স্বাস্থ্যখাতে সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

- আপডেট সময় ০৭:১৩:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
- / ২০ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের দুর্বলতা কাটাতে যুক্তরাজ্যের বৃহত্তর সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ব্রিটিশ বাণিজ্য দূত ব্যারনেস উইন্টারটনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানান। বৈঠকে উভয় পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে পুনরায় অঙ্গীকার করেন।
ব্যারনেস উইন্টারটন বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে দীর্ঘ ও বিশ্বস্ত সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের একসঙ্গে দীর্ঘদিনের ইতিহাস রয়েছে এবং সংস্কারের ক্ষেত্রে আপনাদের দিকনির্দেশনা দেখে আমরা সন্তুষ্ট।’
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘দেশ এক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য খুবই সংকটপূর্ণ সময়। আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠন এবং নতুন করে অগ্রাধিকার নির্ধারণের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি।’
দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের নার্সের অভাব রয়েছে। তবে নার্সিং শুধু একটি জাতীয় সমস্যা নয়, এটি একটি বৈশ্বিক প্রয়োজন। আমরা শুধু বাংলাদেশের জন্যই নয়, বিশ্বজুড়ে আরও নার্স তৈরি করতে চাই।’
বাংলাদেশের সীমিত সম্পদের স্বাস্থ্য খাতকে শক্তিশালী করতে যুক্তরাজ্যের সাহায্য চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্য কর্মসূচিগুলো প্রায় অকার্যকর। এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
আরেকটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হলো ফার্মাসিউটিক্যালস। আমরা পেটেন্ট সুরক্ষার অবসানের পক্ষে সুপারিশ করে বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিনের সহজলভ্যতাকে সমর্থন করার জন্য আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে প্রতিটি দেশ সামাজিক ব্যবসায়িক মডেলের অধীনে সাশ্রয়ী মূল্যে ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারে।’
বৈঠকে শিক্ষা, বস্ত্র শিল্প, প্রতিরক্ষা এবং বিমান চলাচলসহ কৌশলগত ক্ষেত্রে বৃহত্তর সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, বস্ত্র খাতের আধুনিকীকরণ এবং প্রতিরক্ষা ও বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্যের সমর্থনকে আমরা স্বাগত জানাই।’
উভয় পক্ষ এই ক্ষেত্রগুলোতে প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি বিনিময় এবং দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্বের বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন।
লিঙ্গ সমতার ওপর সরকারের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘আমরা সবসময়ই প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। নারীর ক্ষমতায়ন আমাদের উন্নয়ন কৌশলের মূল ভিত্তি।’
ব্যারনেস উইন্টারটন বর্তমান সংস্কার এজেন্ডায় যুক্তরাজ্য সরকারের সমর্থন জানান। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কার উদ্যোগের প্রধান আলী রীয়াজের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো একটি সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্রক্রিয়ার বিষয়ে একমত হলে ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে পারে। তবে আরও বিস্তৃত সংস্কারের পথে গেলে আগামী জুনের মধ্যেই নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
বৈঠকে বিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন ও এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।