ঢাকা ১০:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

আমি এখন মুক্ত, আমি এখন স্বাধীন: আজহারুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০১:১৮:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
  • / ২৬৫ বার পড়া হয়েছে

১৪ বছর কারাভোগের পর আজ সকালে মুক্ত হলাম। আমি এখন মুক্ত, আমি এখন স্বাধীন। বললেন সদ্য কারামুক্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম। কারামুক্তির পর শাহবাগে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বুধবার (২৮ মে) সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আজহারুল ইসলাম বলেন, এখানে রাস্তা আটকে সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে। জনগণের যেন ভোগান্তি না হয়। এখন আর কথা বলব না, আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে আপনার সঙ্গে বারবার দেখা হবে, বারবার কথা হবে।

তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে আদালত যেন জনগণের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেন। আমি আমার আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি, আমি পত্রপত্রিকায় দেখেছি তারা অত্যন্ত সুন্দর ও সাবলীলভাবে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে আমার মামলার অসারতা দূর করেছেন। এসব মিথ্যা মামলায় তারা আমার আগের ভাইদের নির্মম হত্যা করেছেন।

এই জামায়াত নেতা বলেন, আমি আমার নেতাদের স্মরণ করছি, যাদের অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে, জুডিশিয়াল কিলিং করা হয়েছে; আমি শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, কামারুজ্জামান, কাদের মোল্লা, গোলাম আজম ও মীর কাসেম আলী ভাইকে স্মরণ করছি।

তিনি বলেন, আল্লামা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকেও বিনা চিকিৎসায় ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছে। আমি বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকেও স্মরণ করছি। আমি জামায়াতের অন্যান্য নেতা যারা বন্দি অবস্থায় মারা গেছেন তাদের স্মরণ করছি। মাওলানা আবদুস সোবহানকে স্মরণ করছি। আমি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

এটিএম আজহার বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারাই, যেই পর্যায়ে জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। না হলে এই খারাপ সংস্কৃতি চালু থাকবে। তাই এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, ভাইয়েরা আমার অপরাধ কী ছিল? আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, এটাই তো আমার অপরাধ? এছাড়া আমার কোনো অপরাধ নেই। আপনাদের দোয়া চাই। আপনাদের কারণে ফাঁসির কাষ্ঠ থেকে রশির বদলে জামায়াত আমিরের কাছ থেকে ফুলের মালা পাচ্ছি। আমার এক ফোটা রক্ত থাকতে আমি যেন আজীবন ইসলামী আন্দোলনের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে পারি, সেই দোয়া চাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমি ধন্যবান ও কৃতজ্ঞতা জানাই, যাদের কারণে আজ আমি মুক্ত হয়েছি সেই ৩৬ জুলাই-আগস্টের বিপ্লবীদের আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। যাদের আত্মত্যাগ, অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে সরকার পালাতে বাধ্য হয়েছে। সবচেয়ে ধন্যবাদ জানাবো ছাত্রসমাজকে; এরপর দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে, যারা নারী ও শিশুসহ রাস্তায় নেমে এসেছেন। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর ভাইদেরও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমার মতো নগণ্য ব্যক্তির জন্য যারা রোজা রেখেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই।

আজহারুল ইসলামের মুক্তির আগে তাকে খালাস দিয়ে আপিল বিভাগের রায়ের কপি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছায়। সেখানে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে কারা কর্তৃপক্ষ আজহারুল ইসলামের মুক্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আমি এখন মুক্ত, আমি এখন স্বাধীন: আজহারুল

আপডেট সময় ০১:১৮:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

১৪ বছর কারাভোগের পর আজ সকালে মুক্ত হলাম। আমি এখন মুক্ত, আমি এখন স্বাধীন। বললেন সদ্য কারামুক্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম। কারামুক্তির পর শাহবাগে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বুধবার (২৮ মে) সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আজহারুল ইসলাম বলেন, এখানে রাস্তা আটকে সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে। জনগণের যেন ভোগান্তি না হয়। এখন আর কথা বলব না, আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে আপনার সঙ্গে বারবার দেখা হবে, বারবার কথা হবে।

তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে আদালত যেন জনগণের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেন। আমি আমার আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি, আমি পত্রপত্রিকায় দেখেছি তারা অত্যন্ত সুন্দর ও সাবলীলভাবে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে আমার মামলার অসারতা দূর করেছেন। এসব মিথ্যা মামলায় তারা আমার আগের ভাইদের নির্মম হত্যা করেছেন।

এই জামায়াত নেতা বলেন, আমি আমার নেতাদের স্মরণ করছি, যাদের অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে, জুডিশিয়াল কিলিং করা হয়েছে; আমি শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, কামারুজ্জামান, কাদের মোল্লা, গোলাম আজম ও মীর কাসেম আলী ভাইকে স্মরণ করছি।

তিনি বলেন, আল্লামা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকেও বিনা চিকিৎসায় ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছে। আমি বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকেও স্মরণ করছি। আমি জামায়াতের অন্যান্য নেতা যারা বন্দি অবস্থায় মারা গেছেন তাদের স্মরণ করছি। মাওলানা আবদুস সোবহানকে স্মরণ করছি। আমি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

এটিএম আজহার বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারাই, যেই পর্যায়ে জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। না হলে এই খারাপ সংস্কৃতি চালু থাকবে। তাই এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, ভাইয়েরা আমার অপরাধ কী ছিল? আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, এটাই তো আমার অপরাধ? এছাড়া আমার কোনো অপরাধ নেই। আপনাদের দোয়া চাই। আপনাদের কারণে ফাঁসির কাষ্ঠ থেকে রশির বদলে জামায়াত আমিরের কাছ থেকে ফুলের মালা পাচ্ছি। আমার এক ফোটা রক্ত থাকতে আমি যেন আজীবন ইসলামী আন্দোলনের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে পারি, সেই দোয়া চাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমি ধন্যবান ও কৃতজ্ঞতা জানাই, যাদের কারণে আজ আমি মুক্ত হয়েছি সেই ৩৬ জুলাই-আগস্টের বিপ্লবীদের আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। যাদের আত্মত্যাগ, অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে সরকার পালাতে বাধ্য হয়েছে। সবচেয়ে ধন্যবাদ জানাবো ছাত্রসমাজকে; এরপর দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে, যারা নারী ও শিশুসহ রাস্তায় নেমে এসেছেন। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর ভাইদেরও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমার মতো নগণ্য ব্যক্তির জন্য যারা রোজা রেখেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই।

আজহারুল ইসলামের মুক্তির আগে তাকে খালাস দিয়ে আপিল বিভাগের রায়ের কপি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছায়। সেখানে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে কারা কর্তৃপক্ষ আজহারুল ইসলামের মুক্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।