বাংলাদেশে প্রতি বছর এক লাখের বেশি শিশুর মৃত্যু: ইউনিসেফের উদ্বেগ

- আপডেট সময় ১০:৩৭:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫
- / ৩০৩ বার পড়া হয়েছে
২০২৩ সালে বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী এক লাখেরও বেশি শিশু মারা গেছে, যার মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মৃত্যু ঘটেছে জন্মের প্রথম ২৮ দিনের মধ্যে।
জাতিসংঘের ইন্টার-এজেন্সি গ্রুপ ফর চাইল্ড মর্টালিটি এস্টিমেশন (আইজিএমই)-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী এই চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। ইউনিসেফ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশ এখনো বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। ১৯৯০ সাল থেকে শিশুমৃত্যু কমাতে অগ্রগতি হলেও, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে মৃত সন্তান প্রসবের হার সবচেয়ে বেশি। প্রতি বছর ৬৩ হাজারেরও বেশি মৃত শিশুর জন্ম হয়, অর্থাৎ প্রতি ৪১টি জন্মের মধ্যে একটি মৃতশিশু, যা এ অঞ্চলে সর্বোচ্চ।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণ করতে হলে বাংলাদেশকে প্রতি বছর অতিরিক্ত ২৮ হাজার নবজাতকের জীবন বাঁচাতে হবে। এজন্য মা ও নবজাতকের যত্নে ব্যাপক উন্নতি প্রয়োজন। ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ফারুক আদ্রিয়ান দুমুন বলেন, “প্রতি বছর এক লাখের বেশি শিশু প্রতিরোধযোগ্য কারণে মারা যাচ্ছে—যেমন অপরিণত জন্ম, প্রসবকালীন জটিলতা, সেপসিস ও নিউমোনিয়া। এটি তাদের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন।”
তিনি আরো বলেন, “স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিনিয়োগ বাড়িয়ে, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবং প্রশিক্ষিত মিডওয়াইফসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে আমরা লাখো শিশু ও মায়ের জীবন বাঁচাতে পারি।” ইউনিসেফ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সহযোগিতায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও অংশীদারদের সঙ্গে মাতৃ ও শিশুমৃত্যু কমাতে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নবজাতক মৃত্যু ও মৃত শিশু জন্মের উচ্চ হারের পেছনে কয়েকটি মূল কারণ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—বাড়িতে প্রসবের উচ্চ হার (৩০%), অসুস্থ ও অপরিণত নবজাতকদের জন্য পর্যাপ্ত যত্নের অভাব, এবং স্বাভাবিক প্রসবের জন্য প্রশিক্ষিত মিডওয়াইফের ঘাটতি। এছাড়া, উপজেলা পর্যায়ে সার্বক্ষণিক মানসম্পন্ন সেবার অভাব, প্রসবপরবর্তী যত্নে ঘাটতি এবং অপরিকল্পিত বেসরকারি খাতের কারণে জন্ম আসফিক্সিয়া, প্রিম্যাচিউরিটি ও সংক্রমণের মতো প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু বাড়ছে।
গর্ভাবস্থায় দুর্বল প্রসবপূর্ব ও প্রসবকালীন যত্ন এবং রোগ প্রতিরোধে অপ্রতুল ব্যবস্থাপনাও মৃতশিশু জন্মের হার বাড়িয়ে তুলছে। তহবিল ও সম্পদের সীমাবদ্ধতা এই চ্যালেঞ্জগুলোকে আরো জটিল করে তুলেছে, যা শিশুমৃত্যু হ্রাসে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে।