ঢাকা ১০:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি: ডিজিটাল মতপ্রকাশে হস্তক্ষেপ করলেই ভিসা বাতিল!

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০১:৩৬:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
  • / ২৫৯ বার পড়া হয়েছে

মার্কিন নাগরিকদের ডিজিটাল মতপ্রকাশে হস্তক্ষেপকারী বিদেশি নাগরিকদের জন্য নতুন ভিসানীতির ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে আলোচনা।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এখন থেকে মার্কিন নাগরিকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট নিয়ে যারা আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বা কনটেন্ট মুছতে বাধ্য করবেন, সেসব বিদেশি সরকার বা রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের আর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেওয়া হবে না। শুধু তাই নয়, মার্কিন নাগরিকদের কোনো বক্তব্য সেন্সর করলেও সংশ্লিষ্ট বিদেশি নাগরিকরা ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারেন।

এই নতুন ভিসানীতি এমন এক সময়ে ঘোষণা করা হলো যখন সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে কড়াকড়ি আরোপ করছে।

ট্রাম্প প্রশাসনও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ওপর সেন্সরশিপের অভিযোগ এনেছে। এই পরিস্থিতিতে, মার্কিন নাগরিকদের ডিজিটাল মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র এই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।

রুবিও তার বিবৃতিতে আরও বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় মতপ্রকাশ করলে, তা যদি কোনো বিদেশি সরকারের পছন্দ না হয়, তবুও তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবেন না।

মার্কিন কোম্পানিগুলোর ওপর তারা সেন্সরশিপ চাপিয়ে দিতেও পারবেন না।” তবে তিনি স্পষ্ট করে জানাননি, কোন কোন দেশের বিরুদ্ধে এই নতুন ভিসানীতি কার্যকর হবে।

রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, রুবিও বলেছেন যে, মার্কিন মুলুকে বসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা বলার জন্য বিদেশি কর্মকর্তারা অনেক সময় আইনি পদক্ষেপ নেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

তাই মার্কিন নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বা কোনো সেন্সরশিপ করলে জড়িত বিদেশি কর্মকর্তাদেরও প্রয়োজনে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হবে।

যদিও ‘সেন্সর’ বলতে ঠিক কী বোঝানো হয়েছে, তা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করেননি, তবে সাম্প্রতিক একটি আইন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশে হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো।

যেমন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মালিকানা প্রতিষ্ঠান মেটা জানিয়েছে যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ‘ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট’ নামে একটি আইন তৈরি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মতামত নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। গত মার্চে মার্কিন যোগাযোগ পরিষদের প্রধানও বলেছিলেন যে, ওই আইনের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।

রুবিও আরও জানিয়েছেন, নতুন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বিদেশি কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টাও ঠেকানো হতে পারে।

তার মতে, কিছু বিদেশি কর্মকর্তা মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন এবং তারা বৈশ্বিক নীতি মেনে মার্কিন প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মগুলোকে পরিচালনার পরামর্শ দিচ্ছেন। রুবিও মনে করেন, তাদের এখতিয়ারবহির্ভূত কাজ একদমই গ্রহণযোগ্য নয়।

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি: ডিজিটাল মতপ্রকাশে হস্তক্ষেপ করলেই ভিসা বাতিল!

আপডেট সময় ০১:৩৬:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

মার্কিন নাগরিকদের ডিজিটাল মতপ্রকাশে হস্তক্ষেপকারী বিদেশি নাগরিকদের জন্য নতুন ভিসানীতির ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে আলোচনা।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এখন থেকে মার্কিন নাগরিকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট নিয়ে যারা আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বা কনটেন্ট মুছতে বাধ্য করবেন, সেসব বিদেশি সরকার বা রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের আর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেওয়া হবে না। শুধু তাই নয়, মার্কিন নাগরিকদের কোনো বক্তব্য সেন্সর করলেও সংশ্লিষ্ট বিদেশি নাগরিকরা ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারেন।

এই নতুন ভিসানীতি এমন এক সময়ে ঘোষণা করা হলো যখন সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে কড়াকড়ি আরোপ করছে।

ট্রাম্প প্রশাসনও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ওপর সেন্সরশিপের অভিযোগ এনেছে। এই পরিস্থিতিতে, মার্কিন নাগরিকদের ডিজিটাল মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র এই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।

রুবিও তার বিবৃতিতে আরও বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় মতপ্রকাশ করলে, তা যদি কোনো বিদেশি সরকারের পছন্দ না হয়, তবুও তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবেন না।

মার্কিন কোম্পানিগুলোর ওপর তারা সেন্সরশিপ চাপিয়ে দিতেও পারবেন না।” তবে তিনি স্পষ্ট করে জানাননি, কোন কোন দেশের বিরুদ্ধে এই নতুন ভিসানীতি কার্যকর হবে।

রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, রুবিও বলেছেন যে, মার্কিন মুলুকে বসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা বলার জন্য বিদেশি কর্মকর্তারা অনেক সময় আইনি পদক্ষেপ নেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

তাই মার্কিন নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বা কোনো সেন্সরশিপ করলে জড়িত বিদেশি কর্মকর্তাদেরও প্রয়োজনে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হবে।

যদিও ‘সেন্সর’ বলতে ঠিক কী বোঝানো হয়েছে, তা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করেননি, তবে সাম্প্রতিক একটি আইন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশে হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো।

যেমন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মালিকানা প্রতিষ্ঠান মেটা জানিয়েছে যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ‘ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট’ নামে একটি আইন তৈরি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মতামত নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। গত মার্চে মার্কিন যোগাযোগ পরিষদের প্রধানও বলেছিলেন যে, ওই আইনের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।

রুবিও আরও জানিয়েছেন, নতুন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বিদেশি কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টাও ঠেকানো হতে পারে।

তার মতে, কিছু বিদেশি কর্মকর্তা মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন এবং তারা বৈশ্বিক নীতি মেনে মার্কিন প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মগুলোকে পরিচালনার পরামর্শ দিচ্ছেন। রুবিও মনে করেন, তাদের এখতিয়ারবহির্ভূত কাজ একদমই গ্রহণযোগ্য নয়।