ঢাকা ১০:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
 সচেতন না হলে সর্বস্ব হারাতে পারেন

বেনাপোল-হরিদাসপুর সীমান্তে ভয়ংকর দালালচক্র!

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০৩:২৩:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
  • / ২৮২ বার পড়া হয়েছে

দেশ-বিদেশে চিকিৎসা, শিক্ষা বা ব্যবসার কাজে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ পাড়ি জমায় বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে। কিন্তু বেনাপোল সীমান্তে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের জন্য অপেক্ষা করে একটি ভয়ংকর প্রতারক চক্র—যা সাধারণ যাত্রীদের সর্বস্ব হারানোর ফাঁদ পাতা রেখেছে।

বেনাপোল বর্ডারে নামলেই শুরু হয় দালাল ও প্রতারকদের ছদ্মবেশ। তারা প্রথমে সহানুভূতির ছলে মিষ্টি কথায় যাত্রীদের আস্থা জোগায়—“ভাই, আমরা সাহায্য করব, কোনো টাকা নিব না।”

কিন্তু এর পর তারা যাত্রীদের ফরম পূরণ থেকে শুরু করে পাসপোর্ট নেওয়া পর্যন্ত নানা ধাপে ফাঁদ পেতে শুরু করে। নির্জন এক ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় যাত্রীদের, যেখানে এক বা দুই জন নয়, তিন-চারজন মিলে যাত্রীদের টাকা গুনতে গুনতে অর্ধেক বা তারও বেশী টাকা উধাও করে দেয়।
অনেক সময় টাকা গুনে দেখার সুযোগও দেওয়া হয় না। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে বাধ্য করা হয়—“আমাদের ছাড়া বর্ডার পার হবেন না।”

ভারতীয় হরিদাসপুর সীমান্তেও একই রকম প্রতারণার ঘটনা ঘটছে।
যাত্রীরা হরিদাসপুরে পৌঁছানোর পর দালালরা তাদের লাগেজ টেনে নিয়ে গিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়, আবার মানি এক্সচেঞ্জের নাম করে ঠকায়।

একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা—এক নারী যাত্রীর পাসপোর্ট ও ২৫ হাজার টাকা নিয়ে প্রতারিত হওয়ার কথা বলা হচ্ছে। তিনি মানি এক্সচেঞ্জ দোকানে ভুলবশত ব্যাগ রেখে আসেন। ফিরে এসে দোকানদার টাকা ফেরত না দিয়ে বললেন, “১৫ হাজার টাকা দিলে পাসপোর্ট দেব।” বাধ্য হয়ে ওই নারী টাকা জোগাড় করে পাসপোর্ট পায়, কিন্তু তার টাকা আর ফিরে পায়নি।

এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
✅ ট্রাভেল ট্যাক্স নিজেই কেটে নিন, এতে বেনাপোল বর্ডারে কোনো ভিড় হয় না এবং কাজ সহজ হয়।
✅ অপরিচিত কাউকে কখনো টাকা, পাসপোর্ট বা ব্যাগ দেবেন না।
✅ দুই দেশের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা খুবই সহযোগিতাপূর্ণ, তাই দালালের সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
✅ টাকা এক্সচেঞ্জ করতে চাইলে শুধু বর্ডারের ভেতরে অথোরাইজড মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবহার করুন।
✅ হরিদাসপুরে ‘প্রীতি এন্টারপ্রাইজ’সহ কিছু বিশ্বস্ত মানি এক্সচেঞ্জ রয়েছে, যাচাই করে লেনদেন করুন।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে দালালদের আইনের আওতায় আনা জরুরি, যাতে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও স্বার্থ রক্ষা করা যায়। বেনাপোল-হরিদাসপুর সীমান্ত দিয়ে যাত্রা করলে সতর্ক থাকুন, অসতর্ক হলে আপনার অর্থ এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সবসময় সরকারি এবং বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে লেনদেন করুন, যেন আপনার যাত্রা হয় নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন। এই প্রতারণা চক্রকে রুখতে এখনই প্রয়োজন প্রশাসনের কঠোর নজরদারি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

 সচেতন না হলে সর্বস্ব হারাতে পারেন

বেনাপোল-হরিদাসপুর সীমান্তে ভয়ংকর দালালচক্র!

