নগরভবন অবরুদ্ধ: থমকে গেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটির সেবা

- আপডেট সময় ০১:৩৭:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
- / ২৬১ বার পড়া হয়েছে
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নগরভবন গত কয়েকদিন ধরে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে সংস্থাটির কর্মচারীদের একটি অংশ টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন। মূল ফটকসহ সব বিভাগের গেটে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, যার ফলে গত ১৫ মে থেকে নগরভবন থেকে দেওয়া সব নাগরিক সেবা সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
সেবাপ্রার্থীরা প্রতিদিন নগরভবনে এসে ফিরে যাচ্ছেন, ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন’ এবং ‘ঢাকাবাসীর ব্যানারে’ ইশরাকের সমর্থকেরা নগরভবনের ভেতরে অবস্থান নিয়ে নিয়মিত মিছিল করছেন।
আন্দোলনরত কর্মীদের দাবি স্পষ্ট। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্য খোরশেদ আলম বলেছেন, “দুই দফায় কোর্ট রায় দেওয়ার পরও ইশরাক হোসেনকে শপথ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা ইশরাককে মেয়র হিসেবে পেতে চাই। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।”
আরেক কর্মচারী জাহিদুর রহমানও একই কথা জানিয়েছেন, “ঢাকার জনগণ যেমন ইশরাক ভাইকে মেয়র হিসেবে দেখতে চায়, ঠিক তেমনি ডিএসসিসির সব কর্মচারীরাও তাকে মেয়র হিসেবে চায়। ইশরাক ভাই দায়িত্ব গ্রহণ করলেই আমরা কাজে ফিরে যাবো।”
এ সময় তারা “শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই”, “মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না”, “চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে” – এমন বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন।
কেন ইশরাক হোসেনের শপথ নিয়ে এই অচলাবস্থা? ঘটনাটি ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন থেকে শুরু।
সে সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফলাফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক হোসেন।
এরপর এ বছরের ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফলাফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন।
এরও এক মাস পর, ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয়, সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়।
এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত ১৫ মে থেকে ইশরাক সমর্থকরা আন্দোলনে নামেন, যার ফলে ডিএসসিসি নগরভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। তবে আইনি জটিলতার কথা বলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে।