আর ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নয়, হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’

- আপডেট সময় ১২:১৭:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
- / ১৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা নববর্ষ উদযাপনের অন্যতম আকর্ষণ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ তার চিরাচরিত নাম পরিবর্তন করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে আয়োজিত এবারের বাংলা নববর্ষের শোভাযাত্রাটি ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ নামে পরিচিত হবে। এতদিন ধরে এই শোভাযাত্রা ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামেই পরিচিত ছিল।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই নতুন নামকরণের ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করে থাকে। এই শোভাযাত্রা দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। অন্যান্য বছরের মতো এবারও চারুকলা অনুষদ পহেলা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এই উপলক্ষে একটি জাঁকজমকপূর্ণ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হচ্ছে।
এবারের শোভাযাত্রার মূলমন্ত্র বা স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে—‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। এই প্রতিপাদ্যের ওপর ভিত্তি করে শোভাযাত্রায় বাংলার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ও লোকশিল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হবে। এছাড়াও, আয়োজকরা জানিয়েছেন যে গত বছরের জুলাই-আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মাধ্যমে যে ‘ফ্যাসিবাদ’ দূরীভূত হয়েছে, তার পুনরাবৃত্তি যাতে আর না ঘটে, সেই বার্তাটিও এই শোভাযাত্রার মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান, বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য-সচিব ও চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম শেখ, শোভাযাত্রা উপ-কমিটির সদস্য-সচিব অধ্যাপক এ এ এম কাওসার হাসান, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ এবং কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি ও উপ-কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৮৯ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ পহেলা বৈশাখে শোভাযাত্রা আয়োজন করে আসছে। শুরুতে এই শোভাযাত্রার নাম ছিল ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। তবে নব্বইয়ের দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে অমঙ্গল দূর করে মঙ্গলের বার্তা দেওয়ার জন্য শোভাযাত্রার নামকরণ করা হয় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। সেই থেকে দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এই নামেই পরিচিত ছিল এই ঐতিহ্যবাহী শোভাযাত্রা।
২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
গত ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এক সভায় জানানো হয়েছিল যে, এবারের পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় চাকমা, মারমা, সাঁওতাল ও গারোসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ থাকবে।
সর্বশেষ গত বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানান যে, এবারের বাংলা নববর্ষে চারুকলার শোভাযাত্রায় বাঙালি ছাড়াও ২৭টি ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করবে।