আপডেট সময় ০৩:২৩:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

দেশ-বিদেশে চিকিৎসা, শিক্ষা বা ব্যবসার কাজে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ পাড়ি জমায় বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে। কিন্তু বেনাপোল সীমান্তে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের জন্য অপেক্ষা করে একটি ভয়ংকর প্রতারক চক্র—যা সাধারণ যাত্রীদের সর্বস্ব হারানোর ফাঁদ পাতা রেখেছে।

বেনাপোল বর্ডারে নামলেই শুরু হয় দালাল ও প্রতারকদের ছদ্মবেশ। তারা প্রথমে সহানুভূতির ছলে মিষ্টি কথায় যাত্রীদের আস্থা জোগায়—“ভাই, আমরা সাহায্য করব, কোনো টাকা নিব না।”

কিন্তু এর পর তারা যাত্রীদের ফরম পূরণ থেকে শুরু করে পাসপোর্ট নেওয়া পর্যন্ত নানা ধাপে ফাঁদ পেতে শুরু করে। নির্জন এক ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় যাত্রীদের, যেখানে এক বা দুই জন নয়, তিন-চারজন মিলে যাত্রীদের টাকা গুনতে গুনতে অর্ধেক বা তারও বেশী টাকা উধাও করে দেয়।
অনেক সময় টাকা গুনে দেখার সুযোগও দেওয়া হয় না। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে বাধ্য করা হয়—“আমাদের ছাড়া বর্ডার পার হবেন না।”

ভারতীয় হরিদাসপুর সীমান্তেও একই রকম প্রতারণার ঘটনা ঘটছে।
যাত্রীরা হরিদাসপুরে পৌঁছানোর পর দালালরা তাদের লাগেজ টেনে নিয়ে গিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়, আবার মানি এক্সচেঞ্জের নাম করে ঠকায়।

একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা—এক নারী যাত্রীর পাসপোর্ট ও ২৫ হাজার টাকা নিয়ে প্রতারিত হওয়ার কথা বলা হচ্ছে। তিনি মানি এক্সচেঞ্জ দোকানে ভুলবশত ব্যাগ রেখে আসেন। ফিরে এসে দোকানদার টাকা ফেরত না দিয়ে বললেন, “১৫ হাজার টাকা দিলে পাসপোর্ট দেব।” বাধ্য হয়ে ওই নারী টাকা জোগাড় করে পাসপোর্ট পায়, কিন্তু তার টাকা আর ফিরে পায়নি।

এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
✅ ট্রাভেল ট্যাক্স নিজেই কেটে নিন, এতে বেনাপোল বর্ডারে কোনো ভিড় হয় না এবং কাজ সহজ হয়।
✅ অপরিচিত কাউকে কখনো টাকা, পাসপোর্ট বা ব্যাগ দেবেন না।
✅ দুই দেশের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা খুবই সহযোগিতাপূর্ণ, তাই দালালের সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
✅ টাকা এক্সচেঞ্জ করতে চাইলে শুধু বর্ডারের ভেতরে অথোরাইজড মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবহার করুন।
✅ হরিদাসপুরে ‘প্রীতি এন্টারপ্রাইজ’সহ কিছু বিশ্বস্ত মানি এক্সচেঞ্জ রয়েছে, যাচাই করে লেনদেন করুন।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে দালালদের আইনের আওতায় আনা জরুরি, যাতে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও স্বার্থ রক্ষা করা যায়। বেনাপোল-হরিদাসপুর সীমান্ত দিয়ে যাত্রা করলে সতর্ক থাকুন, অসতর্ক হলে আপনার অর্থ এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সবসময় সরকারি এবং বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে লেনদেন করুন, যেন আপনার যাত্রা হয় নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন। এই প্রতারণা চক্রকে রুখতে এখনই প্রয়োজন প্রশাসনের কঠোর নজরদারি।