কুষ্টিয়া থেকে ঢাকার অপরাধজগতের ত্রাস, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী! দীর্ঘ তিন ঘণ্টার এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে কুষ্টিয়া শহরের কালীশংকরপুর এলাকা থেকে তার এক সহযোগীসহ তাকে আটক করা হয়। সরকারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এই চাঞ্চল্যকর তথ্য নিশ্চিত করেছে।

আজ ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত কুষ্টিয়ার কালীশংকরপুর এলাকার সোনার বাংলা মসজিদের পাশের একটি তিনতলা বাড়ি ঘিরে রাখে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

অন্তত পাঁচটি সেনাবাহিনীর গাড়ি এই অভিযানে অংশ নেয়। বাড়িটির নিচতলা এবং আশপাশের এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে তল্লাশি চালানো হয়। এই অভিযান চালানো বাড়িটি স্থানীয় মীর মহিউদ্দিনের মালিকানাধীন। বাড়ির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মেস হিসেবে থাকেন।

মেসের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, গত কয়েকদিন ধরে নিচতলায় একজন দাড়িওয়ালা অপরিচিত ব্যক্তিকে থাকতে দেখা যাচ্ছিল, যিনি দিনে একবার শুধু খাবার সময় বাইরে বের হতেন।

অভিযানের সময় সেনাসদস্যরা শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট দুটি কক্ষে বসিয়ে রাখেন এবং বারবার আশ্বাস দেন, “তোমাদের কোনো ভয় নেই।”

একজন শিক্ষার্থী জানান, সকাল ৮টার দিকে একটি কালো মাইক্রোবাস আসে। তখন সেনাসদস্যরা একজন দাড়িওয়ালা ব্যক্তিকে হাতকড়া পরিয়ে এবং অন্য এক যুবককে হাত বেঁধে গাড়িতে তোলেন। অভিযান শেষে একজন সেনা কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের বলেন, “এখন বললে ভয় পাবে। পরে মিডিয়ার মাধ্যমে সব জানতে পারবে।”

সুব্রত বাইনের আটকের ঘটনাকে প্রশাসনে ব্যাপক গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ধারণা, রাজধানী ঢাকায় সম্প্রতি যেসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটেছে, তার পেছনে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের হাত রয়েছে।

একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারতে থাকা সন্ত্রাসীরা দেশে ফিরে এসছে।

তারা দেশে ফিরে এসে জোটবদ্ধ হয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় নৈরাজ্য চালাচ্ছে। এদের অনুগত চক্র রাজধানীতে চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর সুব্রত বাইনকে ঢাকায় নেওয়া হবে। এরপর যেকোনো সময় সংবাদ সম্মেলন করে অভিযানের বিস্তারিত তথ্য জানানো হতে পারে।