ঘি ঢেলেছে।
দেশের শেয়ারবাজারের এই নাজুক পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য আগামী রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে।
বুধবারের লেনদেন পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, শুরু থেকেই পতনের ধাক্কা লাগে বাজারে। লেনদেনের প্রথম ১৫ মিনিটেই প্রায় সব শেয়ারের দাম কমতে শুরু করে। মাত্র ৫ মিনিটের ব্যবধানে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স হারায় ৫০ পয়েন্ট। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এর ১৩ মিনিট পর আরও ৪৪ পয়েন্টসহ মোট ৯৪ পয়েন্ট হারায় সূচক। দিনের শেষ পর্যন্ত এই পতনের ধারা অব্যাহত থাকে এবং ডিএসইএক্স ১৪৯ পয়েন্ট হারিয়ে ২০২০ সালের ২৫শে আগস্টের পর সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে আসে।
উদ্বেগের বিষয় হলো, বুধবার বাজারে তুলনামূলকভাবে কম শেয়ার বিক্রি হলেও সূচকের বড় ধরনের পতন হয়েছে। লেনদেনের প্রথম ১৫ মিনিটে প্রায় ৯০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে বিচ হ্যাচারি নামক একটি ছোট কোম্পানির শেয়ার লেনদেনই ছিল প্রায় ১৫ কোটি টাকা।
তবে এই শেয়ারের দরপতনে সূচকের তেমন প্রভাব না থাকলেও ইসলামী ব্যাংক, ওয়ালটন, বিএটি বাংলাদেশ, ব্র্যাক ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মা, গ্রামীণফোনের মতো বড় বাজার মূলধনি কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম কমায় সূচকের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়ে।
সবমিলিয়ে দেশের শেয়ারবাজারে এখন চরম অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। বিনিয়োগকারীরা গভীর উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। দেখার বিষয়, আসন্ন বৈঠক কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে কিনা।